সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ধূসর দেহ। বুকের উপর ভর দিয়ে চলে। জলে-ডাঙায় সমান বিচরণ। ঘোলাটে চোখেও শিকারের লক্ষ্যে অবিচল। চুপিসাড়ে গিয়ে একবার তীক্ষ্ণ দাঁত বসিয়ে দিলে আর রক্ষে নেই। বিশ্বের হিংস্র প্রাণীদের তালিকাতেই পড়ে কুমির। তবে মাদ্রাজের ক্রোকোডাইল ব্যাংকে সযত্নে লালিত-পালিত হয় প্রকৃতির এই হিংস্র সম্পদ। শুধু কুমির নয় গোসাপ, সাপ, ইগুয়ানা, কোমোডো ড্রাগন, গিরগিটিও থাকে এখানকার পার্কে। ৮.৮ একর জমির ওপর ২ হাজার সরীসৃপের এই ঘর আজ বিপন্ন। বন্য প্রাণীগুলির অস্তিত্ব সংকটে।
স্বাভাবিক সময় দর্শকদের ভিড় থাকে ভারতবর্ষের সবচেয়ে বড় এই ক্রোকোডাইল পার্কে। টিকিটের মূল্যে সরীসৃপদের দর্শন পাওয়া যায়। তা থেকে প্রাণীদের ভরনপোষণ চলে। পাশাপাশি চলে গবেষণার কাজ। সরীসৃপদের সংরক্ষণ করে তাদের পরিকল্পিত প্রজননের মাধ্যমে সংখ্যা বৃদ্ধি করে প্রকৃতির মাঝে ফিরিয়ে দেওয়ার কাজও হয়। সবই এখন বন্ধ হতে বসেছে। কারণ করোনা। করোনা সংকটের আবহে দর্শকদের আসা বন্ধ। এমন অবস্থায় আর মাত্র মাস চারেক টেনেটুনে সরীসৃপদের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা যেতে পারে। দেওয়া যেতে পারে কর্মীদের পারিশ্রমিক। তারপর ভারতবর্ষের বৃহত্তম ক্রোকোডাইল পার্কের কী হবে? সেই প্রশ্নের উত্তর এখনও পর্যন্ত কারও কাছে নেই।
ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, মাদ্রাজ ক্রোকোডাইল ব্যাংকে বছরে অন্তত ৫০ লক্ষ টিকিট বিক্রি হয়। যার মধ্যে শুধু মাত্র গরমের সময় আসেন ২৫ লক্ষ দর্শক। যা থেকে আয় হয় প্রায় দেড় কোটি টাকা। করোনার জেরে গত ১৬ মার্চ থেকে পার্কে পর্যটকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে পার্ক খোলার আশাও দেখছেন না কর্মীরা। এমন অবস্থাতেও তাঁরা পার্কের প্রায় ১৭টি প্রজাতির কুমিরের দেখভাল করছেন। খেয়াল রাখছেন গোসাপ, সাপ, ইগুয়ানা, কোমোডো ড্রাগন, গিরগিটিদের। তাদের নিয়মিত খাবারের জোগান দিয়ে চলেছেন। তিন কিংবা চারমাস বাদে এই প্রাণীগুলির কী হবে? তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন চেন্নাই থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত দেশের বৃহত্তম ক্রোকোডাইল পার্কের আধিকারিকরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.