ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: বাসরঘরের ছিদ্রপথে ঢুকেই কালনাগিনী প্রাণ নিয়েছিল লখিন্দরের। তখন দাওয়াই পাওয়া যায়নি। এখন চিকিৎসা বিজ্ঞানের দৌলতে রাজ্যের সব ব্লক ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বাধ্যতামূলক সর্পঘাতের ‘আরোগ্যসেতু’ মিলেছে। কিন্তু সেই অ্যান্টিভেনমের (Antivenom) লৌহবাসরেও যদি ছিদ্র থাকে? তাহলে তার সুরাহার বিশেষ উপায় নেই। বস্তুত, সাপে কাটা (Snake bite) রোগীর প্রাণ বাঁচানোর মোক্ষম দাওয়াই থাকা সত্ত্বেও স্রেফ তথ্য সমন্বয়ের অভাবে তা পুরোপুরি কাজে লাগানো যাচ্ছে না বলে অভিযোগ। প্রয়োজনের সময় অ্যান্টিভেনম পেতে কোথায়, কতদূর যেতে হবে, গ্রামগঞ্জের মানুষজন তা ঠিকমতো জানতেই পারেন না। এবার থেকে যাতে সহজেই সেসব তথ্য থাকে তাঁদের কাছে, তার সুরাহা মিলবে এই সপ্তাহে। পশ্চিমবঙ্গের জনচিকিৎসায় যা এক বিশেষ পদক্ষেপ বলে দাবি করছে স্বাস্থ্যদপ্তর।
স্বাস্থ্যভবন, তথ্য প্রযুক্তি দপ্তর ও আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ (RG Kar Medical College) হাসপাতালের ‘পয়জন ইনফরমেশন অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টার’ একযোগে তৈরি করেছে একটি বিশেষ অ্যাপ (App)। সর্প দংশনের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সেটি মুশকিল আসান হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করছে কয়েকটি মহল। মোবাইলে ডাউনলোড করলে তা জানিয়ে দেবে নিকটবর্তী কোন ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কতগুলি অ্যান্টিভেনম সিরাম মজুত রয়েছে। দংশনকারী সাপ সম্পর্কে রোগীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আর জি করের বিশেষজ্ঞরা বলে দেবেন, সাপটি বিষধর কি না। সেইমতো চিকিৎসা চলবে।
ভরা বর্ষার রাতে সাপের কামড়ে অসুস্থ রোগী একরাশ মৃত্যুভয় ও উৎকন্ঠা নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে দৌড়ে বেড়াতে হবে না। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডাক্তার অজয় চক্রবর্তীর কথায়, “পাহাড় থেকে সুন্দরবনের প্রান্তিক মানুষের কাছে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবা নিখরচায় পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নানাবিধ কাজ হচ্ছে। এটি তারই অঙ্গ।” একইসঙ্গে তিনি বলছেন, যেসব প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে রোগী ভরতির ব্যবস্থা বা শয্যা আছে, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বাধ্যতামূলক অন্তত একটি সাপে কাটার ওষুধ মজুত থাকে। যাতে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার সুযোগ থাকে। এর কোনও অন্যথা হবে না।”
স্বাস্থ্যভবন সূত্রে খবর, রাজ্যের বিষধর রোগীর রক্ত সংগ্ৰহ করে টেস্ট টিউবে কুড়ি মিনিট পর যদি রক্ততঞ্চন হয়, তবে ধরে নেওয়া হয় সেটি নির্বিষ সাপ। সব ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এই ব্যবস্থা চালু আছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.