সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রযুক্তির নাগালে কয়েকগুণ বেড়েছে অনলাইন শপিং। পছন্দের সামগ্রী নিয়ে দরজায় হাজির আমাজন, ফ্লিপকার্ট, স্ন্যাপডিলের মতো অনলাইন সংস্থা। আছে মিন্ত্রা, বিগবাস্কেটের মতো সংস্থাও। প্রতিযোগিতা বাড়ছে। আর বাড়ছে অফারের পর অফার। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার দৌলতে ব্যাংকগুলোও আরও সহজ করে দিয়েছে টাকা লেনদেনের পদ্ধতি। ক্যাশ অন ডেলিভারি আর তেমন হয় না বললেই চলে। গত চারবছরে ব্যাপক হারে বেড়েছে অনলাইন লেনদেন। তবে প্রযুক্তির উন্নতি সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে ঝুঁকিও। অনলাইন লেনদেনের সময় খুব সহজেই হ্যাকারদের হাতে চলে যেতে পারে ব্যাংকের যাবতীয় তথ্য। কিন্তু তা বলে কি শপিং ছেড়ে দেবেন? মোটেও না। কিন্তু আপনার অ্যাকাউন্ট একবার হ্যাক হয়ে গেলে বুঝবেন কীভাবে? অনলাইন শপিং করার আগে মাথায় রাখুন কিছু বিষয়। তাহলে প্রতারণার মাঝপথ থেকেও বাঁচতে পারবেন। বাঁচাতে পারবেন আপনার অ্যাকাউন্টও।
ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হলে ইন্টারনেটে খুঁজলে অনেক সুরাহা পাবেন। বাতলে দেওয়া আছে হাজার নিয়মও। কিন্তু কোনটা সঠিক, কোনটা নয় তা বোঝাও খুব কঠিন কাজ। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়েছে, তা বোঝার কিছু সহজ উপায় আছে। অ্যান্টিভাইরাস সংস্থা ক্যাসপারস্কি অনলাইন শপিং ও লেনদেনের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কিছু পরামর্শ দিয়েছে। যদি আপনার মোবাইলে কোনও অ্যান্টিভাইরাস নাও থাকে, তবু সাইবার ক্রাইম থেকে বাঁচতে বিষয়গুলো মাথায় রাখুন।
কী কী বিষয় খেয়াল রাখবেন?
১. কোনও সন্দেহজনক গতিবিধি হলেই বিষয়টি নজর রাখুন। সব সময় কীসের জন্য লেনদেন হচ্ছে, সেটা লিখে রাখুন। ছোট কোনও লেনদেনে অসঙ্গতি থাকলে, সেখানেও বিপদের সম্ভাবনা থেকে যেতে পারে। পারলে পাসবুক আপডেট করিয়ে নিন।
২. অ্যাকাউন্টের ডিটেইলস পরিবর্তিত হয়েছে বলে কমবেশি ইমেইল আসে। কাজের ব্যস্ততায় অনেক সময় এই ধরনের মেইল হয়তো নজরে পড়ে না। কিন্তু এই ভুল করলে আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে কোনও দিন হয়তো আর একটা টাকায় থাকবে না। সব সাফ করে নিয়ে যাবে সাইবার চোর। সমস্যা বাড়লে সরাসরি ব্যাংকে গিয়ে যোগাযোগ করুন।
৩. ক্রেডিট কার্ড হোক বা পার্সোনাল লোন। এখন সবার মোবাইলেই বিভিন্ন কোম্পানির কমবেশি ফোন আসে। অনেক ফোনে ব্যাংকের তথ্য চাওয়া হয়। এই ধরনের ফোন থেকে সব সময় সাবধান। প্রয়োজন হলে ব্যাংকে গিয়ে নিজে লোন অ্যাপ্লাই করুন। সরাসরি কথা বলুন ব্যাংকের ম্যানেজারের সঙ্গে। কিন্তু এই ধরনের ফোনে ব্যাংকের তথ্য ভুলেও দেবেন না। যা টাকা আছে, সব চুরি হয়ে যেতে পারে।
৪. শুধু কল নয়। মেসেজের মাধ্যমেও এই প্রতারণার ফাঁদ পাতা হয়। কোনও বিশেষ নম্বর থেকে বারবার ফোন বা মেসেজ আসলে বুঝে যাবেন, আপনার অ্যাকাউন্ট প্রতারকদের টার্গেট। নম্বর ব্লক করে দিন বা ব্যাংকে গিয়ে যোগাযোগ করুন।
৫. ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সঙ্গে যে মেইল আইডি আছে, তাতে আপনার লেনদেনের সব হিসেব আসে। ব্যাংকের পাসবুকের মতো সেখানেও দেখা যায় সব। এছাড়া কোনও সন্দেহজনক গতিবিধি সংক্রান্ত মেইল আসলে, তা নজরে রাখুন। ব্যাংক সংক্রান্ত মেইল কোনওভাবে এড়িয়ে যাবেন না।
৬. আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে যদি কোনও সন্দেহজনক গতিবিধি চলে, তা হলে আপনি হয়তো প্রতারণার ফাঁদে পড়ে গিয়েছেন। কোনও প্রতারণা চক্রের লিংকে ক্লিক করাতেই কী বিপত্তি হয়েছে? ভাল করে দেখে নিন।
অনলাইন শপিং বা অনলাইন লেনদেন বেশি হলে মোবাইল বা ল্যাপটপে ভাল সিকিউরিটি সিস্টেম ইনস্টল করা প্রয়োজন। না হলে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের কাজ করা কোনওভাবেই নিরাপদ নয়। গোটা বিশ্বে এখন সবথেকে সুচতুর সাইবার অপরাধের নাম ‘ম্যান ইন দা ব্রাউসার অ্যাটাক’। ঘরে বসেই আপনার ব্যাংকের সব টাকা তুলে নিতে পারে অপরাধীরা। একটি ছোট মালওয়ার ব্যবহার করে ল্যাপটপ বা মোবাইলের ব্রাউসারের অনলাইন গতিবিধি দেখা শুরু হয়। সেখান থেকে ব্যাংকের ওয়েবসাইটে ঢুকে আপনার ব্যবহৃত তথ্য হাতিয়ে মুহূর্তের মধ্যে খালি হয়ে যায় অ্যাকাউন্ট। অ্যাডভান্সড ইন্টারনেট সিকিউরিটি ব্যবহার না করলে অনলাইন শপিং বা লেনদেন থেকে দূরে থাকাই ভাল।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.