অর্ক দে, বর্ধমান: মোবাইল গেমের (Online Game) সঙ্গে আজ সকলেই পরিচিত। কিন্তু এই গেমের নেশায় বুঁদ হয়ে যুব সমাজ লক্ষ লক্ষ টাকা খোয়াচ্ছে। সবসময় যে প্রতারিত হচ্ছে তা নয়, গেমের ভারচুয়াল উপকরণ কিনতে খরচ করছেন প্রচুর টাকা। যা রীতিমতো সামাজিক ব্যাধির আকার নিয়েছে। সাংসারিক অশান্তি থেকে আত্মহত্যা, সবই ঘটছে এই কারণে। আর এই প্রবণতাকে রুখতে সচেতনতাকেই হাতিয়ার করছে পুলিশ প্রশাসন।
মোবাইলের ১০ ইঞ্চি স্ক্রিনের মধ্যেই সমস্ত জগৎ। আর এই ভারচুয়াল মাধ্যমে অমোঘ আকর্ষণে থেকে বেরিয়ে আসা দুঃসাধ্য হয়ে উঠছে। বিশেষ করে কমবয়সী ছেলেমেয়েদের মধ্যে অনলাইন গেমস-এর নেশা বেড়েই চলেছে। শুধু কী তাই, গেমে মজেছেন রোজগেরে যুবকদেরও। আর এই গেমের ফাঁদে পা দিয়ে প্রচুর টাকা নষ্ট করছেন তাঁরা। নষ্ট করা সেই অর্থের পরিমাণ শুনলে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যাবে।
মূলত অনলাইনে ফ্রি ফায়ার, ব্যাটেল ফিল্ড, সিওসি, পাবজি এই ধরনের গেমেরই বেশি চল রয়েছে। সেই গেমগুলিতে বিভিন্ন পর্যায় রয়েছে। ধাপে-ধাপে পর্যায়গুলি পেরতে হয়। এই অ্যাকশন গেম খেলার জন্য বেশকিছু ভারচুয়াল উপকরণ কিনতে হয়। যার জন্য প্রচুর টাকার প্রয়োজন। উপকরণগুলি কিনলে তবেই গেমের পরবর্তী পর্যায়ে যাওয়া সহজ হয়। আর তাই অর্থের বিনিময়ে একের পর এক উপকরণ কেনার নেশায় বুঁদ হয়েছে যুবসমাজ।
এক বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত বর্ধমানের রায়ানের বাসিন্দা সুমিত মুখোপাধ্যায় অনলাইন গেম খেলছেন ৫ বছর ধরে। কাজের ফাঁকে অথবা রাত্রে বাড়ি ফিরে বন্ধুদের সঙ্গে স্কোয়াড বানিয়ে অনলাইনে গেম খেলেন তাঁরা। সুমিত জানিয়েছেন, এই গেম খেলতে গিয়ে ইতিমধ্যে প্রায় ২ লক্ষ টাকা খরচ করেছেন। আর এক যুবক কালনার ব্যবসায়ী অসিত বিশ্বাস বলেন, “অনেকদিন ধরে এই গেম খেলে আসছি। এর মধ্যে ৮০ হাজার টাকা খরচ করে ফেলেছি।” বর্ধমানের বাসিন্দা মনোজিৎ সরকার ২ বছর ধরে অনলাইনে গেম খেলছেন। তিনি ইতিমধ্যে ২০ হাজার টাকা খরচ করেছেন।
পূর্ব বর্ধমান জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যাণ সিংহ রায় বলেন, “জেলা পুলিশের সাইবার শাখায় এই সংক্রান্ত যাবতীয় অভিযোগের সমাধান করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন শিক্ষাঙ্গনে প্রচার চালানো হয়। ছোট ছোট ভিডিওর মাধ্যমে অনলাইনেও সতর্কতামূলক প্রচার করা হয়।”
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.