রঞ্জন মহাপাত্র, কাঁথি: মন্দারমণি থেকে তাজপুর পর্যটন কেন্দ্রে আর ঘুরপথে পর্যটকদের বেড়াতে যেতে হবে না। তাজপুর মোহনায় তৈরি হওয়া ব্রিজ দিয়েই পর্যটকরা পায়ে হেঁটৈ কিংবা গাড়িতে করে সহজে পৌঁছে যেতে পারবেন তাজপুর। পাশাপাশি মেরিন ড্রাইভ ধরে শংকরপুর কিংবা সৈকত শহর দিঘায় পৌঁছে যেতে পারবেন পর্যটকরা।
দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের পরিকল্পনামতো দিঘা থেকে মন্দারমণি হয়ে কাঁথির শৌল্যা পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগেই। একসঙ্গে দিঘা, শংকরপুর, তাজপুর, মন্দারমণি এবং শৌল্যাকে যোগ করতে মেরিন ড্রাইভ তৈরির কাজ শুরু হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু তাজপুরের সঙ্গে মন্দারমণি সৈকতকে সংযোগ করতে প্রয়োজন ছিল একটি ব্রিজের। একইভাবে পুরুষোত্তমপুরের সঙ্গে শৌল্যাকে যোগ এবং দিঘার ন্যায়কালির সঙ্গে শংকরপুর পর্যটন কেন্দ্রের সংযুক্ত করতেও প্রয়োজন ছিল দু’টি ব্রিজের। মেরিন ড্রাইভ তৈরির কাজ অনেকটা এগিয়ে গেলেও ব্রিজ তৈরি না হওয়ায় রাস্তার কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছিল না। এবার মন্দারমণি-তাজপুর সমুদ্রের উপর প্রায় ৬০৮ মিটার দীর্ঘ ব্রিজ-সহ তিনটি ব্রিজের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
এই তিনটি ব্রিজের কাজ শেষ হলে পর্যটকরা গাড়ি নিয়ে কাঁথির শৌল্যা হয়ে সমুদ্র পাড়বরাবর মেরিন ড্রাইভ ধরে মন্দারমণি, তাজপুর, শংকরপুর হয়ে দিঘায় পৌঁছে যেতে পারবেন সহজে। ফলে যানজট সমস্যায় আর ভুগতে হবে না পর্যটকদের। দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা কাঁথির সাংসদ শিশির অধিকারী জানান, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিঘাকে আন্তর্জাতিক পর্যটন কেন্দ্রের রূপ দেওয়ার যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেগুলি আজ ধীরে ধীরে বাস্তবায়িত হতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই দিঘা নবরূপে সেজে উঠেছে।
মেরিন ড্রাইভ তৈরি হলে পর্যটকরা কাঁথি হয়ে সোজা সমুদ্র উপভোগ করতে করতে দিঘায় পৌঁছে যেতে পারবেন। ফলে পর্যটনশিল্পেরও ব্যাপ্তি ঘটবে। পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য সৈকত শহর দিঘায় পর্যটন হাব গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে দিঘা-শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদের। দিঘার ন্যায়কালি মন্দির লাগোয়া এলাকা সংস্কার করে লেজার শো, ড্যান্সিং ফোয়ারা বসিয়ে পর্যটন হাব গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ওড়িশা সীমানা লাগোয়া দত্তপুর থেকে পুরানো দিঘা পর্যন্ত শ্বেত পাথর দিয়ে পাড় বাঁধাই করা হয়েছে। সেইসঙ্গে শংকরপুর সমুদ্রপাড়ও একইভাবে বাঁধাই করা হয়েছে। পুরনো দিঘা থেকে মোহনা পর্যন্ত পাড় বাঁধাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। এদিকে তাজপুর, মন্দারমণি পর্যটন কেন্দ্রে বিশ্ব বাংলা পার্ক তৈরির কাজ চলছে জোরকদমে। সেইসঙ্গে নিউ দিঘার সমুদ্র পাড়ে শুরু হয়েছে বিশ্ব বাংলা উদ্যান তৈরির কাজ। পর্যটকদের জন্য পর্যটন হাব তৈরি হলে, দিঘায় বেড়াতে আসা পর্যটকরা আর ২-১দিন ঘুরেই ফিরে যেতে পারবেন না। হাতে কমপক্ষে ৪ দিন ছুটি নিয়ে আসতে হবে দিঘায়। কারণ কলকাতার ইকো পার্কের আদলেই লেজার শো দেখানো হবে দিঘার পর্যটন হাবে। সমুদ্রপাড়ে বসে লেজার শো প্রত্যক্ষ করার মজা যে অন্য কোথাও নেই! সেই সঙ্গে সঙ্গীত ও লেজার রশ্মির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নেচে উঠবে ফোয়ারাও।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.