গৌতম ব্রহ্ম: এবার অঙ্ক কষে হৃদরোগের পূর্বাভাস দেবে নয়া স্কোর অ্যাপ। হৃদরোগে আক্রান্ত হলে অনেক ক্ষেত্রেই রোগীর চিকিৎসার সুযোগ মেলে না। ফলে দ্রুত এবং অজান্তে হানা দেয় মৃত্যু। ‘নন কমিউনিকেবল’ রোগে একশো জন মারা গেলে দেখা যায়, তার ৩০% হার্ট অ্যাটাকের শিকার। এই ভয়ংকর পরিস্থিতির মোকাবিলায় মাইক্রোসফটকে সঙ্গে নিয়ে গবেষণা শুরু করে অ্যাপোলো হাসপাতাল। উদ্দেশ্য, কীভাবে হৃদরোগের আগাম পূর্বাভাস দেওয়া যায়। ২০১০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গবেষণা, তথ্য সংগ্রহের পালা চলে। অবশেষে আবিষ্কার হয় ‘আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ রিস্ক স্কোর’। সংক্ষেপে এআইসিভিডি রিস্ক স্কোর।
[ আরও পড়ুন: প্রকাশ্যে স্যামসং Galaxy A50s-এর লুক, ফিচারগুলি জানলে প্রেমে পড়ে যাবেন ]
চিকিৎসকদের দাবি, এই যুগান্তকারী প্রযুক্তি বলে দেবে কোনও ব্যক্তির হৃদরোগের সম্ভাবনা ঠিক কতটা। শুক্রবার হায়দরাবাদে শুরু হয়েছে অষ্টম আন্তর্জাতিক রোগী সুরক্ষা সম্মেলন। আয়োজক অ্যাপোলো হাসপাতাল। এখানেই নয়া প্রযুক্তিকে নিজেদের ঘেরাটোপ থেকে বাইরে আনার কথা ঘোষণা করে অ্যাপোলো কর্তৃপক্ষ। চেয়ারম্যান পদ্মবিভূষণ ডা. প্রতাপ রেড্ডি জানান, স্বাস্থ্য পরিষেবাকে নিখুঁত এবং সহজলভ্য করতে আরও বেশি করে প্রযুক্তির আশীর্বাদ দরকার। ইতিমধ্যেই দিল্লির এইমস এবং লখনউয়ের কিং জর্জ মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে শুরু করেছে। রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, জীবনযাত্রার মান, পরিবেশ,
খাওয়াদাওয়া-সহ ২১ বিষয় পর্যালোচনা করে ডাক্তারবাবুরা বলে দিচ্ছেন, আগামী সাত বছরের মধ্যে রোগীর হৃদরোগ হওয়ার সম্ভাবনা কতটা।
[ আরও পড়ুন: এবার বাড়িতে বসেই তোলা যাবে টাকা, নয়া পরিষেবা চালু করল ভারতীয় ডাক ]
এদিন মাইক্রোসফট ইন্ডিয়ার ম্যানেজিং ডিরেক্টর অনিল বনশালিকে সঙ্গে নিয়ে হৃদরোগ জানান দেওয়ার এই নয়া প্রযুক্তির দরজা বাকিদের জন্য খুলে দেন অ্যাপোলো গুপের জয়েন্ট ম্যানেজিং ডিরেক্টর ডাঃ সঙ্গীতা রেড্ডি। তিনি বলেন, ‘‘কাল থেকে অন্য হাসপাতালগুলিও শর্তসাপেক্ষে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবে।’’ তাঁর পর্যবেক্ষণ, ‘‘বহু কাছের মানুষকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মরতে দেখেছি। এই স্কোর অ্যাপ হৃদরোগের সম্ভাবনা অনেক কমিয়ে দেবে। ৮৫% নির্ভুল পূর্বাভাস দেবে।’’ এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন অ্যাপোলোর কার্ডিয়াক ক্লাবের ডিরেক্টর ডাঃ জে শিব কুমার। তিনি জানান, এই পদ্ধতিতে দু’টি স্কোর নেওয়া হবে। অপটিমাম এবং এগজ্যাক্ট স্কোর। বয়স এবং ওজন অনুপাতে রিস্ক স্কোর কতটা হওয়া উচিত, তা প্রথমে দেখা হবে। তারপর রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, খাওয়াদাওয়া, পারিবারিক ইতিহাস-সহ ২১টি বিষয় বিবেচনা করে রিস্ক স্কোর মাপা হবে। দু’টি স্কোরে ফারাক বেশি মানে হৃদরোগের সম্ভাবনা বেশি। কলকাতার বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, ডাঃ
সুনীলবরণ রায় অ্যাপোলোর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তাঁর মতে, বেশি প্রযুক্তিনির্ভর হতে গিয়ে রোগীর সঙ্গে ডাক্তারদের দূরত্ব যেন বেড়ে না যায়। এদিন এই বিষয়ে সেমিনারে এক বিতর্ক সভার আয়োজন করা হয়। এখানেও ডাক্তারদের একাংশ এই আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.