সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোটা পার্ক জুড়ে ইতস্তত মাথা তুলে রয়েছে পুরুষাঙ্গ। দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর। কোনওটা কাঠের, কোনওটা বা পাথরের। দক্ষিণ কোরিয়ার হেসিনদাং পার্ক। ইংরেজিতে তর্জমা করলে যার মানে দাঁড়ায়- পেনিস পার্ক!
বিকৃতকাম? না কি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ নিয়ে নিছক মজা?
প্রথমবার এই পার্কের ছবি দেখলে প্রশ্ন দুটো ভাবাবে। কেন না, শুধু উথ্থিত পুরুষাঙ্গই নয়, এই পার্কের মূর্তির মধ্যেও ছড়িয়ে রয়েছে নানা শরীর খেলার ইঙ্গিত। হস্তমৈথুন, লিঙ্গের গায়ে পশুর মুখ, লিঙ্গলেহন- বাদ যায়নি কিছুই। মূর্তি গড়ার মতো অনেক কিছু থাকতেও এত স্পষ্ট যৌনতা কেন?
হেসিনদাং পার্কের ইতিহাস বলছে এক করুণ গল্পের কথা। এক অতৃপ্ত কুমারী মেয়ের যৌনক্ষুধা চরিতার্থ না হওয়া এবং সেই অনুষঙ্গে তার অভিশাপের কথা। জানা যায়, এক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার গাংওন জেলার সিনাম গ্রামের এই জায়গায় কিছুই ছিল না। প্রকৃতি তার উদার রূপ মেলে রেখেছিল নীল সমুদ্রের ধারে। একদিন হেসিনদাং নামের এক কাঠুরে তার প্রেমিকা অবাইয়ের সঙ্গে কাঠ কাটতে এল সেখানে। অবাই বসে ছিল সমুদ্রের ধারের একটা পাথরে। হেসিনদাং ব্যস্ত ছিল কাঠ কাটায়। এমন সময়ে উঠল এক তুমুল ঝড়। ঝড়ে সমুদ্রে ভেসে গেল অবাই। জলে ডুবে তার মৃত্যু হল। আর, তার পর থেকেই অভিশপ্ত হয়ে উঠল জায়গাটা। এক সময়ে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত সেখানে। কিন্তু, অবাইয়ের মৃত্যুর পর থেকে আর কোনও মাছই ধরা দিল না জালে।
এইভাবেই যাচ্ছিল দিনের পরে দিন। একদিন এক জেলে খুব ক্লান্ত শরীরে, হতাশ মনে মাছ না পেয়ে ঘুমিয়ে পড়ল সেখানেই, ঠিক যেখানে মৃত্যুর আগে বসে ছিল অবাই। ঘুমের মধ্যে শরীর জেগে ওঠায় সে হস্তমৈথুন করল সমুদ্রের পাড়ে। এবং, জলে বীর্য ত্যাগ করতেই দেখা গেল অবাক কাণ্ড। জলের মধ্যে থেকে উঁকি দিতে থাকল মাছেরা! তার পর থেকেই বুঝল সিনাম গ্রামের মানুষ, অবাইয়ের অতৃপ্ত আত্মাই আটকে রেখেছে মাছগুলোকে। তাই, গ্রামের মেয়ের কামনা চরিতার্থ করতে তারা সমুদ্রের তীরে গড়ে তুলল এই পেনিস পার্ক। অবাইয়ের সম্মানার্থে প্রত্যেকটা পুরুষাঙ্গই চিহ্নিত হল হেসিনদাংয়ের নামে। সেই জন্যই পার্কের নামও হেসিনদাং! ওই পার্কে এখনও দেখা যায় অবাইয়ের সমাধি। অবাইয়ের মৃত্যু দিনে সেখানে মেলা বসে। অবাইয়ের সম্মানার্থে তো বটেই, নিছক মজার জন্যও পার্কের মূর্তির উপর বসে ছবি তোলেন পর্যটকরা!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.