অভ্রবরণ চট্টোপাধ্যায়, শিলিগুড়ি: গন্তব্য ছিল সিকিম। কিন্তু নিউজলপাইগুড়ি পৌঁছে জানতে পারে সেখানে যাওয়া হবে না। তাই সিকিমের বদলে একদল পর্যটক চলে গেলেন ডুয়ার্স। অন্যান্য দিনের মতই বুধবারও পর্যটকরা আসেন শহরে। তাঁদের মধ্যে অনেকেরই সিকিম যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হড়পাবানের জেরে বাংলা-সিকিম যোগাযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় তাঁরা ডুয়ার্সে চলে যান। অনেকে আবার বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। তবে এই ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ফোন করে পরিস্থিতির খবর নিচ্ছেন। সকলের মধ্যেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্ক এর সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, “এখনও বুকিং বাতিল শুরু হয়নি। তবে যা অবস্থা তাতে বেশ কিছু বুকিং বাতিল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।” প্রসঙ্গত, পুজোর আগে রাস্তা ঠিক না হলে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়ে যাবে পর্যটনে।
কিছুদিন পরেই পুজোর (Durga Puja) মরশুম শুরু হবে। পাহাড়ে হোটেল থেকে হোম স্টে সব বুকিং হয়ে রয়েছে। কিন্তু তার আগেই এত বড় বিপর্যয়ের জেরে আতঙ্কিত পর্যটকরা। যেভাবে তিস্তা গিলে ফেলেছে প্রতিটি পথঘাট তাতে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে মাসখানেকের বেশি লাগবে। তাই পর্যটন ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। তাঁরা বিশাল বড় ক্ষতির মুখে। যে সকল পর্যটক সিকিমের জন্য বুকিং করেছে তাঁরা যাতে তা বাতিল না করে তার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজে বেড়াচ্ছেন ট্যুর অপারেটররা। কীভাবে পর্যটকদের বুকিং বাতিল আটকানো যায় তাই চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন।
শুধু তাই নয় সিকিমে আটকে থাকা পর্যটকদের সুরক্ষিত অবস্থায় কীভাবে নামিয়ে আনা যায় সে বিষয়ে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন তারা। তবে বিভিন্ন ট্যুর অপারেটর বুকিং বাতিল হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বড় ক্ষতির মুখে পড়তে চলেছে বলেও জানিয়েছেন। এদিকে তরাই চালক সংগঠনের সম্পাদক মেহবুব খান বলেন, “পুজোর মরশুমে আমাদের ভালোই আয় হয়। কিন্তু সিকিমের যা অবস্থা তাতে বেশি পর্যটক আর আসবে বলে মনে হয়না। স্বস্তির বিষয় যে দার্জিলিং এর রাস্তা এখনও খোলা আছে। নইলে আমাদের পথে বসতে হত। তবে সিকিম বন্ধ থাকায় বড় ক্ষতি হয়ে গেল।”
দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পর্যটক সিকিমে ঘুরতে যাওয়ার জন্য বুকিং করে রেখেছিলেন। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগ পর্যটক ফোন করে পরিস্থিতি জানতে চেয়েছে। অনেকে আবার বলেও দিয়েছে বৃহস্পতিবার অবধি দেখে বুকিং নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবে। এদের বুকিং বাতিল রুখতেই বিকল্প ব্যবস্থা খুঁজে বেড়াচ্ছেন ট্যুর অপারেটররা। এবিষয়ে হিমালয়ান হসপিটালিটি ট্যুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যাল বলেন, “পর্যটকরা ফোন করছে বারবার। আমরা তাদের বলেছি আতঙ্কিত না হতে। পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে। তবে আমরা সকলকেই বলেছি, সিকিম না যেতে পারলে আমরা তাঁদের দার্জিলিং কিংবা ডুয়ার্সে ঘুরিয়ে দেব। যদিও যেভাবে এই খবর প্রচার হয়েছে তাতে কিছু বুকিং বাতিল হবে বলে আমরা নিশ্চিত।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.