গৌতম ব্রহ্ম: মাত্র আধঘণ্টা। তাতেই বাজার থেকে কিনে আনা শাক-সবজি, ফলমূল জীবাণুমুক্ত হয়ে যাবে। করোনা (Coronavirus) থাকলে তাকে নিস্ক্রিয় করে দেবে এই যন্ত্র। কোভিডকে জব্দ করার এহেন যন্ত্র বের করে আলোড়ন ফেলে দিয়েছেন রহড়া রামকৃষ্ণ মিশন বিবেকানন্দ সেন্টেনারি কলেজের বটানি বিভাগের বায়োকন্ট্রোল ও ক্যান্সার ইউনিটের অধ্যাপক ড. স্বপনকুমার ঘোষ।
তাঁর এই নতুন উদ্ভাবন নিয়ে আমেরিকার কর্ণেল ইউনিভার্সিটি সম্প্রতি একটি গবেষণাপত্রও প্রকাশ করেছে। তাতে যন্ত্রের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে। স্বপনবাবু জানালেন, বাজার থেকে কেনা শাক-সবজি, ফল-মূল থেকে করোনা ছড়াচ্ছে বলে অনেকে মনে করছেন। সেগুলি জীবাণুমুক্ত করতে গিয়ে প্রচুর জল খরচ হচ্ছে। এই অপচয়ও রুখে দেবে এই মেশিন। সেই সঙ্গে দূর করবে দুশ্চিন্তা। এখন মানুষ অনলাইনে প্রচুর কেনাকাটা করছেন। সেগুলিও এই মেশিনে স্যানিটাইজ হয়ে যাবে সহজে। দাবি স্বপনবাবুর।
গবেষণাপত্রে উল্লেখ, এই যন্ত্র আধঘণ্টায় শাক-সবজি করোনামুক্ত করে দেবে। যন্ত্রের কার্যকারিতা যাচাই করতে ‘লাইভ ভাইরাস’ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষাও চালিয়েছেন স্বপনবাবু। জানিয়েছেন, কোভিড পজিটিভ (COVID positive) রোগীর দেহ থেকে করোনা ভাইরাসকে আলাদা করে ভেরো ই-৬ সেললাইনে কালচার করা হয়। সক্রিয়তা মাপা হয়। তারপর লোড বাড়িয়ে সেই ভাইরাসকে যন্ত্রে রাখা হয়। আধঘণ্টা পর ভাইরাসকে বের করে ফের সেললাইনে ফেলা হয়। দেখা যায়, ভাইরাস নিস্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে। আক্রমণ করার ক্ষমতা হারিয়েছে।
যন্ত্রের পেটেন্টের জন্য মাসখানেক আগে আবেদন জানিয়েছেন স্বপনবাবু। ‘সংবাদ প্রতিদিন’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক-বিজ্ঞানী জানালেন, আমেরিকার ‘সেন্ট্রাল ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রোটেকশন’ মান্যতা দিয়েছে ‘মাল্টিমডেল অ্যাপ্রোচ’-এ তৈরি করা এই যন্ত্রকে। করোনা মারতে আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি, উত্তাপ ও তামা-অ্যালমুনিয়ামের মতো মেটাল ব্যবহার করা হয়েছে। উত্তাপ বাড়ানোর জন্য পেপার হিটার ব্যবহার করা হয়েছে। যন্ত্রটি বানাতে দু’মাস সময় লেগেছে। ম্যানুয়াল ও অটোমেটিক- দু’টি ফরম্যাটেই চলবে যন্ত্রটি। ম্যানুয়ালের দাম পাঁচ থেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। অটোমেটিকের দাম পড়বে আট থেকে ন’হাজার টাকার মধ্যে। এর আগে স্বপনবাবু প্লাস্টিকখেকো ব্যাকটেরিয়ার হদিশ দিয়ে সাড়া জাগিয়েছিলেন বিজ্ঞানী মহলে। এবার উপহার দিলেন করোনা জব্দ করার যন্ত্র।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.