সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: রূপ বদলায় মুরগুমার। ছয় ঋতুতে ছয় রূপ। তাই তো মুরগুমা ‘বহুরূপী’! বর্ষা শেষে মুরগুমা থেকে যেন চোখ ফেরানো যায় না। পুরুলিয়ার ঝালদা দুই ব্লকের এই পর্যটন কেন্দ্রতে সবসময় ভিড় থাকে পর্যটকদের। তবে এই পুজোর মুখে বর্ষা বিদায় নেওয়ার পর মুরগুমা যেন সেজেগুজে আরও সুন্দরী।
জলাধার তো রয়েছে। তাছাড়া কোটশিলা থানার এই জনপদকে ঘিরে চারপাশ জুড়ে রয়েছে ঝরনা। জঙ্গলঘেরা পথে হাঁটলেই পাহাড় থেকে নেমে আসা জল ঝরনার রূপ নিয়ে নিয়েছে। যা শুধু বর্ষা বিদায় নেওয়ার এক মাসের মধ্যেই দেখা মেলা। কত যে তাদের নাম।
এরকমই জানা-অজানা কামসুতিয়া, মাছকান্দা, পিটিতিরি, গিরগিরি, পাড়াপানি যেন মুরগুমার রূপকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। তাই পুজোয় অফবিট ট্যুরিজিমের অন্যতম ঠিকানা এই মুরগুমা।
যাকে ঘিরে রাজ্যের পর্যটন দপ্তরের একগুচ্ছ পরিকল্পনা রয়েছে। এখানে সরকারি পর্যটক আবাস তৈরিরও কাজ চলছে। তৈরি হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই এখানের পর্যটনে ব্যাপক হারে বেসরকারি বিনিয়োগ আসছে। ফলে অযোধ্যা পাহাড়তলির মুরগুমাতে থাকার কোন সমস্যা নেই। ঝাঁ চকচকে রিসর্ট না থাকলেও একেবারে মাটির গন্ধ মেশানো কটেজ আছে। যা সহজেই চোখ টানে।
জঙ্গলের মধ্যে একেবারে ইকো ফ্রেন্ডলি। রয়েছে তাঁবু। হয় ক্যাম্প ফায়ারও। আর সেই সময় এক আলাদা রকম খানাপিনা চলে। তন্দুর-কাবাবের রকমারি আয়োজন। রাত যত বাড়ে মুরগমার মাদকতায় যেন আরও বেশি আচ্ছন্ন হন পর্যটকরা। পূর্ণিমার রাতে ঝরনায় ঘিরে থাকা মুরগুমা আরও মোহময়ী।
মুরগুমার পর্যটন ব্যবসায়ী জয়িতা সিনহা বলেন, “এখন মুরগুমা পুরোপুরি পর্যটন কেন্দ্র। আর অযোধ্যা পাহাড়ের সাইট সিয়িং শুধু নয়। সারাবছরই প্রায় ভিড় থাকে। পুজোতে আমাদের কটেজ প্রায় হাউসফুল। সামান্য কিছু খালি আছে। আসলে এই মুরগুমার সৌন্দর্যই আলাদা। ছটা ঋতুতে ছয় রূপ।” হাওড়া থেকে বেড়াতে আসা পৌলমী দত্ত, বারাকপুরের বিষ্ণু বণিক বলেন, “পুরুলিয়াতে যে এতো সুন্দর জায়গা আছে মুরগমা না আসলে জানতাম না। রাজ্যের অফবিট পর্যটনের অন্যতম ঠিকানা।”
মুরগুমায় রাত কাটানোর জন্য সেভাবে গাঁটের কড়ি খরচ করতে হবে না। ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যেই কটেজগুলিতে খুব ভালো ঘর পাওয়া যাবে। মাত্র ৫০০ টাকার মধ্যেই ঘরোয়া বাঙালি ডিশ মিলবে। একেবারে কবজি ডুবিয়ে খাওয়াদাওয়া সারতে পারবেন। ফলে পুজোর ডেস্টিনেশনে মন্দ নয় মুরগুমা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.