স্টাফ রিপোর্টার, শিলিগুড়ি: ভারী তুষারপাতে ফের বিপত্তি পাহাড়ে। আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতা না মেনে সিকিমের ছাঙ্গু লেকে বেড়াতে গিয়ে ভারী তুষারপাতে আটকে যান প্রায় এক হাজার পর্যটক। তাঁদের মধ্যে অধিকাংশই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে অবিরাম তুষারপাতে অবরুদ্ধ হয় পূর্ব সিকিমের ছাঙ্গু লেক, নাথু-লা সহ বিস্তীর্ণ এলাকার রাস্তা। সেখানেই পনেরো কিলোমিটার এলাকায় আটকে পড়েন দু’শোটি গাড়ি বোঝাই পর্যটক।
শুক্রবার সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রাতের মধ্যে ওই পর্যটকদের উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনা হয়। তাঁদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও খাবারের ব্যবস্থা করে গ্যাংটকের উদ্দেশে রওনা করানো হয়েছে শুক্রবারই। এর আগে ১২ মার্চ সেনাবাহিনী পূর্ব সিকিমে ভারী তুষারপাতে আটকে পড়া ৩৭০ জন পর্যটককে উদ্ধার করে। পরপর দু’টো ঘটনার পর ঝুঁকি না নিয়ে সিকিম পর্যটন দপ্তর জরুরি ভিত্তিতে শুক্রবার সকালে বিজ্ঞপ্তি জারি করে ভারত-চিন সীমন্তের নাথু-লা, বাবা মন্দির, ছাঙ্গু লেকে টুরিস্ট পারমিট বন্ধ করেছে।
এদিন আবহাওয়া দপ্তরের সতর্কতায় জানানো হয়েছে, উত্তর ও পূর্ব সিকিমে কয়েকদিন ভারী তুষারপাত চলবে। পাশাপাশি কিছু এলাকায় শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা প্রবল। ওই কারণে বিপর্যস্ত হতে পারে যোগাযোগ ব্যবস্থাও। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের সিকিম কেন্দ্রের অধিকর্তা গোপীনাথ রাহা বলেন, “এক সপ্তাহ আগে থেকে ভারী তুষারপাতের সতর্কতা দেওয়া হচ্ছে। পর্যটকরা সেটায় গুরুত্ব না দিলে সমস্যা বাড়বে। সিকিম পাহাড়ে যেমন ভারী তুষারপাত থাকবে। একইভাবে উত্তরবঙ্গের সমতলে ঝড় ও বজ্রপাত-সহ শিলাবৃষ্টি চলবে। রবিবার কিছু জায়গায় ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা আছে।”
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সিকিমের জওহরলাল নেহেরু রোড বরফের তলায়। আশপাশও বরফে ঢাকা। সিকিম পর্যটন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কয়েকদিন থেকে পূর্ব সিকিমের উঁচু এলাকায় ভারী তুষারপাত চলছে। ১৭ মাইলের দিকে যাওয়ার রাস্তা অবরুদ্ধ হয়েছে। ওই সড়কপথে পর্যটকরা ছাঙ্গু লেক, বাবা মন্দির এবং নাথু-লায় বেড়াতে যান। তবে ড্রোজারের সাহায্যে বরফের পুরু আস্তরণ কেটে ৩ মাইল থেকে ১৩ মাইল পর্যন্ত সড়কপথ যানবাহন চলাচলের জন্য খালি করা হয়েছে।
সেনাবাহিনীর ত্রিশক্তি কর্পস ও পর্যটন সংস্থাগুলো সূত্রে জানা গিয়েছে, ভারী তুষারপাতের ফলে নাথু-লা, ছাঙ্গু লেক-সহ পার্শ্ববর্তী এলাকার তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমেছে। বরফের পুরু আস্তরণে রাস্তা তলিয়ে থাকায় গাড়ি চলাচল অসম্ভব হয়েছে। ট্যুর অপারেটর রাজ বসু জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলের পর থেকে আবহাওয়া আরও খারাপ হয়ে যাওয়ায় বিড়ম্বনা বেড়েছে। সেখানেই তুষারে ঢেকে থাকা ১৫ কিলোমিটার জুড়ে দু’শোটি গাড়ি আটকে যায়। সেগুলোতে বৃদ্ধ, মহিলা, শিশু-সহ অন্তত এক হাজার পর্যটক ছিলেন। সেনাবাহিনীর জওয়ানরা আট ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অভিযান চালিয়ে পর্যটকদের নিরাপদে সরিয়ে আনেন। সমস্ত পর্যটকদের রাতে থাকার ব্যবস্থা, গরম খাবার, গরম পোশাক এবং গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.