সাবিরুজ্জামান, লালবাগ: হাত বাড়ালেই নথিচাপা ইতিহাস। দেখে শুনে নাড়াচাড়া করা চললেও তা নিয়ে আলোচনা আর করা একদম চলবে না। গবেষকই হোন বা ছাত্র, কিংবা নেহাতই উৎসাহী পর্যটক, গ্যালারিতে দাঁড়িয়ে সেই ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার সুযোগটুকু পাবেন সবাই। কিন্তু তা নিয়ে কথা বলা বিলকুল মানা। করোনা (Coronavirus) সংক্রমণ এড়াতে হাজারদুয়ারি (Hazarduari) মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ জারি করল এমনই ফরমান। জানিয়ে দেওয়া হল, এখন থেকে মিউজিয়ামের গ্যালারির ভিতর প্রবেশ করে কোনও কথা বলা যাবে না। কাউন্টারে মিলবে না চিরাচরিত কাগজের টিকিট। ফলে হাজারদুয়ারিতে প্রবেশ করতে হলে অনলাইন বুকিং কিংবা ফোন-পে তেই টিকিট কাটতে হবে। এই নিষেধাজ্ঞায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলার ইতিহাসবিদ থেকে শুরু করে বিশিষ্টজনরাও।
হাজারদুয়ারির দায়িত্বপ্রাপ্ত ডেপুটি সুপারিন্টেডেন্ট অফ আরকিওলজিস্ট গৌতম হালদার বলেন ,“করোনা সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে মিউজিয়ামের গ্যালারিতে কথা বলা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অন্যদিকে হাজারদুয়ারিতে প্রবেশের জন্য কাগজের টিকিট বাতিল করে অনলাইন বুকিং চালু করা হয়েছে।” লকডাউনের ফলে টানা ১১১ দিন বন্ধ থাকার পর বেশ কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করে সোমবার সাধারণের জন্য খোলা হয় হাজারদুয়ারি মিউজিয়াম। মাস্ক পরা, মিউজিয়ামে দলবদ্ধ হয়ে প্রবেশ না করা, সকলের আলাদা আলদাভাবে নাম, ঠিকানা এবং মোবাইল নম্বর নথিভুক্ত করার বিধি লাগু হয়েছিল আগেই। শুধু তাই নয়, হাজারদুয়ারি চত্বরে মিউজিয়াম দর্শনের আগে এবং পরে ঘোরাঘুরি করতেও দেওয়া হবে না বলে জানানো হয়।
এবার জারি হল নতুন বিধিনিষেধ। সেই নিষেধের বেড়াজালে এখন থেকে মিউজিয়ামের গ্যালারিতে প্রবেশ করে কোনও পর্যটক নিজেদের মধ্যে কথা পর্যন্ত বলতে পারবেন না। এতেই ক্ষোভ জমেছে জেলার ইতিহাস সচেতন নাগরিকদের মধ্যে। এ ব্যাপারে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা লালবাগের বাসিন্দা মহম্মদ আলি বলেন ,”হাজারদুয়ারির গ্যালারি ইতিহাসের ভাণ্ডার। ওই গ্যালারি ইতিহাস গবেষক তো বটেই সাধারণ পর্যটক এবং যেকোনও বয়সের পড়ুয়াদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় কেন্দ্র। ফলে গবেষকের পাশাপাশি যে কোনও ধরনের পর্যটক গ্যালারিতে প্রবেশ করে নিজেদের মধ্যে ইতিহাস জ্ঞানের আদান প্রদান করবেন, এটাই স্বাভাবিক। এই বিধিনিষেধ শিথিল করা জরুরি।” এদিকে হাজারদুয়ারিতে প্রবেশের কাগজের টিকিট বাতিল করে অনলাইন ব্যবস্থায় চটেছে স্থানীয় ব্যবসায়ী মহল। তাঁদের দাবি, “এখানে সব ধরনের পর্যটক আসেন তাদের পক্ষে অনলাইন ও ফোন-পে টিকিট কাটা একটা
বিড়ম্বনা।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.