২৫ জানুয়ারি ন্যাশনাল ট্যুরিজম ডে। দেশের অর্থনীতিকতে চাঙ্গা করতে ট্যুরিজম খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষকে ট্যুরিজমের প্রতি আকৃষ্ট করতেই এই দিবস উদযাপন মোদি সরকারের। ন্যাশনাল ট্যুরিজম ডে উপলক্ষ্যে ঘুরতে যাওয়ার সন্ধান সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে।
ধনরাজ তামাং, দার্জিলিং: শুধু কি চা? দার্জিলিং পাহাড়ের রসালো মিষ্টি কমলালেবু (Orange) প্রেমে পড়েননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। শীতের মিঠে রোদ গায়ে মেখে যদি হাতে দু’একটা দার্জিলিং (Darjeeling) পাহাড়ের কমলালেবু থাকে তো কথাই নেই। দিব্যি আড্ডা জমে উঠবে।
একসময় শিলিগুড়ি (Siliguri), কলকাতার বাজারেও এখানকার কমলালেবু সহজে পাওয়া যেত। কিন্তু কয়েক বছরে বিভিন্ন কারণে ফলন কমতে দার্জিলিংয়ের কমলালেবু বিরল হতে শুরু করে। কয়েক বছর পর এবার থরে থরে কমলালেবুতে ভরেছে পাহাড়ের মংপু, লাবধা, মিরিক, সিটং, সুখিয়াপোখরি, পুলবাজার। পর্যটক টানতে তাই মংপু এবং লাটপানচারে ১১ ডিসেম্বর শুরু হচ্ছে দু’দিনের কমলালেবু উৎসব।
মংপু (Mongpu) সিঙ্কোনা প্ল্যানটেশনের ডিরেক্টর স্যামুয়েল রাই বলেন, “এবার পাহাড়ে কমলালেবুর ভাল ফলন হয়েছে। আমরা পর্যটকদের সামনে এখানকার অভিনব স্বাদের ফল তুলে ধরতে দু’দিনের কমলালেবু উৎসবের আয়োজন করছি।” জিটিএ-র কৃষি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সতীশ পোখরেল জানান, জিটিএ-র পক্ষ থেকে পাহাড়ের চাষিদের হাতে উন্নতমানের চারা তুলে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও চাষের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ কিরা হয়। তাঁর কথায়, “দার্জিলিং পাহাড় চায়ের পাশাপাশি কমলালেবুর জন্য বিখ্যাত। পুরনো গাছ, বিভিন্ন রোগের জন্য কয়েক বছর উৎপাদন ও গুণমান খারাপ ছিল। নতুন চারা বুনে চাষ শুরু হয়েছে। ক্রমশ ফলন বাড়বে।”
সিঙ্কোনা প্ল্যানটেশন বিভাগ থেকেও ২৭১ একর জমিতে কমলালেবুর চাষ হয়েছে। সেখানেও গাছ ভরেছে লেবুতে। সিঙ্কোনা প্ল্যানটেশনের ডিরেক্টর জানান, মংপু এলাকায় এবার কমলালেবুর সবচেয়ে ভাল ফলন হয়েছে। স্থানীয় চাষি সন্দীপ তামাং বলেন, “গত বছর আমার বাগান ৮৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি। এবার প্রায় দেড় লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়েছে।” অন্য চাষি রাজেশ থাপা জানান, ফের পাহাড়ে কমলালেবুর চাষ ফিরতে শুরু করেছে। কয়েক বছর পর এবার আগের মতো ফলন হয়েছে। এখন কমলালেবু বাগানে হোম-স্টে গড়ে উঠতে শুরু করেছে। পাইকারি ফল ব্যবসায়ী মণিরাজ থাপা এবারও মংপু এলাকার কয়েকটি কমলালেবু বাগান কিনেছেন। তিনি জানান, এবার ২০ ডিসেম্বর থেকে ফল তোলা শুরু হবে। কারণ এখন পুরো রং ধরেনি। ফলন ভালো হওয়ায় এবার বাগানের দামও বেড়েছে।
উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর থেকে পাহাড়ের কমলালেবু ঝরে পড়ার সমস্যা বাড়ছিল। এর কারণ ছিল জমিতে অণু-খাদ্যের অভাব। পাহাড়ের মাটিতে অম্লতা কমেছে। পুরনো বাগানগুলির পর্যাপ্ত পরিচর্যার অভাবে গাছের গোড়ায় আগাছা এবং পোকার বাসা হত। দফতর থেকে চাষিদের নানা ভাবে সচেতন করা হয়েছে। এবারও শুধু দার্জিলিংয়ে দেড় হাজার হেক্টর জমিতে কমলালেবুর চাষ হয়েছে। দার্জিলিংয়ের কমলালেবুর বেশিরভাগ উৎপন্ন হয় সিটং-এ। মংপু থেকে সিটংয়ের দূরত্ব সাড়ে আট কিলোমিটার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.