সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পাহাড় থেকে জঙ্গল, নদী থেকে সমুদ্র, ইতিহাস থেকে ঐতিহ্য- এসবের সংমিশ্রণই বাংলাকে করে তুলেছে আরও সুন্দর, অতুলনীয়৷ বর্ষাকালে বাংলা হয়ে ওঠে আরও বেশি সবুজ, আরও লাস্যময়ী৷ বছরের অন্যান্য সময়ের থেকে বর্ষাকালে বাংলার সমুদ্রসৈকতের রূপ কিন্তু অনেকটাই আলাদা হয়৷ উইকএন্ডে ঘোরার পরিকল্পনা রয়েছে? সমুদ্র পছন্দ করেন? তাহলে চটপট প্রতিবেদনটি পড়ে ফেলুন৷ পশ্চিমবঙ্গের সেরা পাঁচটি সমুদ্রসৈকতের ঠিকানা দেওয়া রইল এই প্রতিবেদনে৷
১. দিঘা
বাংলার সমুদ্রসৈকত বললে প্রথমেই যে নামটা মাথায় আসে, তা নিঃসন্দেহে দিঘা৷ বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ আর মনোরম আবহাওয়া দিয়ে বছরের পর বছর পর্যটকদের আকর্ষণ করে চলেছে এই স্থান৷ ভালবাসার টানে উইকএন্ড কাটাতে বারবারই এখানে এসে হাজির হন পর্যটকরা৷ বাড়ির কাছাকাছি রিফ্রেশমেন্টের জন্য এর চেয়ে ভাল জায়গা যেন আর কিছু হতেই পারে না৷ নিউ দিঘার সমুদ্রে পর্যটকরা ভিড় জমান স্নান করার জন্য৷ ওল্ড দিঘায় আবার বেশি মজা সন্ধেতে৷ সৈকতে লাইন দিয়ে বিক্রি হচ্ছে সামুদ্রিক মাছ ভাজা৷ এর স্বাদ না নিলে তো সফরটাই অসম্পূর্ণ থেকে যাবে৷ এখানেই ঝিনুকের তৈরি বিভিন্ন ধরনের গয়না ও শো-পিস পেয়ে যাবেন৷ আত্মীয়স্বজনদের জন্য কিনে ফেলতে পারেন৷ নিউ অথবা ওল্ড দিঘায় অসংখ্য ছোট-বড় হোটেল ও রিসর্ট রয়েছে৷ বাজেট অনুযায়ী বুক করে ফেলুন৷
হাওড়া থেকে এক্সপ্রেস ট্রেনে চেপে সোজা দিঘা স্টেশন৷ স্টেশন থেকে গাড়ি অথবা মোটর-ভ্যান ভাড়া করে হোটেলের উদ্দেশ্যে রওনা দিন৷
২. শংকরপুর
দিঘার কাছের এই সমুদ্রসৈকতটি পর্যটকদের বেশ প্রিয়৷ অনেকে দিঘা ঘুরতে গেলে শংকরপুরেও ঢুঁ মারেন৷ এখানকার সমুদ্রসৈকতটি তুলনামূলকভাবে অনেক শান্ত৷ বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে গেলে তো কথাই নেই৷ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন সৈকতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে আড্ডা দিতে পারেন৷ ইচ্ছে করলে ব্যাডমিন্টন ব়্যাকেট বা ভলিবলও সঙ্গে করে নিয়ে যেতে পারেন৷ দিগন্তে সূর্যাস্তের অনন্য দৃশ্য দেখে হোটেলে ফিরুন৷ সৈকতের কাছেই থাকার জন্য ভাল হোটেল পেয়ে যাবেন৷ কলকাতা থেকে বাসে শংকরপুর যেতে পারেন৷ অথবা দিঘা থেকে ফেরার পথে এই সৈকতে কিছু সময় কাটিয়ে আসুন৷
৩. মন্দারমনি
আরও একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় সৈকত৷ শংকরপুরের মতোই এখানকার সমুদ্রও বেশ ধীরস্থির প্রকৃতির৷ শান্ত স্নিগ্ধ পরিবেশের আকর্ষণেই সাধারণত নবদম্পতিরা মধুচন্দ্রিমার জন্য এই জায়গাকে বেছে নেন৷ সমুদ্র তীরবর্তী স্থানেই মাথা চারা দিয়েছে ছোট-বড় নানা হোটেল ও গেস্ট হাউস৷ তবে সাবধান৷ সৈকতে চলার সময় চোরাবালির দিকে নজর রাখবেন৷ নাহলে বিপদ হতে পারে৷ পর্যটকদের জন্য অবশ্য চোরাবালির অংশগুলো বিশেষভাবে চিহ্নিত করা রয়েছে৷ সকাল থেকে সারা দিনই কলকাতা থেকে মন্দারমনি যাওয়ার বাস পেয়ে যাবেন৷
৪. তাজপুর
পূর্ব মেদিনীপুরের আরও একটি আকর্ষণীয় সমুদ্রসৈকত হল তাজপুর৷ এখানকার সৈকতটি বাকি সৈকতগুলোর থেকে অনেক বেশি চওড়া৷ বেশ অল্প দামে স্কুটি ভাড়া পেয়ে যাবেন৷ শান্ত সৈকতের বুক চিরে স্কুটি চালিয়ে ঘুরে নিন গোটা এলাকা৷ সৈকতের কোনও কোনও স্থান দূর থেকে দেখলে বেশি লালচে মনে হতে পারে৷ কেন বলুন তো? ঠিক ধরেছেন৷ কারণ এখানে সারি দিয়ে ঘুরে বেড়ায় অজস্র লাল কাকড়া৷ ইদানীং এই সৈকতে প্যারা-গ্লাইডিং পর্যটকদের অত্যন্ত আকর্ষণীয় বিষয় হয়ে উঠেছে৷ হাওড়া থেকে দিঘা হয়ে ট্রেনে তাজপুর যেতে পারেন৷ অথবা লাক্সারি বাসেও যাওয়া যায়৷
৫. বকখালি
পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দিঘার মতো এখনও ততটা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি বকখালি৷ তবে দু’দিনের ছুটিতে এই সমুদ্রসৈকতে গেলে মোটেও হতাশ হতে হবে না৷ পরিষ্কার, শান্ত পরিবেশ আপনার মন জয় করবেই৷ তবে পর্যটকদের অভাবে এই সৈকতটির আশেপাশে খুব বেশি সংখ্যক হোটেল গড়ে ওঠেনি৷ বকখালি যাওয়ার পরিকল্পনা করলে আগে থেকে হোটেল বা রিসর্ট বুক করে যাওয়াই ভাল৷ কলকাতা থেকে বাসে যেতে সময় লাগে ঘণ্টা চারেক৷ এছাড়া শিয়ালদহ থেকে নামখানা স্টেশনে নেমেও বাসে করে যাওয়া যায়৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.