সুপ্রিয় মিত্র: কথায় বলে দুনিয়া চলে ‘গিভ অ্যান্ড টেক’ পলিসিতে। কিন্তু পুজো শেষ, দীপাবলি-ধনতেরাসে দেওয়াথোয়ায় পকেট এখন হাওয়া মহল। তাহলে দুনিয়া কি চলবে না বাঙালির? কিন্তু, আরও একটা কিন্তু আছে যে! দুনিয়া এখন প্রযুক্তি মন্ত্রেও আন্দোলিত। বছরে বছরে প্রযুক্তি পাল্টাচ্ছে। আসলে পাল্টাচ্ছে তো বেশ আগে থেকেই। বাজারে আসতে, মূলত ভারতের বাজারে আসতে খানিক সময় লেগেই যায়। তদুপরি, বিশ্বায়ন পরবর্তী এই সময়, কিছুই আর অলভ্য নয়। বছর শেষ হয়ে এল। নতুন বছর শুরু হতে না হতেই বাজারে আরও কতশত প্রযুক্তি আসতে চলেছে। আর যেহেতু, নতুন প্রযুক্তি আসন্ন, বছর শেষ মানেই ছোটখাট ইলেকট্রনিক্স সেল লেগেই থাকে। সেই সুযোগকে হাতছাড়া করতে চাইবে না নিশ্চয়ই কোনও ‘টেক ফ্রিক’-ই। বছর শেষে এসেছে এবার দু’টি মারাত্মক গ্যাজেট।
স্মার্টলাইট
সেভাবে দেখলে, বাঙালির বারোমাসে তেরো পার্বণ আপাতত এই নভেম্বরের শেষে তলানিতে। তাতে চোদ্দোতম পার্বণ বড়দিন। অর্থাৎ, আলো ক্রমে আসিতেছে। এই আদুল শীতে একঘেয়ে সাদা, হলুদ আলো যদি হঠাৎ বেগুনি বা লাল বা নীল হয়ে জ্বলে উঠত… মন্দ হত না। কিন্তু তার জন্য আলাদা আলাদা রঙের বাল্ব চাই, ঘরে এত্তগুলো ফিটিং পয়েন্ট চাই। একটাই বাল্বে কি তা সম্ভব হবে? কেল্লা ফতে। স্মার্টলাইটে তা সম্ভব বইকি। নির্দিষ্ট রংই নয়, যে কোনও রং যেমন খুশি ভাবে আনা যেতে পারে। এবং, তা শুধু আপনার স্মার্টফোনের টাচে রং বদলাতে থাকবে। আরও আছে। বাড়িতে পার্টি বা নিজেরই হঠাৎ দুলে উঠতে ইচ্ছে করে, সেই আলোও গানের তালে তালে রং বদলাবে, জ্বলবে-নিভবে। ইচ্ছেমতো লাইটের ব্রাইটনেস কমাতে-বাড়াতেও পারা যাবে। এমনকী, ভয়েজ কমান্ডেও কর্তব্য পালন করবে কথামতো এই বাল্ব। ঘর থেকে বেরিয়ে গেলে নিজে থেকেই বন্ধ হয়ে যাবে, আবার ঘরে ঢুকলে জ্বলে উঠবে ফের। এমনতর স্মার্টলাইট বাজারে এনেছে বেশ কিছু কোম্পানি।
ফিলিপ্স কোম্পানি সম্প্রতি বাজারে এনেছে ফিলিপ্স হিউ, ফিলিপ্স স্ট্রিপ। ‘হিউ’-এর তিনটে বাল্বের সেট বা স্টার্টার কিট। আর ‘স্ট্রিপ’ ঘরজোড়া লম্বা আলোর দড়ি। ফিলিপ্স হিউয়েরই একটা আলোর সেট রয়েছে। এছাড়া, রয়েছে উইপ্রো, সিসকা কোম্পানির স্মার্টলাইটও।
মিররলেস ক্যামেরা
