সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: একডালিয়া সর্বজনীন, আহিরিটোলা, কুমারটুলি, মুদিয়ালি, শোভাবাজার রাজবাড়ি এতদিন টিভিতে দেখেই মন ভরাতে হত কলকাতার বাইরের পর্যটকদের। ইচ্ছে থাকলেও সাহসে ভর করে বিশাল এলাকার পুজো দেখা উত্তরবঙ্গবাসীর কাছে খানিকটা অসম্ভবই ছিল। তবে এবার কলকাতা ও শহরতলির বিখ্যাত পুজোগুলোকে হাতের নাগালে এনে দিচ্ছে রাজ্য পর্যটন দপ্তর। যাঁরা কলকাতা ভাল করে চেনেন না, কিংবা মহানগরীর পুজোর ভিড়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারবেন না, তাঁদের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাসে একাধিক পুজো প্যাকেজের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। সড়কপথে পাশাপাশি এবার জলপথেও প্রতিমা দর্শন ও বিসর্জন দেখার কয়েকটি প্যাকেজ রাখা হয়েছে।
পুজো পরিক্রমা থেকে বিসর্জন, সমস্তই রাজ্যবাসী দেখতে পাবেন পর্যটন দপ্তরের সামান্য খরচের প্যাকেজ ট্যুরে। মিলবে প্রাতঃরাশ থেকে নৈশভোজ; কোথাও মধ্যাহ্নভোজও। ফলে রাজ্যের এমনকী বাইরে থেকেও যাতে প্রবাসীরা পুজোর স্বাদ নিতে পারেন, তাই আগাম এই প্যাকেজ ঘোষণা করে দেওয়া হল দপ্তরের তরফে। সোমবার শিলিগুড়িতে পর্যটন দপ্তরের কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করে প্যাকেজ ট্যুরের সূচি এবং প্যাকেজ মূল্য জানিয়ে দেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব। তিনি বলেন, এবারের পুজোয় শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি এবং কলকাতায় একাধিক পুজো প্যাকেজ করা হচ্ছে। অনেকেই পুজোর সময় বাইরে ঘুরতে যেতে পছন্দ করেন। যাঁরা উত্তরবঙ্গ থেকে কলকাতায় যাবেন তাঁরা যেমন এই প্যাকেজের সুবিধা নিতে পারবেন। একইভাবে যাঁরা উত্তরবঙ্গে ঘুরতে আসবেন, ওই সময় তাঁরা উত্তরবঙ্গের পুজোর স্বাদ গ্রহণ করতে পারবেন। কলকাতার পাশাপাশি লাগোয়া জেলাগুলির বেশ কিছু পুজোকেও আলাদা প্যাকেজে রাখা হয়েছে।”
কলকাতা শহরে মহালয়া ও তর্পণ নিয়ে একটি প্যাকেজ করা হয়েছে। বাবুঘাটে তর্পণ করে লঞ্চে দক্ষিণেশ্বর, বেলুড়মঠ দর্শন করে কুমোরটুলিতে মূর্তি তৈরি দেখিয়ে শেষ হবে এই প্যাকেজ। সঙ্গে মিলবে প্রাতঃরাশ ও নিরামিষ মধ্যাহ্নভোজ। যার জন্য প্যাকেজ মূল্য ধরা হয়েছে এক হাজার ৬০০ টাকা। তেমনই ‘উদ্বোধনী’ নামে একটি প্যাকেজ করা হয়েছে। সারারাত পুজো ঘোরানো হবে দেড় হাজার টাকায়। এই প্যাকেজে রয়েছে, কলেজ স্কোয়ার, মহম্মদ আলি পার্ক, কাশি বোস লেন, বাগবাজার সর্বজনীন, বাদামতলা আষাঢ় সংঘ, ৬৬ পল্লি, মুদিয়ালি ক্লাব, শিব মন্দির, একডালিয়া এভারগ্রিন, সিংহী পার্ক, হিন্দুস্থান রোড, নবোদয় সংঘ। ‘সনাতনী’ নামে আরও একটি প্যাকেজ ট্যুর রয়েছে। কলকাতায় দেড় হাজার টাকার এই প্যাকেজে প্রাতঃরাশ এবং পুজো ভোগ খাওয়ানো হবে। যার মধ্যে রয়েছে খেলাত ঘোষবাড়ি, জোড়াসাঁকো দাঁ বাড়ি, শোভাবাজার রাজবাড়ি ছাতুবাবু লাটুবাবুর পুজো, রানী রাসমণি, ঠনঠনিয়া দত্তবাড়ি, সনাতনীর আরও একটি প্যাকেজ রয়েছে। দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘোরানো হবে।
এছাড়া রয়েছে ‘দক্ষিণী’। যার মধ্যে দেখা যাবে ম্যাডক্স স্কোয়ার, আদি বালিগঞ্জ সর্বজনীন, একডালিয়া এভারগ্রিন, সিংহী পার্ক, হিন্দুস্তান পার্ক, দেশপ্রিয় পার্ক, মুদিয়ালি ক্লাব, বাদামতলা আষাঢ়, সংঘ চেতলা অগ্রণী, ৬৬ পল্লি, শিবমন্দির, উত্তরা প্যাকেজে মিলবে মহম্মদ আলি পার্ক, কলেজ স্কোয়ার, বাগবাজার সর্বজনীন, কুমারটুলি পার্ক, আহিরিটোলা, পাথুরিয়াঘাটা পাঁচের পল্লি, রবীন্দ্রকানন, কাশিবোস লেন, তেলেঙ্গাবাগান মানিকতলা, চালতা বাগান, রামমোহন স্মৃতি সংঘ। এছাড়া শুধুমাত্র লঞ্চে করে পুজো দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে পর্যটন দপ্তরের তরফে। এতে পুজো দেখান পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাবেন পর্যটকেরা। সকাল এবং বিকেলে দু’টি আলাদা প্যাকেজ রয়েছে।
তবে শুধু কলকাতা নয়, আশপাশের কলকাতা লাগোয়া জেলাগুলির বিখ্যাত পুজোগুলো দেখানোর ব্যবস্থা করছে দপ্তর। যেমন হুগলি, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম পুজো প্যাকেজে রাত্রিবাসের বন্দোবস্ত করা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.