সুশোভন বন্দ্যোপাধ্যায়: গুজরাত৷ পশ্চিম ভারতের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান৷ আহমেদাবাদ, সোমনাথ, গান্ধীনগরের মতোই জনপ্রিয় ভুজ৷ ভূমিকম্পকের আতঙ্ক এখন অতীত৷ নতুন করে সেজে উঠেছে কচ্ছের এই সদর শহর৷ তাই গুজরাত ভ্রমণে গেলে এই স্থানে যেতে ভুলবেন না৷
গুজরাতের উত্তর-পশ্চিমে এই রাজ্যের সবচেয়ে বড় জেলা কচ্ছ৷ রঙিন পোশাক পরা মানুষজন নিয়ে ভুজ শহরটি বেশ আকর্ষণীয়৷ পাঁচিল দিয়ে ঘেরা এই নগরে রয়েছে একটি প্রাসাদ৷ বাসস্ট্যান্ডের কাছে রয়েছে হাসিরসর লেক আর তার কাছেই রয়েছে কচ্ছ মিউজিয়াম৷ আগে এর নাম ছিল ফার্গুসেন মিউজিয়াম৷ এটি গুজরাতের সবচেয়ে প্রাচীন সংগ্রহশালা৷ তবে বুধবার মিউজিয়ামটি বন্ধ থাকে৷ তাই সেদিন বরং অন্য জায়গাগুলো ঘুরে নিন৷
এছাড়াও এই শহরের দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে আয়নামহল প্রাসাদ, প্রাগমহল প্রাসাদ, সারদবাগ প্রাসাদ, স্বামী নারায়ণ মন্দির৷ ভারতীয় সংস্কৃতি দর্শন করতে ঢুঁ মারতে পারেন কচ্ছ লোককলা মিউজিয়ামে৷ ঘোরার জন্য এখানে অল্প খরচেই স্কুটার ও সাইকেল ভাড়া পাওয়া যায়৷ কচ্ছের গ্রামগুলিও দেখার মতো৷ রাজস্থানের গ্রামের সঙ্গে এখানকার গ্রামের বেশ মিল আছে৷
এখানকার আর এক আকর্ষণ রন অঞ্চল৷ ভুজের উত্তরে এই রন অঞ্চলে রয়েছে বিশ্বের একমাত্র বন্য গাধার অভয়ারণ্য৷ বিরলপ্রায় সাদা বাদামি বর্ণের গাধার দেখা পাওয়া যায় এখানে৷ পাশাপাশি শীতের মরশুমে এখানে নানা পরিযায়ী পাখি ভিড় জমায়৷ ১৯৬৫ সালে ভারত-পাক যুদ্ধের সময় এই রন অঞ্চল ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ৷ হাতে সময় থাকলে ভুজ থেকে চলে যান নারায়ণ সরোবর এবং কোটিশ্বর শিবের মন্দির৷ ভুজ থেকে এর দূরত্ব ১৪৭ কিমি৷
কীভাবে যাবেন
হাওড়া থেকে শালিমার-ভুজ এক্সপ্রেসে (২২৮২৯) সরাসরি পৌঁছে যাবেন ভুজে৷ এছাড়াও দ্বারকা থেকে বাসে বা আমেদাবাদ থেকে ট্রেনে অথবা বাসে ভুজ আসতে হবে৷ রাজকোট থেকেও এখানে আসা যায়৷ দূরত্ব ১৭০ কিমি৷ আমেদাবাদ থেকে রাতের বাসে ঘণ্টা দশেকের মধ্যে পৌঁছানো যায় ভুজে৷ স্লিপিং কোচের বাসও আছে৷ ভুজ থেকে ২৫৫ কিমি দূরে ধোলাভিরা গ্রাম৷ বাস যায়৷ এখান থেকে চলুন বুনো গাধার সন্ধানে ওয়াইল্ড অ্যাস স্যাংচুয়ারিতে৷
কোথায় থাকবেন
বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশনকে কেন্দ্র করে থাকার জন্য বেশ কয়েকটি বেসরকারি হোটেল রয়েছে৷ তবে বাসস্ট্যান্ডের কাছেই হোটেলের সংখ্যা বেশি৷ সাগর গেস্ট হাউস, জনতা, সাহারা প্যালেস, আভা ইণ্টারন্যাশনাল, ভি.আর.পি লজ, অন্নপূর্ণা, ঋত্বিক, রতরানী, প্রিন্স প্রভৃতিতে ডাবল বেডের ভাড়া ১০০০-৪০০০ টাকা৷ ধোলাভিরা থেকে কচ্ছের রনের অভয়ারণ্যে যেতে না চাইলে লিটল রন থেকে আডেসর বা ধারাংগ্রাম হয়ে কচ্ছের বুনো গাধার অভয়ারণ্যে যেতে পারেন৷ এই দুই জায়গাতে থাকার জন্য বন দফতরের গেস্ট হাউস আছে৷ কচ্ছের রনে টেন্টের মধ্যে থাকতে হলে ধোরজেতে রয়েছে ‘হোয়াইট রন রিসর্ট’৷ এখানে পূর্ণিমা রাত্রে চাঁদের আলোয় বিস্তীর্ণ মরুভূমি দেখার অনুভূতিই আলাদা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.