পারমিতা পাল: একদিকে সবুজ পাহাড় তো অন্যদিকে ঘরের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে খরস্রোতা নদী। সকালে পাখির কিচিরমিচির তো রাতে নিস্তব্ধতার মাঝেই একটানা ঝিঁঝির ডাক। সুইমিং পুলে ডুবে ঘণ্টার পর ঘণ্টা উপভোগ করা যায় মেঘেদের আসা-যাওয়া। ইচ্ছে হলে দু-চার পা হেঁটে হারিয়ে যাওয়া যায় সবুজের আড়ালে। আর এসব পেতে বিদেশ বিভুঁইয়ে ছোটার প্রয়োজন নেই। পর্যটকদের জন্য উপহারের ডালি সাজিয়ে বসে রয়েছে দার্জিলিঙয়ের বিজনবাড়ি।
ছোট রঙ্গিত নদীর তিরে ছোট একটা গ্রাম বিজন বাড়ি। রয়েছে বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কিন্তু গ্রামের আসল আকর্ষণ এই রঙ্গিত। গ্রামের গা ঘেঁষে বয়ে গিয়েছে খরস্রোতা নদীটি। পাথরে পাথরে ধাক্কা খেয়ে খরস্রোতা হয়ে বয়ে চলেছে নদীটি। আর সেই নদীর ধারেই গড়ে উঠেছে ছোট ছোট হোম স্টে। ফলে ঘরের বারান্দায় বসে দেখা যাবে নদীর অবিরাম ছুটে চলা। রোদ-মেঘের লুকোচুরি দেখতে দেখতে ডুব দেওয়া যায় সুইমিং পুলে। পাহাড় ঘেরা গ্রামের মাঝে নীল জলে ডুব দিতে কিন্তু বেশ লাগে।
প্রাকৃতিক সুইমিং পুল নয়। রয়েছে একটি হোম স্টের মধ্যে। তবে টাকার বিনিময়ে ওই হোম স্টের সুইমিং পুল ব্যবহার করাই যায়।
আবার সময় কাটাতে পায়ে পায়ে হারিয়ে যাওয়া যায় নদীর বাঁকে। পাথুরে পথ ধরে খানিকটা হেঁটে গেলেই পড়ে চা-বাগান। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে গেলে রাস্তার ধারের ছোট চায়ের দোকানে বসে গরম চায়ে চুমুক দিতেই পারেন। আবার রাতের বেলা অনায়াসে নদীর ধারে বসে জমে যাবে ক্যাম্প ফায়ার। আর কিছুই ভাল না লাগলে হোম স্টের বারান্দায় বসে রাতের রঙ্গিতকে দেখতে মন্দ লাগবে না। আর খাওয়া-দাওয়া? রয়েছে তারও এলাহি আয়োজন।
সকালে ঘুম থেকে উঠেই চুমুক দিন দার্জিলিঙ চায়ে। প্রাতঃরাশে রয়েছে গরম-গরম লুচি, ঘুগনি কিংবা আলুর তরকারি। দুপুরে পাতে পড়বে ভাত, সবজি ডাল, ভাজা, তরকারি এবং দেশি মুরগির ঝাল। রাতে চাইলে মিলতে পারে চিনা খাবারও। চাইলে বিজনবাড়ি থেকে ঘুরে আসতে পারেন আশপাশে। গাড়ি বুক করে চলে যেতে পারেন দার্জিলিং, লামাহাটা, লেপচাজগৎ। দিনভর সেখানে ঘুরে রাতে ফিরে আসুন বিজনবাড়ি। তাহলে আর দেরি কেন, পুজোয় ভিড় এড়াতে চাইলে বেড়িয়ে পড়ুন এখনই। ঘুরে আসুন পাহাড়-নদী ঘেরা বিজনবাড়ি।
কীভাবে যাবেন?
যে কোনও ট্রেনে চলে আসুন নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন। সেখান থেকে গাড়ি বুক করে সরাসরি চলে আসুন বিজনবাড়ি। অথবা শেয়ার গাড়ি চেপে পৌঁছে যেতে পারেন দার্জিলিঙয়ে। সেখান থেকে শেয়ার গাড়ি নিয়ে চলে যান বিজনবাড়ি বাজার। তার পর পায়ে হেঁটে চলে যান হোম স্টে। তবে রাস্তার কাজ চলছে, ফলে রাস্তার অবস্থা বেশ খারাপ।
খরচ: দার্জিলিঙয়ের অফবিট পর্যটনস্থান এই বিজনবাড়ি। ফলে খরচটা অন্যান্য জায়গার তুলনায় বেশ কিছুটা বেশি। থাকা-খাওয়া মিলিয়ে মাথাপিছু দিন প্রতি ২ হাজার টাকা খরচ পড়তে পারে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.