প্রতিবারের মতো এ বছরেও বাঙালির মেগা ইভেন্ট দুর্গাপুজো শেষ। রাত জাগা, অনিয়ম, সঙ্গে হাতের সামনে যা পাওয়া গিয়েছে তাই অবলীলায় চলে গিয়েছে পেটে। গত দু’মাস ফল, ওট্স আর যোগা করে যেটুকু ওজন কমেছিল, পোস্ট পুজো যে-কে-সেই। কুর্তির কোমর টাইট, স্কার্ট ও ব্লাউজের বোতাম আঁটসাঁট। এদিকে সামনেই কালীপুজো, দীপাবলি, ভাইফোঁটা। তাতেও চলবে আরও একপ্রস্থ খাওয়াদাওয়া। উৎসবের সেকেন্ড ফেজ শুরু হওয়ার আগে হাতে যে ক’দিন রয়েছে, সে ক’দিনে ডায়েট ও রোজকার রুটিনে খানিক রদবদল আনলে সামনের উৎসবেও আপনার জেল্লা ঠিকরে পড়বে, শরীরও থাকবে ঝরঝরে।
- পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন। গত দু’-এক সপ্তাহ ঘুমের ঘাটতি, ক্লান্তি ও অনিয়মের ফলে শরীরের ক্ষতি অনেকখানি সারিয়ে তুলবে দিনে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুম।
- প্রাতরাশ, দুপুর ও রাতের খাবার সময়মতো খান, যে সময়ে আপনি স্বাভাবিক জীবনে অভ্যস্ত ছিলেন, সেই রুটিনে ফিরে যান।
- ওজন বেড়ে গিয়েছে বলে ক্র্যাশ ডায়েট বা মিল স্কিপ করবেন না।
- পুষ্টিকর জলখাবার খান। লুচি-পরোটা-ভাজাভুজি না খেয়ে ওট্স, দই-চিঁড়ে, খই-দুধ, মরশুমি ফল খান।
- রোজ একবাটি টক দই খান, এতে থাকা প্রোবায়োটিক্স আপনার হজমশক্তি ঠিক রাখবে, ত্বক-চুলেও আনবে চমক।
- স্ন্যাকসে তিন-চারটে আমন্ড, আখরোট, খেজুর খান।
- দুপুরে ও রাতে বাড়ির তৈরি হালকা সহজপাচ্য খাবার খান। ভাত বা রুটি যা খেতে আপনি অভ্যস্ত, তাই খান। ওজন বাড়ার প্রবণতা থাকলে ভাতের পরিমাণ কম করুন, একেবারে ছেড়ে দেবেন না।
[ দিনভর ঘুম-ঘুম ভাব, শরীরে বড় কোনও রোগ বাসা বাঁধেনি তো? ]
- প্রোটিন যুক্ত খাবার খান নিয়মিত। মাছ, চিকেন, ডিম, সয়াবিন, সয়া নাগেট্স রোজকার ডায়েটে রাখুন। ডিম খেলে ওজন বেড়ে যাবে ভাববেন না। বরং কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার যেমন ভাত, রুটি, ময়দা কম খান।
- সকালবেলা উঠে একগ্লাস উষ্ণ জলে অর্ধেক লেবুর রস, হাফ চা চামচ মধু মিশিয়ে খান। এতে শরীর থেকে ক্ষতিকারক টক্সিন বেরিয়ে যাবে, ত্বকেও ফিরে আসবে জেল্লা।
- দিনে ৭ থেকে ৮ গ্লাস জল খান।
- গ্রিন টি, ডাবের জল বা দইয়ের ঘোল খেতে পারেন জলের পরিবর্তে।
- প্যাকেজড ফলের রস না খেয়ে মরশুমি তাজা ফল চিবিয়ে খান।
- যাঁরা বাড়ি থেকে লাঞ্চ ক্যারি করেন, তাঁরা চিকেন স্যালাড, আটার রুটি, হালকা পাঁচমিশালি তরকারি, ব্রাউন রাইস, ওট্স অথবা সুজির উপমা খেতে পারেন। প্লেন দোসা বা ইডলিও খেতে পারেন দুপুরে।
- রাতের খাবার যতটা তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়ে নিন। সেদ্ধ সবজি, স্যুপ, সেদ্ধ চিকেন অথবা রুটি-সবজি খেতে পারেন। ভারী তেলমশলা যুক্ত খাবার, ভাত ও রুটির পরিমাণ রাতে কম খান।
- রোজ ৩০ মিনিট এক্সারসাইজ, যোগব্যায়াম করুন বা হাঁটুন। নাচ, জিমে ওয়ার্ক আউট ও সাঁতারও শরীরের পক্ষে অত্যন্ত উপকারী।
[ ভুলো মন? মগজাস্ত্রের জোর বাড়াতে মেনে চলুন এই নিয়ম ]
- ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড, প্রসেসড ফুড এড়িয়ে চলুন।
- চা, কফির পরিমাণ কমিয়ে দিন। চায়ের নেশা থাকলে ক্যামোমিল, গ্রিন টি বা লিকার চা খান চিনি ছাড়া।
- বিস্কুট, চানাচুর, রোল, চাউমিন, মোমো, চিজ, স্যান্ডউইচ স্প্রেড, কেক-পেস্ট্রি এখন একেবারে ডায়েট থেকে বাদ রাখুন।