Advertisement
Advertisement

চলুন বলিউডের নিজস্ব গ্রামে

মান্ডওয়া বড় রঙিন। বড় ফটোজিনিক। হলুদ বালির বুকে তার রঙের বাহার চোখ ঝলসে দেয়।

Mandawa: The Trio Of Colours, Sands And Bollywood
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 1, 2016 9:49 pm
  • Updated:June 11, 2018 3:55 pm  

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উঁহু! বলিউড এই গ্রাম বসায়নি।
এই গ্রাম বসেছে মানুষের নিজের প্রয়োজনে। সে অষ্টাদশ শতকের কথা। ইতিহাসের বালি সরালে দেখা যাচ্ছে, শেখাওয়াত বংশীয় রাজপুত রাজা ভোজরাজ জি কসাবসাব বালির বুকে গড়ে তুলেছিলেন এই সাধের নগরী। ১৭৪০ খ্রিস্টাব্দে। বর্তমানে যার ঠিকানা রাজস্থানের শেখাবতী প্রদেশের ঝুনঝুনু জেলায়।

mandawa1_web
মান্ডওয়ার দেওয়াল ছবি

তার আগে মান্ডওয়া পরিচিত ছিল মান্ডু নামের এক জাট কৃষকদের জন্য। তাদের নামেই গ্রামের নামকরণ মান্ডওয়া।
তাহলে বলিউডের সঙ্গে সম্পর্ক?
সে আরেক ইতিহাস। তথ্য বলছে, বলিউডের বড় প্রিয় এই গ্রাম মান্ডওয়া। পাল্লা দিয়ে একের পর এক ছবির শুটিং হয়েছে মান্ডওয়ায়। তিন খানের বিগ বাজেট ছবির মধ্যে রয়েছে পহেলি, পিকে আর বজরঙ্গি ভাইজান। এছাড়াও তালিকায় রয়েছে জব উই মেট, লাভ আজ কাল, শুদ্ধ দেশি রোম্যান্স। বর্তমানে শুটিং হয়েছে মির্জিয়া, অ্যায় দিল হ্যায় মুশকিল এবং হাফ গার্লফ্রেন্ড-এরও! পরেও হবে, বাজি ধরে বলাই যায়। সেই জন্যই লোকমুখে মান্ডওয়াকে হালফিলে বলা হয় বলিউডের নিজস্ব গ্রাম।

Advertisement
mandawa3_web
মান্ডওয়া দুর্গ

আসলে, মান্ডওয়া বড় রঙিন। বড় ফটোজিনিক। হলুদ বালির বুকে তার রঙের বাহার চোখ ঝলসে দেয়। সেই জন্যই বলিউড ঘুরে-ফিরে আসে তার কাছে।
ইতিহাস বলছে, এই রঙের শুরুটা হয়েছিল অষ্টাদশ শতকে মান্ডওয়া দুর্গ স্থাপনকারী ঠাকুর নওয়াল সিংয়ের হাতে। সেটা ১৭৫৫ খ্রিস্টাব্দ। দুর্গের দেওয়াল সেজে উঠেছিল রঙিন সব ফ্রেসকোয়।তার পর থেকে একের পর এক হাভেলি গড়ে উঠতে থাকে দুর্গকে ঘিরে। নিরাপত্তার জন্য মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীরা দুর্গকে বেড় দিয়েই গড়ে তুলেছিলেন নিজেদের আবাস। এই সব হাভেলিও মান্ডওয়া দুর্গের আদলে সেজেছিল নয়নমনোহর দেওয়াল-ছবিতে।

mandawa6_web
হাভেলি বিলাস

এই দেওয়াল-ছবিই মান্ডওয়ার আসল সম্পদ। মান্ডওয়ার পথে ইতিউতি চোখ ফেললেই দেখা যাবে সুন্দর সব ছবি। ছবির বিষয়বৈচিত্র্যও বিস্মিত করার মতো। সেখানে যেমন রয়েছে রামায়ণ, কৃষ্ণলীলা, তেমনই রয়েছে গ্রামোফোন, ক্যামেরা, ট্রেনের মতো বিষয়-আশয়ও! বলাই বাহুল্য, আধুনিক এই সব জিনিস ফ্রেসকোর বিষয় হয়েছে অনেক পরে, মুখ্যত বলিউডের হাত ধরে।

