Advertisement
Advertisement

Breaking News

কৌশিকের কৈলাস ভ্রমণ

বেনজির! ‘নিষিদ্ধ’ ভারতীয় গাড়ি নিয়ে কৈলাসে পাড়ি বঙ্গসন্তানের

ফিরতেই শুরু করে দিয়েছেন আফ্রিকা যাওয়ার তোড়জোড়।

Bengal team visits mount Kailash using Indian vehicles
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:December 11, 2019 9:58 am
  • Updated:December 11, 2019 12:10 pm

গৌতম ব্রহ্ম: ভারতীয় চার চাকায় মানস সরোবর পৌঁছে গেল ‘পঞ্চপাণ্ডব। তাও ডানদিকে থাকা স্টিয়ারিং নিয়ে। নজির গড়ল বাংলা। কৌশিক রায়, রুদ্র বিশ্বাস, অরিজিৎ বসু, শুভ্রজিৎ মুখোপাধ্যায় ও বরুণ সিং। ১১ নভেম্বর চন্দননগর থেকে যাত্রা শুরু। নেতৃত্বে কৌশিক। ১৬ নভেম্বর নেপাল হয়ে তিব্বত। প্রায় সাড়ে ছ’হাজার কিলোমিটার পাড়ি দিয়ে ২৬ নভেম্বর কৈলাস-মানস সরোবর পৌঁছল ৫ জনের টিম। 

কৌশিকদের দাবি, এর আগে কোনও ভারতীয় নম্বর প্লেটের গাড়িকে তিব্বতের মাটি ছুঁতে দেয়নি চিন। মানস সরোবর পর্যন্ত যাওয়া তো অনেক দূরের কথা। এর কারণ যতটা কূটনৈতিক, তার চেয়েও বেশি যান্ত্রিক। চিনের সমস্ত গাড়ির স্টিয়ারিং বাঁদিকে, মানে লেফট হ্যান্ড ড্রাইভ। ভারতে সব রাইট হ্যান্ড ড্রাইভ, মানে ডান দিকে স্টিয়ারিং। স্বাভাবিক কারণেই ভারতীয় গাড়ি ও ভারতীয় চালকদের ঘোরতর সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা। তবে অদম্য জেদের সামনে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে। সেই হিসাবে কৌশিকদের কৈলাসযাত্রা শুধু বেনজির নয়, ঐতিহাসিকও।

Advertisement

দশ দিনের যাত্রাপথে বাধাবিপত্তি কম আসেনি। কখনও আবহাওয়া খারাপ হয়েছে, কখনও বিগড়েছে শরীর। কখনও আবার এসইউভি’তে যান্ত্রিক গোলযোগ। সব কিছু সামলে কৈলাসযাত্রা সেরে অক্ষত শরীরেই ৩০ নভেম্বর কলকাতা ফেরত এসেছেন কৌশিকরা। নজিরবিহীন যাত্রায় সাড়ে ১৯ হাজার ফুট উচ্চতার মানস সরোবর জয় করে উচ্ছ্বসিত দলের প্রত্যেকে। কৌশিক জানালেন, “ভাবতে ভাল লাগছে, ভারতীয় গাড়ি নিয়ে আমরাই প্রথম মানস সরোবর পৌঁছনোর সাহস দেখালাম। চিন সরকারকে ধন্যবাদ, ওঁরা আমাদের অনুমতি দিয়েছেন।”

Advertisement

ভারত সরকারের তত্ত্বাবধানে চিন সরকারের সহযোগিতায় ফি বছর বহু ভারতীয় পর্যটক কৈলাসযাত্রা করেন। এ বছর ১২ জুন ৫৮ জন যাত্রী গিয়েছেন। ভারত থেকে সাধারণত দু’টি রুটে কৈলাসযাত্রা হয়। ৫৮ জনের দলটি উত্তরাখণ্ডের লিপুলেখ হয়ে তিব্বতে ঢুকেছিল। এটাই প্রচলিত রুট। তবে এ বছর সিকিমের না থুলা পাস হয়েও তিব্বত ভ্রমণের অনুমতি দিয়েছে চিন সরকার। কিন্তু দু’টি রুটের কোনওটিতেই ভারতীয় গাড়ির প্রবেশাধিকার নেই। তিব্বত সীমান্ত থেকে চিন সরকার পরিচালিত গাড়িতে সওয়ার হতে হয়। খরচ পড়ে মাথাপিছু ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা।

[আরও পড়ুন: বিরল ঘটনা, আড়াই ফুটের বাবা ও দু’ফুটের মায়ের সুস্থ সন্তানকে ঘিরে শোরগোল শিলিগুড়িতে]

কৌশিকদের ক্ষেত্রে অবশ্য এ সবের বালাই ছিল না। এভারেস্ট বেস ক্যাম্প, লাসা হয়ে নিজেদের গাড়িতেই সটান তাঁরা পৌঁছে যান ব্রহ্মপুত্র, সিন্ধুনদের উৎসস্থলে। অত্যধিক ঠান্ডার দরুণ মানস সরোবরে স্নান করা হয়নি। তবে কৈলাসকে কাছ থেকে দেখেছেন। কৌশিকের কথায়, “নভেম্বরে ওখানে প্রচণ্ড বরফ পেয়েছি। কৈলাস একদম জনশূন্য ছিল।” পেশায় ব্যবসায়ী কৌশিক এর পর গাড়ি নিয়ে আফ্রিকা সফরের তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন। মানস সরোবরের আগে স্ত্রী ডা. দেবাঞ্জলি রায়কে নিয়ে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইভ’ স্লোগানকে সামনে রেখে ৪২ হাজার কিমি পথ পাড়ি দিয়েছিলেন। লাওস, চিন, তাইল্যান্ড, কিরঘিজিস্তান, সুইডেন, ডেনমার্ক, নরওয়ে, ফ্রান্স, জার্মান, স্পেন-সহ একাধিক দেশ গাড়িতেই ঘুরেছেন। সহযোগিতায় ছিল ‘অটোমোবাইল অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’। সংস্থার সভাপতি মদন মিত্র জানালেন, “কৌশিকদের সুবাদে বাংলা রেকর্ড গড়ল। ওদের পরবর্তী প্রকল্পগুলিতেও পাশে থাকব।” ২০২০ আগস্টে আফ্রিকা-অভিযান। ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ। তবে কৌশিকদের মন কিন্তু এখনও পড়ে মানস সরোবরে। 

[আরও পড়ুন: ডেঙ্গু কেড়েছে স্ত্রীকে, সেই স্মৃতিতে মশারি বিলি করছেন স্বামী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