সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অযোধ্যায় যখন রামমন্দিরের ভিতপুজোর প্রস্তুতি চলছে পুরোদমে, তখন সেখান থেকেই প্রায় আটশ কিলোমিটার দূরে চাঁদখুরিকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। এই জায়গাটি ছত্তিশগড়ে পড়ে। চাঁদখুরি আসলে রামচন্দ্রের মামাবাড়ি বলেই পরিচিত। পুরাণে কথিত, এই স্থানেই জন্ম গ্রহণ করেছিলেন কৌশল্যা। তাছাড়া, ১৪ বছরের বনবাসে যখন শ্রীরামচন্দ্র গিয়েছিলেন, তখন এই চাঁদখুরির উপর দিয়েই যাত্রা করেছিলেন তিনি। আর সেই পবিত্র ধর্মস্থানকেই এবার সাজাতে চলেছে ছত্তিশগড় সরকার।
জন্মস্থান হিসেবে চাঁদখুরিতে রয়েছে প্রাচীন এক কৌশল্যা মাতার মন্দিরও। এবার সেই মন্দিরের আশপাশের এলাকাকে ঘিরেই ছত্তিশগড় সরকার নয়া পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলছে চলেছে। পর্যটকরা অবশ্য আগেও আসতেন, তবে এবার একটু বড় পরিসরে অর্থাৎ জাতীয়স্তরের পর্যটন কেন্দ্রর কথা ভাবা হয়েছে। যে প্রকল্পের খরচ বাবদ বরাদ্দ হয়েছে ১৫ কোটি টাকা। অযোধ্যায় রামমন্দির নিয়ে যখন গেরুয়া শিবির ব্যস্ত, তখন ছত্তিশগড়ের কংগ্রেস সরকারও কি হিন্দুত্ব ভাবাবেগ হারানোর ভয়ে তড়িঘড়ি এই প্রকল্পের ঘোষণা করলেন? রাজনৈতিক মহলের অন্দরে অনেকেই তুলছেন এই প্রশ্ন।
স্থানীয় মানুষজনের কাছে চাঁদখুরি অতি পবিত্র ধর্মীয়স্থান। প্রতি বছর এখানে কালীপুজোর সন্ধেবেলা কৌশল্যা মাতার মন্দিরে পুজো দিতে আসেন হাজারো পুন্যার্থীরা। প্রদীপ ভাসানো হয় মন্দিরের সামনের লেকের জলে। তাই ছত্তিশগড় সরকারের ভাবনা, আগামী বছর দিওয়ালির আগেই যাতে পুরো প্রকল্পের কাজ শেষ করা যায়। ইতিমধ্যেই অবশ্য সেই উদ্যোগ নিয়ে কাজে নেমে পড়েছে তারা।
তা এই চাঁদখুরি জায়গাটি কীরকম? সোজা ভাষায় বলতে গেলে, একেবারে ছবির মতো সুন্দর। চারিদিকে ঘন সবুজ জঙ্গল। মাঝখানে কটি লেক। আর এই জলাশয়ের ঠিক মাঝেই রয়েছে কৌশল্যা মাতার মন্দির। এবার সেই মন্দিরে পৌঁছনোর জন্য গড়া হবে বিশেষ কংক্রিটের ব্রিজ। সূত্রের খবর, ব্রিজের পিলারগুলি ডিজাইন এমনভাবে রাখা হয়েছে, যাতে দেখে মনে হয়, কোনও মানুষের হাত ধরে রেখেছে ব্রিজটিকে। বিকেলে যখন সুয্যিমামা অস্ত যায়, তখন সবুজ জঙ্গল থেকে লেকের জলে খেলে যায় বিকেলের পড়ন্ত আলো। সেই মায়াবী আলোর সঙ্গে যখন কানে ভেসে আসবে ভক্তিগীতি, তখন যে বেশ দিব্যি লাগবে তা বোধহয় আর আলাদা করে বলার প্রয়োজন পড়ে না!
ছত্তিশগড় সরকার সমস্ত পরিকল্পনা সেরে ফেলেছে। কেমন হবে চাঁদখুরির ধর্মীয় পর্যটন কেন্দ্র তার নকশাও ইতিমধ্যেই প্রকাশ করেছেন ছত্তীশগড় সরকারের তরফে মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.