সুব্রত যশ, আরামবাগ: দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে থাকার পর হুগলি জেলা পরিষদ গড়মান্দারন পর্যটন কেন্দ্রকে নতুনভাবে সাজাতে উদ্যোগী হল। পাশেই রয়েছে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান কামারপুকুর। সেখান থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরত্ব। ২০০ একর জমি নিয়ে এই পর্যটন কেন্দ্রে রয়েছে নানা গাছগাছালি, তার মাঝেই বনসৃজন শুরু করেছে জেলা পরিষদ। সামনেই আসছে চড়ুইভাতির সিজন, তাই মনোরম পরিবেশ তৈরি করতে হাত লাগিয়েছে জেলা পরিষদ। নতুন করে সাজাতেই শনিবার এবং রবিবার ভিড় জমাচ্ছেন স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে বহিরাগত পর্যটকরা। এখানে নতুনভাবে তৈরি হচ্ছে পর্যটকদের জন্য রাত্রিবাসের ব্যবস্থা, থাকছে চারটি কটেজ। নির্মাণ শেষের পথে। বনজঙ্গলের মাঝে পর্যটন ছাউনি নির্মাণের কাজও শেষ, বসানো হয়েছে বৈদ্যুতিক আলো। নতুন করে সংস্কারের কাজ প্রথম দফায় শেষের পথে। এখনই ছুটির দিনগুলিতে অন্য বারের তুলনায় বেশি ভিড় হচ্ছে, শীতে ছবিটা আরও বদলে যাবে বলে আশ্বাস হুগলি জেলা পরিষদের।
হুগলি জেলা পরিষদের সভাধিপতি মেহবুব রহমান জানান, আগামী ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি নাগাদ প্রথম দফার কাজ সম্পূর্ণ করে আকর্ষণীয় করে তোলা হবে এই পর্যটন কেন্দ্রকে যাতে মানুষের বিনোদনের কোনও সমস্যা না হয়। পরবর্তী পর্যায়ে আমাদের চিন্তাধারা আছে রোপওয়ে এবং জীববৈচিত্র পার্ক, তাছাড়া আরও কটেজ বাড়ানো হবে। পর্যটক থেকে এলাকাবাসী সকলেরই একটা দাবি ছিল, বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকা এই পর্যটন কেন্দ্রকে সাজানোর লক্ষ্যে অনেক পরিদর্শন হয়েছে। এই বছরের শেষের দিকে হুগলি জেলা পরিষদ এবং জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে কাজ শুরু হয়েছে।
প্রথম দফায় বরাদ্দ হয়েছে ১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে যে সমস্ত কাজ হবে– মূল ফটক থেকে প্রায় ২০০ একর এলাকায় রাজধানী নির্মাণ, আরও বেশি করে হাইমাস্ট লাইট বসানো, চত্বরজুড়ে সাউন্ড সিস্টেম। এছাড়া মূল ফটক, টিকিট কাউন্টার এবং অফিস ঘরের সংস্কার। তৈরি হচ্ছে রাত্রিযাপনের জন্য কটেজ, লক্ষ্মীজলার মধ্যে বিনোদনের ব্যবস্থা, সেতু নির্মাণ করে তৈরি হয়েছে আচ্ছাদন। তাছাড়া রয়েছে এর মধ্যেই একটি পিরের আস্তানা, তার পাশেই রয়েছে বিনোদন পার্ক, সেখানেও সংস্কার হয়েছে। রয়েছে পাখিরালয় এবং পিকনিকের ব্যবস্থা। শৌচাগার থেকে পানীয় জলের ব্যবস্থা- সবটুকুই মিলবে এখানে। হুগলি জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ার মহাজ্যোতি বিশ্বাস জানান, এখানে টিকিট কেটে ঢুকতে হবে। পর্যটন কেন্দ্রে ঢুকে থাকা কিছু ব্যক্তি মালিকানার জমি রয়েছে। সেগুলিকে আলাদা করে প্রাচীর দেওয়া হচ্ছে। আর কিছুদিনের মধ্যেই নীরব নিস্তব্ধ যাঁরা জীবনযাত্রা করতে চাইবেন এখানে সব সুযোগ-সুবিধা মিলবে। এখানে বিভিন্ন মূর্তি স্থাপিত হচ্ছে। গড় মান্দারণের ইতিহাস সকলের জানা। পর্যটন কেন্দ্রের এক কর্মী জানান, ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাস ছাড়াও সারা বছরই এখানে মানুষজন আসে, তবে এই দুটি মাস প্রত্যেক দিন ১০ থেকে ১৫ হাজার মানুষের সমাগম হয় চড়ুইভাতি করার জন্য।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.