মধুপুরের সেই ব্রিটিশ বাংলো, ছবি: মৈনাক মুখোপাধ্যায়।
চন্দ্রশেখর চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল: ভ্রমণপ্রিয় বাঙালির জন্য এবার সুখবর। মধুপুরে পর্যটকদের জন্য আউট হাউস বা বাগানবাড়ি তৈরি করতে চলেছে রেল। আসানসোল রেল ডিভিশনের উদ্যোগে ব্রিটিশ আমলের দু’টি রেল বাংলো সংস্কার করে কমিউনিটি সেন্টার ও হলিডে রিসর্ট তৈরি করা হবে। শীতের শুরুতেই যা উদ্বোধন হবে৷ জনসাধারণের জন্য খুলেও দেওয়া হবে বাগানবাড়ি দুটি। ৫০০ মিটার এলাকা জুড়ে থাকা বাগানের মধ্যে দু’টি হলিডে হোম তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন আসানসোলের ডিআরএম প্রশান্তকুমার মিশ্র।
ডিআরএম বলেন, “মধুপুরে রুটিন পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। সেখানে বাগানবাড়ির ভিতরে থাকা ওই দু’টি পুরনো ভবন ভেঙে ফেলার কথা চলছিল। কিন্তু ১৪০ বছর হয়ে গেলেও বাড়িগুলি এখনও ঠিকঠাকই রয়েছে। ব্রিটিশ আমলের গথিক ডিজাইন, শক্তপোক্ত কাঠামো। সবুজের মধ্যে প্রাকৃতিক পরিবেশটিও খুব সুন্দর। তাই ভবন দু’টি নষ্ট না করে সংস্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সংস্কার সম্পন্ন হলে রেলকর্মী ও সাধারণ মানুষ সকলেই হলিডে হোম দু’টি ব্যবহার করতে পারবেন। এর ফলে ভবনের রক্ষণাবেক্ষণের খরচও উঠে আসবে।পূর্ব রেলের ভ্রমণপ্রিয়রাও উপকৃত হবেন।”
পর্যটন প্রিয় বাঙালির কাছে মধুপুরের একটা আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। বিহার-ঝাড়খণ্ডের সীমানায় দেওঘর, শিমুলতলা, মধুপুরে এখনও দেখা মেলে গৌরবোজ্জ্বল অতীতের ঝলক। মধুপুরের দু’টি পাথুরে নদী রয়েছে। কথিত আছে, যার জল খেলে পেটের রোগ দূর হয়ে যায়। এখানে এখনও যোগাযোগের বড় মাধ্যম ঘোড়ার গাড়ি। বৈদ্যনাথ ধাম ও নওলখা মন্দিরে রয়েছে উত্তম স্থাপত্যের নিদর্শন। জৈনদের শ্রেষ্ঠ তীর্থক্ষেত্র পরেশনাথ পাহাড়। এখানকার উৎকৃষ্ট মানের লোহার হাতা, খুন্তি, কড়াই পর্যটকরা কিনে নিয়ে যান। দেওঘরের দুগ্ধজাত মিষ্টির মধ্যে পেড়া, রাবড়ি, ছানার মুড়কি, কাঁচাগোল্লার জনপ্রিয়তা রয়েছে। মধুপুরের আশপাশের মাঠ, ঘাট, পাহাড় দেখতে ভিড় জমান পর্যটকরা। এখানেই রয়েছে ‘প্রফেসর শঙ্কু’ খ্যাত গিরিডির উশ্রী ফলস। আসানসোল থেকে ৭০ কিলোমিটার দূরে এখানেই রয়েছে স্যর আশুতোষ মুখোপাধ্যায়ের গঙ্গাপ্রসাদ বাড়ি। তাই প্রকৃতি ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব, এই দুই দিক বিচার বিবেচনা করেই মধুপুরে পর্যটকদের জন্য ব্রিটিশ আমলের বাংলো সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.