সংগ্রাম সিংহরায়, শিলিগুড়ি: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (জিটিএ) উদ্যোগে সম্পূর্ণ নতুন এক পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলা হল। কালিম্পংয়ের ‘নকদাঁড়া’তে এই পর্যটনকেন্দ্রটি ইতিমধ্যেই তার অপার্থিব সৌন্দর্যের জন্য নজর কাড়ছে। গত বৃহস্পতিবার কেন্দ্রটি সর্বসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেছেন জিটিএ বোর্ডের চেয়ারম্যান অনিত থাপা। ফলে এখন গোটা বিশ্বের কাছে প্রায় অপরিচিত পর্যটনকেন্দ্র নকদাঁড়া নিয়ে উচ্ছ্বসিত স্থানীয়রা। পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্র ‘নকদাঁড়া’র জন্য এলাকার অর্থনীতির সমৃদ্ধি হবে বলেও মনে করছেন জিটিএ বোর্ডের চেয়ারম্যান।
“কিছুদিন আগেই পাহাড়ে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে রাজ্যের পাহাড়ি এলাকায় নতুন পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে উৎসাহ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কিছু জায়গাকে পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করে দিলেও সেগুলিকে তৈরি করা হয়নি কেন? তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরই নড়েচড়ে বসে জিটিএ। যদিও তাঁরা আরও আগে থেকেই কাজ শুরু করেছিলেন বলে দাবি করেছেন জিটিএ কর্তারা।
কালিম্পং থেকে অনতিদূরে নকদাঁড়া সম্পূর্ণ নতুন একটি পর্যটন কেন্দ্র। এতদিন শুধুমাত্র এই রাজ্যের পাহাড়ের মধ্যে মিরিক লেককে কেন্দ্র করেই পর্যটনকেন্দ্র গড়ে উঠে ছিল। মরশুম আসলে তাতে পর্যটকদের ভিড়ও হয় প্রচুর। এবার তার বিকল্প হিসেবে নকদাঁড়া পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে বলে আশাবাদী উত্তরের পর্যটন সার্কিট।
কালিম্পং এর দু’টি জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র লাভা এবং লোলেগাওঁয়ের মধ্যবর্তী এলাকায় এই নতুন পর্যটনকেন্দ্রটি চারিদিকে পাহাড় ও জঙ্গল ঘেরা অপূর্ব দৃশ্যের কোলাজ। মোট আড়াই একর জমির উপরে পুরো নকদাঁড়া পর্যটনকেন্দ্রটি গড়ে তোলা হয়েছে। তার মধ্যে প্রায় ১০ হাজার বর্গমিটার জায়গা জুড়ে লেকটি তৈরি করা হয়েছে। পাশে সুদৃশ্য বাগান এবং লনও তৈরি করা হয়েছে। যেখানে বসে লেকের বোটিং উপভোগ করতে পারবেন আগত পর্যটকেরা। আপাতত পাঁচটি প্যাডেল বোর্ড আনা হয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী ভবিষ্যতে তার সংখ্যা বাড়ানো হবে বলেও জানান জিটিএ’র অ্যাসিস্ট্যান্ড ট্যুরিজম ডিরেক্টর সূরজ শর্মা।
কালিম্পং শহর থেকে ৪০ কিলোমিটার এবং লাভা, লোলেগাঁও থেকে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত এই পর্যটন কেন্দ্রটির প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে বলেও মনে করছেন হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড ট্রাভেল ডেভলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সভাপতি সম্রাট সান্যাল। তিনি বলেন, “যত বেশি কেন্দ্র বিকল্প হিসেবে উঠে আসবে। তত বেশি সুযোগ তৈরি হবে পর্যটক ও পর্যটন দু’ক্ষেত্রের জন্যই। ট্যুর ব্যবস্থাপকদের দাবি, “পাহাড়ের এখনও সিংহভাগ পর্যটনই সিকিম-কেন্দ্রিক। তাই এ রাজ্যে সুযোগ তৈরি করতে হলে এমন পর্যটন কেন্দ্র আরও তৈরি করতে হবে।” এখানে যারা আসতে চাইবেন, লাভা-লোলেগাঁও এবং কাফের এলাকায় রাত্রিবাসের ব্যবস্থাও রয়েছে। ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি তৈরি করা হচ্ছে। আপাতত প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয়ে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ সবে শুরু হয়েছে। সেটিও খুব দ্রুত শেষ হয়ে যাবে বলে আশাবাদী নকদাঁড়া নির্মাতারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.