mandawa4_web
উটের পিঠে বালিয়াড়িতে

দুঃখের কথা, মান্ডওয়া তার স্বর্ণযুগ হারিয়েছে। এক সময় তার সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগাযোগ ছিল দিল্লি, গুজরাত, চিন এবং মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে। ধীরে ধীরে সেই ব্যবসায়িক যোগাযোগ ছিন্ন হতে থাকে। মান্ডওয়াবাসী মাড়োয়ারি ব্যবসায়ীরাও তখন হাভেলি ছেড়ে চলে যান অন্যত্র। ফলে, মান্ডওয়ার অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়ে। অবহেলার মুখ দেখে এক সময়ের নয়নের মণি এই মান্ডওয়া।
তবে, স্মৃতি আর ঐতিহ্য তাকে ছেড়ে কোথাও যায়নি। মান্ডওয়া এলেই সেটা বুঝতে পারবেন।
কী ভাবে পৌঁছবেন মান্ডওয়ায়:
ফ্লাইটে এলে নামতে হবে জয়পুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। সেখান থেকে গাড়িতে প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার রাস্তা পাড়ি দিয়ে পৌঁছতে হবে মান্ডওয়ায়।
ট্রেনে এলে বুদ্ধিমানের কাজ হবে ঝুনঝুনু স্টেশন ছুঁয়ে আসা। সেখান থেকে মান্ডওয়ার দূরত্ব মাত্র ৩৪ কিলোমিটার। মিনিট সাতাশের ওই পথটুকু পেরোতে হবে গাড়িতে।

mandawa7_web
মরুজীবনের স্বাদ

কী করবেন মান্ডওয়ায়:
• মান্ডওয়া দুর্গ ভ্রমণ: ফ্রেসকোর রং-রায়টে অপরূপা মান্ডওয়া দুর্গ সারা জীবন ছবি হয়ে থেকে যাবে মনের মাঝে।
• হাভেলি বিলাস: একের পর এক হাভেলি তাদের দেওয়াল-সাজ নিয়ে অপেক্ষা করছে ভ্রমণার্থীদের জন্য। তাদের মধ্যে ডবল গোয়েঙ্কা, বিশ্বনাথ গোয়েঙ্কা, ঝুনঝুনওয়ালা, গুলাব রাই লাডিয়া এবং বংশীধর নেওয়াটিয়ার হাভেলি বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। অন্যগুলোও সময় থাকলে বাদ দেবেন না।

mandawa5_web
কৃষ্ণসারের খুনসুটি

• উটের পিঠে বালিয়াড়িতে: উটের পিঠে বালিয়াড়ি সফর মান্ডওয়ার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এটা বাদ দিলে চলবে না।
• তাল ছপ্পর অভয়ারণ্য: মান্ডওয়া থেকে ঘণ্টা দুয়েকের দূরত্বে রয়েছে তাল ছপ্পর অভয়ারণ্য। মুখ্য কৃষ্ণসার হরিণের জন্য বিখ্যাত হলেও নানা শিকারি পাখি এবং অন্য পশুজীবনও ফেলনা নয়।
কোথায় থাকবেন:

mandawa2_web
ছবির মতন ঘর, ঘরজোড়া ছবি

মান্ডওয়ায় থাকতে পারেন তিন রকম ভাবে। যদি পকেটে জোর থাকে, তবে বেছে নিন হেরিটেজ হোটেল। যার প্রতিটি ঘরের দেওয়াল জুড়ে আঁকা রয়েছে অপূর্ব সব ছবি। সেই ছবির মাঝে জীবনযাপন নিঃসন্দেহে খুব নতুন অভিজ্ঞতা। নইলে থাকতে পারেন মান্ডওয়া ডেসার্ট রিসর্টে, মাটির ঘরে, বালির মাঝে। সেও অভিজ্ঞতায় অনন্য। দুইয়ের কোনওটাই কুলিয়ে উঠতে না পারলে বাজেট হোটেল তো আছেই!
কী খাবেন:
কের সাংগরি, গাট্টে কি সবজি, মিসসি রোটি, কুকুরি ভিন্ডি এবং এরকম আরও সব লোভনীয় নিরামিষ রাজস্থানি খাবারে মন আর পেট- দুটোই ভরবে। এসেই দেখুন না একবারটি!

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement