অরূপ বসাক, মালবাজার: রোজকার কাজের ব্যস্ততায় ওষ্ঠাগত প্রাণ। ইট-কাঠ-কংক্রিট ছেড়ে একেবারে নিরিবিলি জায়গায় পাড়ি দিতে চান? শান্ত পাহাড়ি পরিবেশে মনের মানুষের সঙ্গে একা হবেন ভাবছেন? তবে চলুন না ঘুরে আসা যাক কালিম্পংয়ের নাকডাড়া (Nokdara) গ্রাম থেকে।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫৬০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত কালিম্পংয়ের নাকডাড়া নামের একটি ছোট্ট পাহাড়ি গ্রাম। কালিম্পং থেকে মাত্র ২৮ কিমি দূরে লাভা ও লোলেগাওয়ের মাঝে অবস্থিত নাকডাড়া গ্রাম। পাশেই সামবিয়ং চা বাগান। ডুয়ার্সের মালবাজার থেকে দূরত্ব মাত্র ৪০কিমি।
কীভাবে যাবেন? কাঞ্চনকন্যা ট্রেনে নিউ মাল স্টেশনে নেমে গাড়ি ভাড়া নিয়ে যাওয়া যায়। এছাড়াও বাসে মাল বাসস্ট্যান্ডে নেমে ভাড়ার গাড়িতে যাওয়া যায়। শিলিগুড়ি থেকেও ভাড়ার গাড়িতে যাওয়া যায়। মেঘে ঢাকা অপরূপ মনমুগ্ধকর জায়গা নাকডাড়া। সম্প্রতি জিটিএ’র উদ্যোগে তৈরি হয়েছে ১০ হাজার ফুট এলাকাজুড়ে এক সুন্দর ঝিল। ঝিলের জলে ঘুরে বেড়াচ্ছে রংবেরংয়ের মাছ। ঝিলের চারধার ঘেরা রেলিংয়ে। চারপাশে রয়েছে সুন্দর ফুল ও বাগান। তার ফলে এলাকার আকর্ষণ যে আরও বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ঝিলের জলে চাইলে করতে পারেন বোটিং।
শুধুমাত্র ঝিলের পাশে দাঁড়িয়েই আপনার বেশ খানিকটা সময় কাটতে পারে। আকাশে মেঘের আনাগোনা দেখেই কেটে যাবে অনেকটা সময়। উত্তর দিকে তাকালেই চোখে পড়বে বরফে ঢাকা কাঞ্চনজঙ্ঘা। দিনে পাখির কলতান ও সন্ধেয় ঝিঁঝি পোকার ডাক আপনার একঘেয়ে জীবনে যে অক্সিজেনের জোগান দেবে তা বলাই যায়। দিনকয়েক নাকডাড়া গ্রামে থেকে আশেপাশে ঘুরে বেড়াতে পারেন।
ছোট পাহাড়ি গ্রাম নাকডাড়ায় প্রায় ১৫০০ মানুষের বাস। জীবিকা বলতে ছিল পাহাড়ের মাটিতে আদা, ঝাড়ু, বড় এলাচ ও সবজির চাষ এবং গবাদি পশুপালন। সম্প্রতি পর্যটনের মাধ্যমে জীবিকার নতুন দিশা পেয়েছেন স্থানীয়রা। তৈরি হয়েছে তিনটি হোম স্টে। একসঙ্গে ৮০জন থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। খরচ মধ্যবিত্তের হাতের নাগালের মধ্যে। মোবাইল নেটওয়ার্কের কোনও সমস্যা নেই। ইতিমধ্যেই দূরদূরান্তের পর্যটকরা এই গ্রামে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন।
পর্যটকদের দাবি, “নাকডাড়ার অপরূপ ঝিল সত্যিই ভাল লাগছে।” হোম ষ্টে মালিক সমীর ঠাকুরি এবং বিশাল ঠাকুরি বলেন, “খুব কম খরচে থাকাখাওয়ার ব্যাবস্থা আছে এখানে। চারদিকে শুধু সবুজ আর সবুজ। সব সময় ঠাণ্ডা অনুভব হবে। তাই পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে নাকডাড়া।” শহরের ব্যস্ততা ও কোলাহল থেকে মুক্তি পেতে হাতে দু-চারদিন সময় নিয়ে তাই নাকডাড়া গ্রামে ঘুরে আসতেই পারেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.