সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: জঙ্গলমহলের পর্যটনে জোর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee)। রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই পর্যটনে জোর দিচ্ছে সরকার। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার কর্মিসভা থেকে ধর্মীয় ট্যুরিজম সার্কিট গড়ার ঘোষণা করলেন তিনি। একইসঙ্গে ধর্মীয় স্থানগুলিকে সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। জঙ্গলমহলের এই জেলাজুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে হিন্দু এবং জৈন ধর্মের একাধিক স্থাপত্য। সেগুলির সংস্কার করে পর্যটন সার্কিট গড়ার কথা জানিয়েছেন মমতা। নির্দেশ দিয়েছেন হোম স্টের সংখ্যা বৃদ্ধিরও।
২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই পর্যটনে জোর দেয় তৃণমূল (TMC) সরকার। পর্যটনকে বেশ কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নেয় তারা। তাদের মধ্যে অন্যতম ধর্মীয় পর্যটন। গোটা পুরুলিয়া জুড়ে হিন্দু এবং জৈন পুরাকীর্তি ছড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু সার্কিট গড়ার কাজ সেই অর্থে এগোয়নি। এবার কর্মিসভা থেকে নতুন করে পর্যটন সার্কিট গড়ার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। উল্লেখ্য, সোমবারের প্রশাসনিক বৈঠক থেকে পুঞ্চার পাকবিড়রার সংস্কারের ২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিলেন তিনি। এদিনের সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, হোম স্টে বাড়াতে হবে। একইসঙ্গে তিনি জানান, এখানে আমরা ধর্মীয় সার্কিট গড়ব। প্রচুর হিন্দু এবং জৈনদের মন্দির আছে। সেগুলির সংস্কার করা হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৩-১৪ সালে পাকবিড়রায় সৌন্দর্যায়নের কাজ শুরু হয়। তৈরি হয় সংগ্রহশালাও। কিন্তু তার পরেও বেশকিছু জৈন মূর্তি খোলা আকাশের নিচে পড়ে রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ৭ ফুট লম্বা শীতলনাথের মূর্তি। আবার রঘুনাথপুর ২ ব্লকে দামোদরের তীরে রয়েছে তেলকূপি এলাকা। একসময় সেখানে এসেছিলেন চিনা পর্যটক হিউয়েন সাঙ। রয়েছে জৈন ধর্মের দেউল। কিন্তু বর্ষা এলেই দামোদরে জলের নিচে ডুবে যায় এই দেউলগুলি। এছাড়া আড়শার দেউলঘাটারও সংস্কার হয়নি। সংস্কার হয়নি বান্দা এলাকারও। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর দ্রুত এই এলাকার সংংস্কার শুরুর আশায় বুক বাঁধছেন এলাকাবাসী।
শুধু পর্যটন ক্ষেত্র নয় রঘুনাথপুরের ৭২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশে সেখানে তৈরি হচ্ছে জঙ্গলসুন্দরী কর্মনগরী। এছাড়া পুরুলিয়ায় ফিল্ম সিটি, বিমানবন্দরও তৈরি হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে আর কয়েক বছরের মধ্যে পিছিয়ে পড়া জেলার তকমা ঘুচিয়ে নতুন রূপে আত্মপ্রকাশ করবে জঙ্গলমহলের এই জেলা পুরুলিয়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.