সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার পর্যটন শিল্পে জোয়ার আনল বসন্তের রঙীন প্রকৃতি। একদিকে শীতের খামখেয়ালিপনা অন্যদিকে সিএএ বিক্ষোভের জেরে নিস্প্রাণ হয়ে পড়ে পুরুলিয়ার পর্যটনের গতি। তবে করোনার জেরে শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসবে কোপ পড়লেও গতি ফিরেছে পুরুলিয়ার পর্যটন শিল্পে। ফাগুনে শান্তিনিকেতনের চিরন্তন উৎসবে করোনার কোপ আখেরে লাভজনক হয়ে উঠেছে পুরুলিয়ার জন্য।
বসন্তে যেমন শান্তিনিকেতনের রূপ পালটায় তেমই সুন্দর হয়ে ওঠে পুরুলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলও। প্রতি বছর এই সময় শান্তিনিকেতনে তিল ধারণের জায়গা না থাকলেও এবার প্রায় চাপের মুখে পড়েই শান্তিনিকেতন ফাঁকা থাকল বসন্ত উৎসবের দিনে। শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব বাতিল হয়ে যাওয়ায় পর্যটকরা রুট পরিবর্তন করে ভিড় জমিয়েছেন পশ্চিমাঞ্চলের পুরুলিয়ায়। তাই অযোধ্যা পাহাড়, খয়রাবেড়া, গড়পঞ্চকোট, বড়ন্তি, দোলাডাঙা প্রায় হাউজফুল।এমনকি অযোধ্যা পাহাড় ও গড়পঞ্চকোটে ঘর না পেয়ে সেই শনিবার থেকেই বাড়ি মুখে হচ্ছেন পর্যটকরা। ফলে শীতের মরশুমে সিএএ বিরোধিতায় যে ক্ষতির মুখ দেখতে হয়েছিল স্থানীয় ব্যবসায়ীদের এবার তারা তা কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। সোমবার দোলের ছুটিতে এই জেলার পর্যটন সহ গ্রামোন্নয়নের কাজ দেখতে প্রায় দিনভর অযোধ্যা পাহাড়ে ছিলেন পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার। তিনি জানান,”গতবার নির্বাচন ছিল বসন্ত উৎসবের দোরগোড়ায়। ফলে দোল বা হোলিতে সেভাবে পর্যটকরা ভিড় জমাননি। কিন্তু এবার ফাগুনেরলাল পলাশ পর্যটন মন্দাকে কাটিয়ে আক্ষরিক অর্থেই
জোয়ার এনে দিয়েছে।” প্রকৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে রিসর্ট, কটেজগুলিতেও এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। ফলে লাল আবিরে রাঙা হয়ে যায় পর্যটকের দল।
পুরুলিয়ার পর্যটন অবশ্য ঋতুকেন্দ্রিক নয়। বছরের প্রতিটা সময়ই এখানে ভিড় জমান বহু মানুষ। সম্প্রতি কয়েক বছর ধরেই পুরুলিয়ায় দোল উৎসবে ঘুরতে যাচ্ছেন মানুষ। গড়পঞ্চকোটের হোম ট্যুরিজমের মালিকরা জানান এই বছরের মত কোনও বার দোল উৎসবে ভিড় হয় না।তবে এই ভিড়ে যাতে লাল পলাশের ক্ষতি না হয় তাই এদিনও ঝালদা, বাঘমুন্ডি, মাঠা, কোটশিলাতে মাইক ফুঁকে প্রচার চালায় বনদফতর। কোটশিলা বনাঞ্চল রক্তপলাশ কে গাছেই রাখার জন্যরীতিমত প্রচারপত্র ছাপিয়ে তা বিলি করা হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.