ছবি প্রতীকী
ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: কলকাতায় অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য গ্রিন করিডর চালু হচ্ছে। এমনই সিদ্ধান্ত নবান্নের। পরিবহণ, পুলিশ, স্বাস্থ্য ও রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ যৌথভাবে এই উদ্যোগ নিয়েছে। চার দপ্তরের এই উদ্যোগের সবুজ সংকেত মিলেছে নবান্ন থেকে। শহরের যানজটে অ্যাম্বুল্যান্স আটকে রোগীর নাজেহালের ঘটনার খবর মাঝেমধ্যেই নবান্নে আসে। নবান্নের উদ্যোগে পুলিশ গ্রিন করিডর করে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকজন রোগীকে হাসপাতালে দ্রুত পৌঁছে দিয়েছে। প্রাণ ফিরে পেয়েছেন মুমূর্ষু রোগী। নবান্নের শীর্ষকর্তাদের বক্তব্য, যানজটে অ্যাম্বুল্যান্স যাতে কোনওভাবেই আটকে না থাকে তার পথ বাতলাতে সরকারের শীর্ষকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বস্তুত, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই চার দপ্তর একযোগে কোমর বাঁধে। তৈরি হয়েছে গ্রিন করিডরের রূপরেখা। নতুন বছরের শুরুতেই এই উদ্যোগ কার্যকরী হবে বলে জানিয়েছেন নবান্নের আধিকারিকরা।
এখন দেখা যাক, কীভাবে কাজ করবে গ্রিন করিডর?
নবান্ন সূত্রে খবর, চার দপ্তর যৌথভাবে তৈরি করছে নতুন অ্যাপ। উন্নতমানের সফটওয়্যার প্রযুক্তিতে তৈরি নয়া অ্যাপ থাকবে কলকাতা পুলিশ-সহ চার দপ্তরেই। প্রথম দফায় পরীক্ষামূলকভাবে কলকাতার কয়েকটি সরকারি হাসপাতালকে বেছে নেওয়া হবে। সবকিছু ঠিক চললে ক্রমশ তা গোটা রাজ্যে চালু করা হবে। ফলে সরকারি হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়া নিয়ে যেমন হয়রানি অনেকটাই কমবে, তেমনই রোগীর পরিবারের উদ্বেগও অনেকটাই কমবে। সরকারি আধিকারিকদের বক্তব্য, বাড়ি থেকে রোগী নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া পর্যন্ত গোটা প্রক্রিয়াটি হবে অ্যাপের নজরদারিতে। অত্যাধুনিক সফ্টওয়্যার ব্যবহার করে নতুন অ্যাপ যেমন সংশ্লিষ্ট অ্যাম্বুল্যান্সের চালকের ফোনে থাকবে, তেমনই থাকবে পুলিশ কন্ট্রোলরুমে। অ্যাম্বুল্যান্স রাস্তায় বেরোলেই গ্রিন করিডর করবে পুলিশ। সেই রাস্তায় ওই সময়ে অন্যান্য যানবাহনেরও গতিবিধি ঠিক করা যাবে। অ্যাম্বুল্যান্স রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় হুটার বাজানোর দরকার পড়বে না। এমনকী হাসপাতালে ঢোকার সময়ও অ্যাম্বুল্যান্স হুটার বাজাবে না।
নবান্নের এক শীর্ষকর্তার কথায়, নতুন পদ্ধতিতে সংশ্লিষ্ট সরকারি হাসপাতালের অ্যাম্বল্যান্সের নম্বর চালকের ফোন নম্বর-সহ অন্যান্য তথ্য ওই অ্যাপে যুক্ত করা হবে। রোগী নিয়ে ওই অ্যাম্বুল্যান্স রাজপথে নামলেই সংশ্লিষ্ট থানা অন্য থানাগুলিকে সতর্ক করবে। দ্রুত এগিয়ে যাবে অ্যাম্বুল্যান্স। এটা যেমন একটা দিক, তেমনই অ্যাম্বুল্যান্সের মধ্যে রোগী সেজে কোনও অপরাধী গা-ঢাকা দিয়ে পালাতে পারবে না। কারণ সব অ্যাম্বুল্যান্সই থাকবে পুলিশের নজরদারিতে। রোগী নিয়ে যাওয়ার স্থায়ী সমাধান সূত্র খুঁজতেই নতুন পদ্ধতি চালু করতে চলেছে পুলিশ, স্বাস্থ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ও কলকাতা পুলিশ। সরকারি আধিকারিকদের বক্তব্য, দেশের কয়েকটি হাতে গোনা শহরে স্থায়ী গ্রিন করিডর করে হাসপাতালে রোগী নিয়ে যাওয়ার সুবিধা রয়েছে। রাজ্য প্রশাসন চাইছে রোগী স্বার্থে গোটা রাজ্যে এই পদ্ধতি চালু করতে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.