সুরজিৎ দেব, ডায়মন্ডহারবার: গঙ্গাসাগর মেলায় না গিয়েও এবার বাড়িতে বসেই সেই আমেজে মেতে উঠতে পারবেন দশনার্থীরা। কারণ, এবারই প্রথম গঙ্গাসাগর মেলায় কপিলমুনির মন্দিরের পুজো-আরতি এবং মেলা চত্বর জুড়ে ঘটা সমস্ত ঘটনাই লাইভ দেখা যাবে ফেসবুক ও ইউটিউব লাইভে। অভিনব উদ্যোগ সুন্দরবন জেলা পুলিশের।
সুন্দরবন পুলিশের ফেসবুক এবং ইউটিউব পেজে জিএমএস অ্যাপের মাধ্যমে গঙ্গাসাগর মেলার এই লাইভ ছবি দেখানোর ব্যবস্থা করেছে সুন্দরবন জেলা পুলিশ। এছাড়াও মেলা চলাকালীন বিভিন্ন জায়গায় জায়ান্ট এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমেও দেখানো হবে পূজার্চনা এবং মেলা চত্বরের যাবতীয় দৃশ্যাবলীর সেই লাইভ ছবি।
সুন্দরবন জেলার পুলিশ সুপার বৈভব তিওয়ারি বুধবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানিয়ে বললেন, “সুন্দরবন পুলিশের ফেসবুক এবং ইউটিউব পেজে এবং জায়ান্ট এলইডি স্ক্রিনে লাইভ দেখা যাবে কপিলমুনির মন্দিরের পূজার্চনা, আরতি এবং মেলাচত্বরে ঘটা সমস্ত ঘটনার লাইভ ছবি। এজন্য মন্দিরে বসানো হচ্ছে সিসিটিভি ক্যামেরা। এবং মেলা চত্বরের বিভিন্নস্থানে ১৫টি জায়ান্ট এলইডি স্ক্রিন।” তিনি জানান, এবার গঙ্গাসাগর মেলায় গতবারের তুলনায় নজরদারি আরও জোরদার করতে ‘গঙ্গাসাগর মেলা সহায়তা অ্যাপ’ নামেও যে জিএমএস অ্যাপ পুলিশের তরফ থেকে গতবার চালু করা হয়েছিল, এবার সেই অ্যাপ আরও আপডেট করা হয়েছে। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড প্লে স্টোর এবং আইওএস স্টোর থেকে ডাউনলোড করতে হবে। বাংলা, হিন্দি, ইংরেজি, ওড়িয়া, মারাঠি ও তেলেগু এই ছ’টি ভাষায় ব্যবহার করা যাবে অ্যাপটিকে।
অ্যাপের মাধ্যমে পুণ্যার্থীরা মেলা প্রাঙ্গণের মানচিত্র, সাগরদ্বীপে আসা ও যাওয়ার ট্রাভেল রুট, মেলায় নিখোঁজদের তালিকা, পুলিশের নানা উপদেশাবলী, ওয়েদার আপডেট, ট্রেন ও ভেসেলের নির্দিষ্ট সময় এবং জোয়ার-ভাঁটার সময় ইত্যাদি সবকিছুই জানতে পারবেন। এছাড়াও ওই অ্যাপের মাধ্যমে পুলিশের কন্ট্রোলরুমগুলিতে সরাসরি ডায়াল করেও পুণ্যার্থীরা তাঁদের অসুবিধার কথা জানাতে পারবেন। ওই অ্যাপেই পাওয়া যাবে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগের নির্দিষ্ট হেল্পলাইন নম্বরগুলি।
পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, গতবারের তুলনায় এবার মেলার নজরদারি আরও জোরদার করা হচ্ছে। বসানো হচ্ছে ২৫০টি সিসিটিভি ক্যামেরা। খুব কাছ থেকে নজরদারি চালাতে থাকছে ১২টি ড্রোন। ২৩টি অ্যান্টি ক্রাইম নজরদারি দল, আতঙ্কবাদের মত হুমকির মোকাবিলায় ৮টি কুইক রেসপন্স টিম, ডিসপোসাল স্কোয়াড এবং পূণ্যার্থীদের সাহায্য করতে ৪৪টি পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র। এছাড়াও মুড়িগঙ্গায় দুর্ঘটনা এড়াতে লঞ্চে দিনরাত নজরদারি, লট নম্বর ৮, কচুবেড়িয়া ঘাট, নামখানা ও গঙ্গাসাগরে বিপর্যয় মোকাবিলা দল এবং ১৫টি পুলিশ কন্ট্রোল রুমের ব্যবস্থা থাকছে। মোতায়েন রাখা হচ্ছে দশহাজার পুলিশ কর্মীকে।
সাগরদ্বীপে চলাচল করা সমস্ত বাস এবং কচুবেড়িয়া থেকে লট নম্বর ৮-এর মধ্যে মুড়িগঙ্গা নদীতে চলাচল করা বার্জ ও ভেসেলে জিপিএস ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। বাস, ভেসেল ও বার্জের অবস্থান জানার জন্যই এই ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে পুলিশ সুপার জানান। তিনি বলেন, সাগরদ্বীপে মেলা চলাকালীন বাসের গতি নিয়ন্ত্রণে বসানো হচ্ছে স্পিড লিমিটিং ডিভাইস সিস্টেমও। ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে মেলা চত্বরের পুলিশ কন্ট্রোলরুমগুলিতে অপটিক্যাল ফাইবার কেবলের মাধ্যমে তৈরি করা হচ্ছে ওয়াইফাই জোন। যাতে সহজেই পুলিশকর্মী ও আধিকারিকদের মধ্যে যোগাযোগ সহজ হয়।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.