Advertisement
Advertisement
Mousuni Island

‘যশে’র তাণ্ডবে তছনছ পর্যটকদের প্রিয় মৌসুনি, অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি স্থানীয়রা

পরিস্থিতি চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা বা করানো শক্ত।

Mousuni Island's tourism badly affected by Cyclone Yaas | Sangbad Pratidin
Published by: Suparna Majumder
  • Posted:June 1, 2021 10:44 am
  • Updated:June 1, 2021 11:19 am  

সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ড হারবার: মাটি-কাদায় লুটোপুটি খাওয়া তাঁবুগুলি। কোনটা যে কার তা বোঝাই দায়। কোনটা আবার উড়ে গিয়ে পড়েছে ৫০ ফুট দূরে। কিছু মাস আগেও যেখানে পর্যটকরা নিশ্চিন্তের আশ্রয় খুঁজতেন। ‘বারবিকিউ’র সুস্বাদু খাবার মুখে দিয়ে খোলা আকাশের জোৎস্না উপভোগ করতেন, সেই মৌসুনি দ্বীপের (Mousuni Island) আজ এই হাল। ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ বা ইয়াসের (Cyclone Yaas) দাপট কীভাবে মৌসুনির পর্যটনের শিরদাঁড়া ভেঙে দিয়েছে তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা বা করানো শক্ত।  

Mousuni Island's tourism badly affected by Cyclone Yaas

Advertisement

পূর্বদিকে চিনাই নদী আর পশ্চিমে মুড়িগঙ্গা। নামখানা থেকে সাতমাইল, দশমাইল বা শ্যামলবাঁধ থেকে নৌকা চাপলে চিনাই নদী পার হতে কয়েক মিনিট। সেখানে সাগরের মোহানার মুখেই ২০১৮ সালে একটা দু’টো করে তৈরি করা হচ্ছিল পর্যটকদের থাকার তাঁবু। পরে সেখানে তৈরি হয় মোট ৫৬টি তাঁবু। কোনওটা মাটির ঘর, কোনওটা আবার ইটের দেওয়াল ঘেরা টালি, টিন বা অ্যাসবেস্টসের চালের। তবে অধিকাংশই ক্যাম্প রিসর্ট। নির্জনে, নিরালায় দু’দিন ছুটি কাটানোর এক নতুন পর্যটনকেন্দ্র হিসাবে ক্রমেই পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত পছন্দের জায়গা হয়ে উঠেছিল মৌসুনি।

[আরও পড়ুন: রাজ্যে প্রাক বর্ষার বৃষ্টি, দিনভর কেমন থাকবে আবহাওয়া? দেখে নিন পূর্বাভাস]

প্রত্যন্ত গ্রামে যেখানে কৃষি ও মাছ ধরা ছাড়া কিছুই করার নেই, সেখানে এই পর্যটন শিল্প ছিল আশীর্বাদের মতো। মৌসুনির সল্টঘেরির সৈকতে প্রায় দু’কিলোমিটার এলাকা জুড়ে গড়ে ওঠা এই ইকোটুরিজম (Ecotourism) তৈরি হওয়ার পর এলাকার মানুষের মুখে হাসি ফোটে। পরিযায়ী শ্রমিকরা ফিরে আসেন নিজের ভিটেয়। পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভর করে মানুষ কেনেন টোটো গাড়ি। এখন টোটোগাড়ির সংখ্যা প্রায় দু’শোর ওপর। বিক্রিবাট্টা বাড়ে দোকানপাটের। নতুন নতুন বহু দোকানও তৈরি হয়। সবজি, মাছের দোকানের সংখ্যা বাড়ে। এছাড়াও কেউ তাঁবুতে রান্নার কাজে, কেউ জল আনার কাজে যোগ দেন। এক একটি তাঁবুতে ৯-১০ জন করে কাজ করতেন। সকলেই এলাকার বাসিন্দা। অর্থাৎ জীবনযুদ্ধে টিকে থাকতে তাঁদের বড় ভরসা ছিল এই পর্যটন শিল্প।

আমফানের ঝাপটা লাগলেও সেবার ততটা ক্ষতি হয়নি তাঁবুগুলির। একটু-আধটু মেরামত করে নিয়েই ফের ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন তাঁবু মালিকরা। কিন্তু যশের রুদ্ররোষ শেষ করে দিয়ে গেল সমস্ত কিছু। কবে ফের এখানে মানুষ বেড়াতে আসতে পারবেন সেই প্রশ্নে চুপ থাকেন মৌসুনি ক্যাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শুভজিৎ সরখেল। সভাপতি চয়ন ভট্টাচার্য জানান, “নির্জন পরিবেশে সৈকতেই তাঁবুতে রাত কাটানোর এমন ব্যবস্থা কোথাও নেই। যার ফলে পর্যটকদের কাছে বেড়ানোর জায়গা হিসেবে আলাদাভাবে আকর্ষণীয় স্থান হয়ে উঠছিল মৌসুনির সল্টঘেরি। নদীর জলোচ্ছ্বাস আটকে তাঁবুগুলিকে রক্ষা করতে প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে নিজেদের পকেটের পয়সাতেই দিয়েছিলেন কংক্রিটের ঢালাই ফেলা বাঁধ। কিন্তু রক্ষা করা গেল না কোনওভাবেই।”

পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভর করে ব্যবসা করা গ্রামের সাধারণ মানুষ এখন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের আশঙ্কায় দিন গুনছেন। মৌসুনি গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য আবদুল কাইয়ুম খান বলেন, “বিগত বছরগুলিতে এমন প্রবল জলোচ্ছ্বাস গ্রামের মানুষ কখনও দেখেনি। গ্রামে প্রচুর ঘরবাড়ি ভেঙেছে। যে পর্যটন শিল্পের ওপর নির্ভর করে পেট চলত গ্রামের মানুষের, শেষ সেটুকুও।”

Mousuni Island's tourism badly affected by Cyclone Yaas

[আরও পড়ুন: রাজ্য পুলিশে বড়সড় রদবদল, কম্পালসারি ওয়েটিংয়ে মেদিনীপুরের ডিআইজি ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement