সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চাওয়ালা বলে কি মানুষ নয়?
এরকম একটা বিদ্বেষ উসকে দেওয়ার মতো মন্তব্যের কারণ একটাই! সত্যি করে বলুন তো, চাওয়ালাদের খুব বেশি সম্মান কি আমরা দিয়ে থাকি? চা দিতে দেরি হলে খারাপ কথা, ভাঁড়টা ফুটো হলে তো কথাই নেই, এছাড়া ভাঁড়ে দু ফোঁটা চা কম পড়লেও কথা শোনানোর সুযোগ ছাড়ি না! কিন্তু সারা বিশ্ব জুড়েই এমন উদাহরণ রয়েছে যেখানে ভদ্রসমাজের মানুষদের রীতিমতো হিংসার কারণ হয়ে উঠেছেন চাওয়ালারা!
সবার প্রথমে আসা যায় আরশাদ খানের কথাতেই। নীল চোখের এই পাকিস্তানি চাওয়ালা এখন আন্তর্জাতিক স্তরের মডেল। তাঁর রূপ দেখলে যে কোনও নারী মোহিতহবেন! আর ঈর্ষাকাতর হয়ে পড়বেন পুরুষরা। বিশেষ করে এখন, কেন না আরশাদের উপার্জন বেড়ে গিয়েছে অনেকগুণ!
এর পরেই আসা যায় উপমা ভিরদির কথায়। অস্ট্রেলিয়াবাসী এই নারী পড়াশোনা করেছেন আইন নিয়ে। কিন্তু স্রেফ ভাললাগার জায়গা থেকে তিনি বেছে নিয়েছেন লোকজনকে চা খাওয়ানোর কাজ। চুটিয়ে ব্যবসার পাশাপাশি এর জন্য আর কী পাওনা হয়েছে তাঁর? টাকাকড়ি ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া বছরের সেরা বিজনেসম্যানের তকমা!
তা, টাকাকড়ির কথা উঠলে কিশোর ভাজিয়াওয়ালার কথা বলতেই হয়। স্রেফ চা বিক্রি করেই তিনি উপার্জন করেছেন রাশি রাশি অর্থ। যার জেরে টাকা লেনদেনের ব্যবসা পর্যন্ত করে থাকেন এই চাওয়ালা। আয়কর দপ্তর যখন হানা দেয় তাঁর দোকানে, উদ্ধার হয় অগুনতি টাকা ও সোনাদানা! চোখ কপালে উঠছে তো?
সোমনাথ গিরামের কথা জানলে আরও অবাক হবেন! গ্রাম থেকে তিনি পুণেতে এসে নানা খাবারের দোকানে কাজ করে অবশেষে নিজের চায়ের দোকান দেন। তার পর সেই দোকানের উপার্জন থেকেই চাটার্ড অ্যাকাইট্যান্সির পড়াশোনার খরচ তোলেন। আপাতত তিনি মহারাষ্ট্র সরকারের স্বনির্ভর প্রকল্পের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর!
কী ভাবছেন, চায়ের দোকান দেওয়াই ভাল? আপনার আগে সেই কাজ করে ফেলেছেন মধুর মালহোত্রা। অস্ট্রেলিয়ায় এই মানুষটি মাস প্রতি ৩০ লক্ষ উপার্জনের চাকরি করতেন। কিন্তু এখন ভোপালে ফিরে এসে চায়ের দোকান দিয়েছেন। কেন, একটু হিসেব কষেই দেখুন!
এবার একটু মন দিয়ে দেখুন উপরের ভিডিওটা। সেখানে দেখবেন বছর পঁয়ষট্টির বিজয়ন এবং তাঁর স্ত্রী মোহনাকে। স্রেফ চা বেচেই তাঁরা ঘুরেছেন সারা পৃথিবী। এদিকে বাড়ির পাশে দীঘা যেতে গেলেও আমাদের গালে হাত পড়ে পয়সার অভাবে!
সবার শেষে তো একজনের কথাই বলতে হয়! ভেবে দেখুন, ভারতের এই চাওয়ালার কথা! আগে তিনি চা খাইয়ে মানুষের যত্ন নিতেন। আর এখন প্রধানমন্ত্রী হয়ে দেখভাল করেন দেশ এবং তার জনতার! নরেন্দ্র মোদির জীবনের এই গল্প কি রূপকথাকেও হার মানায় না?
তাহলে? ভাবুন, ভাবা অভ্যাস করুন!
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.