সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাজের চাপে সারাবছরই হাসফাঁস দশা৷ তাই পুজোর ছুটি মানেই বাঙালির পায়ের তলায় সরষে৷ কিন্তু বর্তমান যা পরিস্থিতি, তাতে পুজোয় অন্তত জম্মু-কাশ্মীর যাওয়ার কথা ভাবা যাচ্ছে না৷ তবে বছর শেষে পাড়ি দিতেই পারেন ভূস্বর্গে৷ চেনা ডাল লেক, গুলমার্গ এখন ক্লিশে৷ তাই আপনার গন্তব্য হতেই পারে কাশ্মীরের অফবিট কোনও জায়গা৷ রইল সেই ঠিকানার খোঁজ৷
ইয়ুসমার্গ
চতুর্দিকে পাইনের সারি৷ চোখ গেলেই দেখা যাবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাহাড়৷ মাঝে মাঝে দেখা যাবে ঘাড় নিচু করে ঘাস খাচ্ছে ঘোড়া৷ ইট-কাঠ-কংক্রিটের জগৎ থেকে দিনকয়েক অক্সিজেনের খোঁজে পাড়ি জমাতেই পারেন ইয়ুসমার্গে৷ সবুজের সন্ধানে শ্রীনগর থেকে মাত্র ৪৫ কিলোমিটার এই জায়গাটি আপনাকে দিতে পারে স্বস্তি৷ ঘোড়ার পিঠে সওয়ার হয়ে পাইনের জঙ্গলে বেশ কিছুটা সময় কাটাতেই পারেন৷ ক্লান্তি মেটাতে জঙ্গলের শেষে পাহাড়ের কোলে নীলনাগ লেকে সেরে নিতে পারেন স্নান৷
কোথায় থাকবেন:
ইয়ুসমার্গে থাকার জন্য সরকারি গেস্টহাউস রয়েছে৷ সেখানেই রয়েছে খাবারের বন্দোবস্তও৷ দু’জনের প্রতি রাতে থাকার জন্য খরচ পড়বে মাত্র ৭৫০টাকা৷ খাওয়া খরচ যদিও আলাদা৷
আরু উপত্যকা
ভিড়ভাট্টা এড়িয়ে দেবদারু গাছ এবং পাইনের জঙ্গলে হারিয়ে যেতে চান? নদীর পাশে বসে প্রিয়জনের কাঁধে মাথা রেখে ব্যক্তিগত সময় উপভোগ করতে চান? তবে আপনার জন্য আদর্শ আরু উপত্যকা৷ জম্মু-কাশ্মীরের অনন্তনাগ জেলার এই ছোট্ট পাহাড়ি শহর আপনার ছুটির সময়ের মুহূর্তগুলো স্মৃতিমেদুর করে তোলার জন্য আদর্শ৷ পাহাড়, নদী আপনাকে ক্লান্ত করে তুলতে ভিড় জমাতে পারেন আরু অভয়ারণ্যে৷ বহুদূর বিস্তৃত ওই অভয়ারণ্যে দেখা মিলতে পারে তুষার চিতা এবং বিভিন্ন ধরনের হরিণের৷
কোথায় থাকবেন:
আরু উপত্যকা একাধিক ছোটবড় হোটেল এবং রিসর্ট রয়েছে৷ আপনার পকেট বুঝে ওই রিসর্ট এবং হোটেলগুলিতে আশ্রয় নিতেই পারেন৷
ব্রেং
গাছ, পাহাড় এবং নদীর মাঝেই না হয় কাটুক আপনার ছুটির দিনগুলি৷ তাই এবার আপনার গন্তব্য হোক দক্ষিণ পূর্ব শ্রীনগর থেকে ৮৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত ব্রেং৷ নীল আকাশের মাঝে ভেসে বেড়াচ্ছে সাদা মেঘ, পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে নদী৷ সব মিলিয়ে এই জায়গার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই৷ ব্রেং থেকে ঠিক আধঘণ্টা গেলেই পৌঁছে যাবেন ডাকসুমে৷ সেখানে দেখা মিলবে জলপ্রপাত এবং পাইনের সারি৷ নদীর কুলকুল শব্দ এবং পাখির কলকাকলি আপনার প্রাত্যহিক ক্লান্তি দূর করবেই৷
কোথায় থাকবেন:
প্রতিদিন থাকার জন্য মাত্র ২০০০টাকা খরচেই এখানে মিলতে পারে সরকারি গেস্ট হাউস৷
গুরেজ
ভাবুন তো গোটা রাস্তা সাদা বরফে ঢাকা আর চতুর্দিকে পাহাড়ের কোল ঘেঁষা পাইন গাছ৷ তার মাঝখান দিয়ে দুরন্ত গতিতে ছুটে চলেছে গাড়ি৷ জানলা দিকে চোখ পড়লেই যেন মন ভাল হয়ে যায়, তাই না? এমন দৃশ্য চাক্ষুষ করতে চাইলে ভিড় জমান গুরেজে৷ শ্রীনগর থেকে ১৩০ কিলোমিটার দূরের এই জায়গায় দূষণের বালাই নেই৷ পরিবর্তে বিশুদ্ধ অক্সিজেনই উপহার হিসাবে মিলবে৷ নদী-পাহাড়ে ঘেরা এই জায়গায় পর্যটকেরা সাধারণত কমই ভিড় জমান৷ তাই এক্কেবারে নিরিবিলিতে আপনার ছুটির দিনগুলি কাটানোর জন্য গুরেজের কোনও বিকল্প হয় না৷
কোথায় থাকবেন:
গুরেজে থাকার জন্য নানা খরচে সরকারি এবং বেসরকারি গেস্ট হাউস রয়েছে৷ আপনার বাজেট অনুযায়ী যেকোনও ঘরে থাকতেই পারেন৷
আলপাথের জলপ্রপাত
আপনি কি অ্যাডভেঞ্চার পছন্দ করেন? তবে এই ছুটিতে আপনাকে আলপাথের জলপ্রপাতে যেতেই হবে৷ ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৭ হাজার ৫০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত আলপাথের জলপ্রপাত৷ বছরে প্রায় ন’মাসই এখানের তাপমাত্রা থাকে হিমাঙ্কের নিচে৷ পাহাড়ে চড়ার ইচ্ছা থাকলে ট্রেকও করতে পারেন আপনি৷
কোথায় থাকবেন:
এখানে থাকা-খাওয়ার খরচ তুলনামূলক একটু বেশি৷ প্রতি দিন থাকা এবং খাওয়ার জন্য মাথাপিছু খরচ পড়বে প্রায় ৬০০০টাকা৷
ঠিকানা তো পেয়েই গেলেন৷ তবে আর দেরি কীসের? তার চেয়ে বরং আজই ট্রেনের টিকিট বুক করুন৷ ডিসেম্বরের ছুটিতে প্রিয়জনদের সঙ্গে পরিবেশের সংস্পর্শে না হয় কাটুক কিছু সুন্দর মুহূর্ত৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.