দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: সুন্দরবন মানেই পর্যটকদের কাছে এক বিশেষ আকর্ষণ। তবে দেশ-বিদেশের পর্যটককে আরও বেশি করে সুন্দরবনের প্রতি আকৃষ্ট করতে এবং পর্যটনের প্রসারে জঙ্গলের মধ্যেই গড়ে উঠবে ম্যানগ্রোভ চিড়িয়াখানা। ১০০ কোটি টাকা খরচ করে গড়ে উঠবে এই অভিনব চিড়িয়াখানা। দেশের মধ্যে এমন চিড়িয়াখানা এই প্রথম।
বনদপ্তর সূত্রে খবর, ঝড়খালির পর্যটন কেন্দ্রের কাছেই গড়ে তোলার পরিকল্পনা করা হয়েছে ম্যানগ্রোভ চিড়িয়াখানার। তিন পর্যায়ে হবে এই কাজ। জঙ্গলের ধার বরাবর গড়ে তোলা হবে ক্যানোপি ওয়াকের রাস্তা। যেখানে পায়ে হেঁটে চলার রাস্তা যেমন থাকবে, তেমনই বৃদ্ধ ও অসুস্থ মানুষের জন্য থাকবে এসকেলেটর। যা ব্যবহার করে চিড়িয়াখানার বিভিন্ন পশুপাখি দেখতে পাবেন পর্যটকরা।
বুধবার বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বাসন্তী ঝড়খালি পরিদর্শনে যান। ঝড়খালির বিভিন্ন ইকোট্যুরিজম প্রকল্পগুলি ঘুরে দেখেন তিনি। সেখান থেকে জলযান করে নেতিধোপানিতে যান। সেখানে গিয়ে পৌরাণিক এই স্মৃতিসৌধটিকে পর্যবেক্ষণ করেন। নেতিধোপানিকে সাজানো হয়েছে সুন্দরভাবে। পর্যটকদের আকর্ষণ করার লক্ষ্যে নেতিধোপানি এই পর্যটন কেন্দ্রটি ইতিমধ্যেই সুন্দরবনের ঘুরতে আসা পর্যটকদের নজর কেড়েছে। এখানে বানানো হয়েছে ইউনেস্কো স্তম্ভ। আগামী দিনে এই নেতিধোপানি পর্যটনকেন্দ্রটিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
বনমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সুন্দরবনে পা রাখলেন। ঘুরে দেখলেন বুলবুল অধ্যুষিত সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকা। নেতিধোপানি থেকে দোবাকীর জঙ্গলে যান তিনি। সেখানে গিয়ে ক্যামেরার মাধ্যমে সুন্দরবনের জঙ্গলে যে বাঘ গণনা চলছে তাও পর্যবেক্ষণ করেন। বুলবুলের প্রভাবে এলাকায় যে সমস্ত ক্যাম্প অফিসগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলো দ্রুত মেরামতের কাজ করে আবার নতুন করে গড়ে তোলা হবে বলে জানান মন্ত্রী।
এদিন জঙ্গল ঘুরে বনমন্ত্রী বলেন, “যে সমস্ত ক্যাম্প অফিস জেটিঘাট এবং ফেন্সিংয়ের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বুলবুল ঝড়ের প্রভাবে, সেগুলো খুব শীঘ্রই মেরামতি করে নতুনভাবে গড়ে তোলা হবে। আর পর্যটকদের আকর্ষণ করতে নতুন চিড়িয়াখানার কাজ ও দ্রুত শুরু হবে।” উল্লেখ্য, বুলবুল ঝড়ে সুন্দরবনের বনদপ্তরের এবং ব্যাঘ্র প্রকল্পের বিভিন্ন এলাকা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঝড়ে উড়ে যায় বনদপ্তরের বহু ক্যাম্প অফিস।বিশেষ করে নেতিধোপানি বুড়িরডাবরি-সহ বিভিন্ন অফিসকে বন্ধ রাখা হয়। সেইসব এলাকাগুলি চলছে মেরামতের কাজ।
এদিন বনমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিনহা, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্পের ফিল্ড ডিরেক্টর সুধীর চন্দ্র দাস, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডি এফ ও শন্তসা জিয়ার ও ব্যাঘ্র প্রকল্পের অন্যান্য আধিকারিকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.