সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: কাঠের ঘরের জানলা খুললেই চোখে পড়ে নীল রঙা কাঁসাইয়ের স্রোত, সোনাঝুরি জঙ্গল, চারদিকে রঙবাহারি প্রজাপতি। ঘরের ওই জানালা দীর্ঘক্ষণ খোলা রাখলে নানা রঙের সমাহারে সেসব প্রজাপতি ঘরেও ঢুকে যেতে পারে। নদীর চরে অস্থায়ী তাঁবু ফেলে গড়াগড়ি খাওয়া যায় ওই বালুচরে। সঙ্গীর হাত ধরে কানে কানে বলে দিতে পারেন অনেক না বলা কথা। এই রোমান্টিক আবহেও পেটপুজোও কিন্তু মাস্ট। নইলে আনন্দেই যে মাটি! তাই লোকাল ডিশ, শালপাতা চিকেন জিভে জল আনবেই! পুজোয় শহরের ভিড় এড়াতে চাইলে আপনার ডেস্টিনেশন হতেই পারে দোলাডাঙা। উৎসবের অন্য আমেজ এখানে।
পুরুলিয়ার মানবাজার থানার দোলাডাঙা। মানবাজার সদর থেকে মাত্র ১৬ কিমি। হারিয়ে যাওয়ার নয়া ঠিকানা। আসলে এখানে যেন প্রকৃতি কথা কয়! তাই পুজোর ছুটিতে এই প্রকৃতির কোলে অনায়াসে কাটিয়ে দেওয়া যায় একটা দিন। কিন্তু এবার অতিবৃষ্টিতে দোলাডাঙার দুটি ক্যাম্প প্রায় হাঁটু পর্যন্ত জল থাকায় এখন ঝাঁপ বন্ধ। যা সাম্প্রতিককালে হয়নি। তাই পুজোয়(Durga Puja Travel) যাঁরা আগে থেকে এখানে আসার প্ল্যান করে রেখেছেন, তাঁরা খানিকটা হতাশ। তবে দক্ষিণ পুরুলিয়ার সাইট সিয়িং হিসাবে ঘুরে দেখতেই পারেন এই জায়গা।
দোলাডাঙা যেন প্রকৃতির বাসা! এখানে দুটি ক্যাম্প হলো দোলাডাঙ্গা ব্যাকপ্যাকার্স ও ব্যাকপ্যাকিং মঙ্ক। এই ব্যাগপ্যাকিং মঙ্কে রয়েছে দুটো কাঠের ঘর, ছটি টেন্ট। একটি কাঠের ঘরে ৩ জন থাকা যায়। প্রতিজন পিছু থাকা-খাওয়া ২ হাজার টাকা। লাঞ্চ, স্ন্যাকস, ডিনার, ব্রেকফাস্ট। টেন্ট প্রতি জন পিছু খাবার সমেত দেড় হাজার। এই ক্যাম্পের অপারেশনাল হেড শঙ্খদীপ দত্ত বলেন, “এবার ভীষণ বর্ষা হওয়ায় আমরা ক্যাম্প খুলতে পারিনি। তবে পুজোর ছুটিতেই চালু করব। পর্যটকরা ক্যাম্পে রাত কাটানোর সুযোগ থেকে এখন বঞ্চিত হলেও দক্ষিণ পুরুলিয়া ঘুরে দেখতেই পারেন।”
এখানে রঙবাহারি প্রজাপতির কথা মাথায় রেখে বনদপ্তরকে সঙ্গে নিয়ে প্রজাপতি উদ্যান গড়তে চেয়েছিল প্রশাসন। পর্যটন দপ্তরের তরফে পর্যটক আবাসের অনুমোদন হয়ে কাজ শুরু হলেও জমি জটিলতায় ওই প্রকল্প থমকে যায়। তবে দক্ষিণ পুরুলিয়ার পর্যটনে দোলাডাঙা একটা আলাদা জায়গা করে নিয়েছে। দোলাডাঙার ওপারেই যে মুকুটমণিপুর। ডাকছে কাঁসাইতট…।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.