Advertisement
Advertisement
Gangtok

গ্যাংটকে গন্ডগোল! মর্জিমতো গাড়িভাড়া আদায়, ক্ষুব্ধ পর্যটকরা

পর্যটনের নামে নৈরাজ্য!

Car fare sky rocketing in Gangtok, tourists offended
Published by: Paramita Paul
  • Posted:May 29, 2024 2:22 pm
  • Updated:May 29, 2024 2:22 pm

বিশ্বজ্যোতি ভট্টাচার্য, শিলিগুড়ি: পর্যটনের নামে নৈরাজ্য! অভিযোগ গড়িয়েছে কেন্দ্র পর্যন্ত এবং তার জেরে সিকিম সরকারের বৈঠক এবং গাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণে নজরদারির দাবির পরও পরিস্থিতি হাতের বাইরে। শুধু তাই নয়, একরকম চুক্তির পর ভ্রমণ শুরুর পরই পর্যটকদের কাছে থেকে বাড়তি ভাড়া দাবি করা হচ্ছে। চলছে জুলুম। বাড়তি টাকা না দিলে পর্যটকদের নামিয়ে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সবচেয়ে বড় কথা, এই ধরনের জুলুমের শিকার হয়েছেন গত ২৭ এপ্রিল থেকে ৫ মে সিকিম ভ্রমণে আসা কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের প্রাক্তন কমিশনার কেপি বাসনিক। এতটাই তিক্ত অভিজ্ঞতা হয় তাঁর যে, কেন্দ্রীয় সরকারের গ্রিভান্স সেলে বিষয়টি জানান তিনি। অভিযোগে তিনি বলেন, সিকিমে পর্যটনের পরিকাঠামো যেমনই হোক না কেন, সেখানে বেলাগাম গাড়িভাড়া নিচ্ছে চালক ও ভ্রমণ সংস্থাগুলি। বহু পর্যটক হয়রানির শিকার হচ্ছেন। তার পরই কেন্দ্রের চাপে সিকিম সরকার বৈঠক করেছিল গাড়ি ভাড়ায় রাশ টানতে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। কয়েকদিন আগে বৈঠকের পর সিকিমের পর্যটন দপ্তরের প্রধান সচিব কেপি বাসনিক বেশি ভাড়া নিলে সেই চালক বা ভ্রমণ সংস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে বলে আশ্বাস দিলেও বাস্তব অভিজ্ঞতা ভিন্ন। গাড়ি চালক ও ভ্রমণ সংস্থাগুলির জুলুমে অতিষ্ঠ মানুষ। এই ক্ষেত্রে সিকিম পুলিশের কোনও সহায়তা মিলছে না।

কলকাতা ও দুই ২৪ পরগনা ছাড়া বঙ্গে ভোট শেষ। ফলে পাহাড়ে বাঁধ ভাঙা ভিড়। এই অবস্থায় আগাম বুকিং না করে বেড়াতে গিয়ে হোটেল না মেলায় রাস্তায় বসে সময় কাটানোর তিক্ত অভিজ্ঞতা আগে ছিলই। এবার পর্যটকদের বাঁধভাঙা ভিড়ের সুযোগ নিয়ে মর্জিমতো ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠল সিকিমের গাড়ি চালকদের একাংশের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দু-এক হাজার টাকা নয়, রীতিমতো লুঠ চলছে। ওই ঘটনাকে ঘিরে পর্যটক মহলে ক্ষোভ বাড়ছে। তাদের অনেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। পর্যটন নির্ভর সিকিম রাজ্যের পক্ষে যে এমন অভিযোগ মোটেও সুখকর নয়, বুঝে সরব হয়েছে বিভিন্ন সংস্থা।

Advertisement

[আরও পড়ুন: ‘অল আইজ অন রাফা’, সোশাল মিডিয়ায় হঠাৎ কেন ট্রেন্ডিং এমন বাক্য?]

এতদিন পর্যটকদের থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ ছিল পূর্ব সিকিমের নাথু-লা, ছাঙ্গু রুটে। সেখানে বেড়াতে গিয়ে অনেকে গাড়ি ভাড়া গুণতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন। অবশেষে সিকিম সরকারের পর্যটন ও বেসামরিক বিমান চলাচল দপ্তর নড়েচড়ে বসায় সমস্যা মিটেছে। নাথু-লা রুটে দৈনিক গাড়ির সংখ্যা ও ভাড়া বেঁধে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে সরকারি নির্দেশ অমান্য করে পর্যটকদের কাছে বাড়তি ভাড়া দাবি করা হলে গাড়ি চালকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঠিক হয়েছে ৩০ জুন পর্যন্ত গ্যাংটক থেকে নাথু-লা রুটে পর্যটকদের নিয়ে চলাচলের জন্য আটশো গাড়ি পার্মিট বা অনুমতি পাবে। পর্যটকরা বিলাসবহুল গাড়ি নিলে ভাড়া দিতে হবে ৭ হাজার টাকা এবং সাধারণ গাড়ির জন্য সাড়ে ৬ হাজার টাকা।

এখানেই প্রশ্ন উঠেছে, এই ব্যবস্থা শুধুমাত্র পূর্ব সিকিমের জন্য কেন? বেশি পর্যটক উত্তর এবং পশ্চিম সিকিমে বেড়াতে যান। সেখানে কেন গাড়ির সংখ্যা ও ভাড়া বেঁধে দেওয়া হবে না? প্রতারণার হাত থেকে পর্যটকদের বাঁচাতে সমগ্র সিকিমে একই ব্যবস্থা নয় কেন? এমন প্রশ্ন কেন উঠবে না? প্রতারণা বলতে মঙ্গলবার বাটানগরের বাসিন্দা সৌমিক মজুমদার জানান, “উত্তর সিকিমের লাচুং, জিরো পয়েন্টে বেড়াতে যাওয়ার জন্য ২৫ মে সপরিবারে গ্যাংটকে পৌঁছন। এমনিতে থিকথিকে ভিড়। আগাম বুকিং না থাকায় গাড়ি পাচ্ছিলেন না। অনেক খোঁজের পর একটি গাড়ি পেয়ে যান। কিন্তু লাচুংয়ে যাওয়ার ভাড়া শুনে মাথা ঘুরে যায়। চালক ১৫ হাজার টাকা চেয়ে বসে। একটাকাও কমাতে রাজি হয়নি।”

[আরও পড়ুন: রেমালের দাপট কাটতেই বঙ্গে গুমোট গরম, কবে মিলবে স্বস্তি?]

ওই পরিস্থিতি নিয়ে ইতিমধ্যে সরব হয়েছে সিকিমের কাঞ্চনজঙ্ঘা কনজারভেশন অ্যান্ড ইকো ট্যুরিজম সোসাইটি। সংস্থাটি মনে করছে, এই ট্রেন্ড চলতে থাকলে সিকিমের পর্যটন শিল্পের ক্ষতি হবে। সংস্থার তরফে প্রেমা ওয়াংচু শেরপা পর্যটকদের হয়রানি কমাতে পূর্ব সিকিমের মতো উত্তর এবং পশ্চিম সিকিমেও গাড়ি ভাড়া বেঁধে দেওয়ার দাবি তুলেছেন। সিকিম পর্যটন দপ্তরের উপদেষ্টা রাজ বসু বলেন, “ওই বিষয়ে সিকিমের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।’’

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement