ফাইল চিত্র।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ব্রেনের নির্দেশ মেনে কাজ করবে কৃত্রিম হাত। অর্থাৎ দুর্ঘটনায় হাত কাটা পড়লে কিংবা প্যারালাইসিসের জন্য অকেজো হয়ে গেলে যদি কৃত্রিম হাত লাগানো হয় তাহলে ফের আগের মতোই সচল হয়ে যাবে জরুরি অঙ্গটি। এমনই অভাবনীয় এক আবিষ্কার করেছেন আইআইটি কানপুরের গবেষকরা।
এতদিন কৃত্রিম হাত বসানো হলেও তা মস্তিষ্কের নির্দেশমতো স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে পারত না। শুধুমাত্র অকেজো হাতের গঠন নষ্ট হওয়ায় সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য প্রতিস্থাপিত করা হত কৃত্রিম হাত। কিন্তু এই আবিষ্কৃত রোবটের মতো হাতটি ব্রেনের তরঙ্গ বুঝে নিয়ে তা কম্পিউটার সিগন্যালে রূপান্তরিত করে। তারপর কম্পিউটারাইজড কৃত্রিম হাতটি সেই ব্রেনের তরঙ্গের পাঠানো কাজটি সম্পন্ন করে। এই সিস্টেম নিয়ে কাজ করা ব্রিটেনের এসেক্স ইউনিভার্সিটির ডা. হায়দর রাজা বলেন, “স্ট্রোকের কারণে প্যারালাইসিস বা শিরদাঁড়ায় আঘাতের কারণে ব্রেনের কিছু নার্ভ খারাপ হয়ে গেলে হাতের স্বাভাবিক শক্তি নষ্ট হয়ে যায়। এর ফলে সেই ব্যক্তি দৈনন্দিন কাজ করতে পারেন না। এঁদের জীবন সচল হবে আমাদের প্রযুক্তির সাহায্যে। নিজে হাতে জলের গ্লাস ধরে পান করা, মোবাইল স্ক্রিনে কিছু টাইপ করার মতো কাজ করতে পারবে এই রোবটিক হাত।” ব্রেন কম্পিউটার ইন্টারফেস (বিসিআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে এই কাজ সম্পন্ন হয়। বিসিআই এমন একটা প্রযুক্তি যার দ্বারা কৃত্রিম হাতে বসানো কম্পিউটারাইজড যন্ত্রটি ব্রেনের তরঙ্গ বুঝে হাতটি নাড়ায়।
বর্তমানে প্যারালাইসিস রোগী বা হাত নাড়াতে সক্ষম নন এমন ব্যক্তিকে সচল করানোর চেষ্টার জন্য ফিজিওথেরাপিস্টরা ‘কল্পনা’ পদ্ধতিটি কাজে লাগান। এক্ষেত্রে রোগীর স্থবির হয়ে যাওয়া হাতের মুভমেন্ট বাড়াতে তাঁকে কল্পনা করতে বলা হয় যে তিনি হাত নাড়ছেন। কেউ হয়তো হাত নাড়ছেন বলে ভাবলেন, তাতে তাঁর ব্রেনের একটি নির্দিষ্ট অংশ চঞ্চল হয়ে ওঠে। ওই অংশই হাতকে নড়ার জন্য নির্দেশ পাঠায়। কিন্তু স্ট্রোক বা অন্য কারণে ব্রেনের ওই অংশের ক্ষতির কারণে অংশটি সচল থাকত না। নিয়মিত কল্পনা করতে করতে মস্তিষ্কের অংশটি ফের সচল হয়ে ওঠে। ডা. হায়দার রাজার কথায়, “এই কল্পনা করে অঙ্গ সঞ্চালনা করাটা সব সময় সফল হয় না। তখন বিসিআই প্রযুক্তির প্রয়োজন হয়। ব্রেনের তরঙ্গ দেখে বুঝে নেবে মস্তিষ্ক হাত দ্বারা কোন কাজটি করতে চাইছে। এরপর কম্পিউটরের মাধ্যমে সেই তরঙ্গ সংবাদ রোবটিক হাতে পৌঁছে যাবে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এই পদ্ধতিযুক্ত কৃত্রিম হাত বাজারে এসে যাবে বলে আশাবাদী আইআইটির গবেষকরা। যে কোনও দুর্ঘটনা বা অসুখে হাতের কর্মশক্তি কমে গেলেও এই চিকিৎসার মাধ্যমে তা যে আগের মতোই প্রায় করে দেওয়া সম্ভব, সেই দাবি করলেন ডা. রাজা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.