পয়েন্ট অ্যান্ড শুট ক্যামেরা ক্যারি করতে সুবিধে। কিন্তু তাতে ডিএসএলআর ক্যামেরার মতো ডিটেল পাওয়া যায় না। কিন্তু ডিএসএলআর বওয়া মানে হাতি পোষা। সঙ্গে থাকতে হবে গুচ্ছের লেন্স। সাধারণ গড়পড়তা অ্যামেচার ফটোগ্রাফার বা ফ্যামিলি গ্যাদারিং ধরা যাক, অত ঝক্কি কেন চাইবে? সেই ভেবে, পয়েন্ট অ্যান্ড শুট ক্যামেরার সাইজ আর ডিএসএলআর মাফিক লেন্স বদল করার সুবিধে নিয়ে বাজারে নেমেছে দশ নম্বর জার্সি নিয়ে মিররলেস ক্যামেরা। ক্যামেরার মার্কেটে এই ডিভাইস এখন অপ্রতিরোধ্য। এমনকী, সিনেমা বানানোর ক্ষেত্রেও এই ক্যামেরা লাজবাব।
সো নি আইএলসিই-৭এমআর৩। ৪২ এমপি ক্যামেরা। ফোটোগ্রাফির ডিটেল মনে হবে থ্রিডি ইমেজ। ভিডিওগ্রাফি নিয়ে কোনও কথা হবে না। সেন্সর অসামান্য। সঙ্গে এর অনন্য ইমেজ স্টেবিলাইজেশন। ফুজিফিল্ম এক্স-টি২০, লেইকা ১৮১৯৭ ভি-লাক্স। সোনি আলফা ৬,৩০০, ৬,০০০। এর দু’রকম সেট আছে। ‘এল’ এবং ‘ওয়াই’। ‘এল’ মডেলে একটাই লেন্স থাকবে ১৬-৫০ এমএম। আর ‘ওয়াই’ মডেলে ১৬-৫০ এবং ৫০-২১০ দুইরকম লেন্সই থাকবে। এছাড়া রয়েছে ফুজিফিল্ম এক্স-এ১০, ক্যানন পাওয়ার শট জি৭এক্স, নিকন এ৯০০।
মিররলেস ক্যামেরা বাদ দিয়ে এই মুহূর্তে আরও যে ক্যামেরা বাজার মাতিয়েছে, তা হল ইনস্ট্যান্ট ক্যামেরা। ছবি তোলামাত্র প্রিন্ট বেরিয়ে আসবে। এর দাম ধর্তব্যের মধ্যেই। তবে খুব ভাল ছবি উঠবে, আশা করা বৃথা। ভাল আলোয় ছবি ভালই আসবে। অন্ধকারের কথা অন্ধকারেই থেকে যাওয়ার সুযোগ বেশি। ফুজিফিল্মের ‘ইনস্ট্যাক্স’ সিরিজের মডেলগুলো, এইচপি এসপি-রকেট ইনস্ট্যান্ট ক্যামেরা বেশ লোভনীয়। বাচ্চাদের ফটোগ্রাফিতে মজা পাওয়াতে এই ক্যামেরা অব্যর্থ গিফট।
এছাড়াও আছে ড্রোন ক্যামেরা। সেলফি তোলা থেকে শুরু, পাখির চোখে ঘুরে বেড়ানোর ভিডিও করার ক্ষেত্রে এই ক্যামেরা এখন বেশ জনপ্রিয়। অনেক উঁচুতে ওড়াতে গেলে যদিও সরকারি নথিপত্র লাগে, যেটা সিনেমার ক্ষেত্রে হয়। কিন্তু এমনিতে কমসম উচ্চতায় চালিয়ে আনন্দ নেওয়ায় কোনও অসুবিধে নেই। সঙ্গে হাওয়ায় এরোপ্লেন ওড়ানোর মজা তো ফ্রি রইলই। বিভিন্ন ছোটখাট কোম্পানির ড্রোন ক্যামেরা সুলভেই এখন অনলাইন শপিং সাইটে উপলব্ধ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.