বেড়ানোর নতুন ঠিকানা পাত্রাতু। ফাইল চিত্র।
২৫ জানুয়ারি ন্যাশনাল ট্যুরিজম ডে। দেশের অর্থনীতিকতে চাঙ্গা করতে ট্যুরিজম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষকে ট্যুরিজমের প্রতি আকৃষ্ট করতেই এই দিবস উদযাপন মোদি সরকারের। ন্যাশনাল ট্যুরিজম ডে উপলক্ষ্যে ঘুরতে যাওয়ার সন্ধান সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে।
পারমিতা পাল: সিল্করুটের মতো প্যাঁচানো রাস্তা। পথের দুধারে চোখ জুড়ানো সবুজ। বিরাট জলাধার। ‘চেরি অন দ্য টপ’ নির্জনতা আর দারুণ দারুণ সব ওয়াটার স্পোর্টস। ভাবছেন তো এমন বেড়ানোর স্বাদ পেতে হলে পকেটে মোটা টাকা আর বড় ছুটির দরকার? না, এসব অভিজ্ঞতা চেটেপুটে উপভোগ করতে বড় ছুটিরও প্রয়োজন নেই। দরকার নেই প্রচুর খরচেরও। হাতে দিন তিনেক সময় থাকলেই অনায়াসে ঘুরে আসতে পারেন পাত্রাতু ভ্যালি থেকে। কোথায় এই পাত্রাতু ভ্যালি?
বাঙালির পায়ের তলায় সর্ষে। তবে তাদের কাছে পাত্রাতুর নামটা এখনও ততটা পরিচিত নয়। পাশের রাজ্য ঝাড়খণ্ডের রামগড় জেলার ছোট্ট উপত্যকা পাত্রাতু। রাঁচি থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরের এই এলাকা ওয়াটার স্পোর্টসের জন্য জনপ্রিয়। গোটা শীতকালজুড়েই এখানে ভিড় জমান স্থানীয় পর্যটকরা। কী রয়েছে সেখানে?
শুধু ওয়াটার স্পোর্টস নয়, পাত্রাতু ভ্যালির মূল আকর্ষণ সেখানকার পথ। দুধার সবুজের মোরাম আর মাখনের মতো সর্পিল রাস্তা, বাইক বা গাড়ি নিয়ে যাঁরা বেড়াতে যেতে ভালোবাসেন তাঁদের কাছে স্বর্গরাজ্য। ট্রেনে চেপে রাঁচি পৌঁছে সেখান থেকে চারচাকা বা বাইক ভাড়া করে চলে যেতে পারেন পাত্রাতু। সময় লাগবে ঘণ্টা দেড়েক। খরচ হতে পারে দেড় থেকে ২ হাজার টাকা। উপত্যকা দিয়ে ওঠার সময় ভিউ পয়েন্টে দাঁড়িয়ে ছবি তুলতে ভুলবেন না। সেখানে দাঁড়িয়ে চারদিক দেখে মনে হতেই পারে, ‘রাস্তে খুবসুরত হ্যায় মঞ্জিলও সে ভি’। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, ভিউ পয়েন্টে গাড়ি দাঁড় করালেই দিতে হবে পার্কিং চার্জ। খরচ খুব বেশি নয়, ২০ টাকা থেকে ১০০ টাকার মধ্যে।
এর পর গাড়ি চালিয়ে পৌঁছে যান লেক ভিউ রিসর্ট। নলকারি নদীর উপর তৈরি হয়েছে পাত্রাতু জলাধার। আর সেই জলাধারকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে পাত্রাতুর পর্যটন ক্ষেত্র। লেক ভিউ রিসর্টের মধ্যেই রয়েছে ঝাড়খণ্ড টুরিজম ডেভলপমেন্ট কর্পোরেশনের দুটি হোটেল। পর্যটন বিহার ও সরোবর বিহার। সেখানে থাকতে হলে আগেভাগে JTDC-র ওয়েবসাইট বা অফিস থেকে বুকিং করতে হবে। প্রতি রাতের জন্য খরচ হতে পারে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। খাবার খরচ আলাদা। কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে রয়েছে তাদের অফিস। সেখানে না থাকলে এই রিসর্টে শুধু ঘুরতে হলে আলাদা করে টিকিট কাটতে হবে। ভিতরে রয়েছে নানা ধরনের ওয়াটার স্পোর্টসের সুযোগ।
রয়েছে JTDC-র কাউন্টার। সেখান থেকে জেট স্কি, স্পিড বোট, হাই স্পিড বোট, ক্রুজ, পনটুনের টিকিট মেলে। রয়েছে কায়াকিং, প্যাডেল বোটিং, ওয়াটার সাইকিলিংয়ের সুযোগও। কেউ চাইলে বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য সাজানো গোছানো বোট ভাড়া নিতে পারেন। খরচ পড়বে ১২০০-১৮০০ টাকা। টিকিট হয় দুধরনের। একধরনের টিকিটে বোট বা ক্রুজে চেটে ওপারের সাজানো গোছানো দ্বীপ ছুঁয়ে ফিরে আসতে পারেন। আবার একটি বেশি টাকার টিকিট কেটে আধঘণ্টা সেখানে সময় কাটিয়ে আসতে পারেন। খরচও খুব বেশি নয়। ওপারের দ্বীপে রয়েছে দারুণ রিসর্ট। সেখানে প্রিয়জনকে নিয়ে কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারেন। সন্ধেবেলা রিসর্টের লন রেস্তরাঁয় বসে সময় কাটিয়ে দিতে পারেন। পর দিন সকালে ঘুরে আসতে পারেন পালানি ফলস থেকে। তবে বর্ষাকাল ছাড়া এই জলপ্রপাতের রূপ মন ভোলাতে পারবে না। তবে নির্জনে প্রিয়জন কিংবা নিজের সঙ্গে সময় কাটাতে ঘুরে আসতে পারেন ঝাড়খণ্ডের পাত্রাতু থেকে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.