সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মোদি (Narendra Modi) জমানায় নতুন ট্রেন্ড। দেশের যে কোনও প্রান্তে রাজনৈতিক, ধর্মীয় বা অন্য কোনও কারণে কোনও রকম উত্তেজনা বা দাঙ্গার পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেই ওই এলাকার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। বিক্ষোভ বা অশান্তি দমনে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেওয়াটাকে একটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে সরকার। কারণ, আজকের টেকস্যাভি যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার করেই হিংসা বেশি ছড়াচ্ছে দুর্বৃত্তরা। এঁদের রুখতে শুধু কেন্দ্র নয়, বিভিন্ন রাজ্য সরকারও ব্যবহার করেছে ইন্টারনেট বন্ধের অস্ত্র। যা কিনা দেশের সামাজিক সংহতি তো বটেই অর্থনীতির জন্যও বড় বিপদ ডেকে আনছে। সম্প্রতি এক সমীক্ষায় সেই তথ্যই উঠে এসেছে।
ইন্টারনেট পরিষেবা সংক্রান্ত সংস্থা টপ টেন ভিপিএন (Top ten VPN) সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। যাতে বলা হয়েছে, গত ৪ বছরে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে ৪০০-রও বেশি বার। যার ব্যাপক প্রভাব পড়েছে দেশের অর্থনীতিতেও। হিসেব অনুযায়ী, ২০২০ সালে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মোট ৮ হাজার ৯২৭ ঘণ্টা ইন্টারনেট বন্ধ ছিল। তাতে ভারতের প্রায় ২৭০ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে। বর্তমান মূল্য ধরলে যে পরিমাণ ক্ষতি ভারতের হয়েছে, তার পরিমাণ প্রতি ঘণ্টায় ২ কোটি টাকা করে। দেশে ইন্টারনেট বন্ধের সাম্প্রতিক উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে দিল্লির কৃষক বিক্ষোভকে। গত ১ মাসেই দেশে সাতবার ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে। এর মধ্যে হরিয়ানার কয়েকটি এলাকাতেই বন্ধ হয়েছে ৫ বার। এই এলাকাগুলি মূলত রাজধানী দিল্লি সংলগ্ন। ২৬ জানুয়ারি কৃষক বিক্ষোভের পরও বন্ধ করা হয়েছিল ইন্টারনেট পরিষেবা। যা কিনা এই মুহূর্তে আন্তর্জাতিক ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রশ্ন উঠছে, গণতান্ত্রিক দেশে এইভাবে ইন্টারনেট বন্ধ করে রাখাটা কতটা শোভনীয়? কারণ, গত বছর কাশ্মীরে ইন্টারনেট বন্ধ সংক্রান্ত একটি মামলায় খোদ সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) জানিয়েছিল, শিক্ষা, ধর্ম এবং স্বাধীনতার মতো ইন্টারনেট পরিষেবাও নাগরিকদের মৌলিক অধিকারের মধ্যেই পড়ে। যার অর্থ, ইন্টারনেট বন্ধ করা মানে মৌলিক অধিকার খর্ব করা। প্রশ্ন উঠছে, সরকার এভাবে নাগরিকদের ‘মৌলিক’ অধিকার খর্ব করতে পারে কিনা? দেশের তথাকথিত বুদ্ধিজীবী মহলের একাংশ অসহিষ্ণুতা নিয়ে বারবার সরব হন। তাঁদের উদ্বেগ যে নেহাতই অমূলক নয় তা আরও একবার বোঝা গেল ইন্টারনেট বন্ধ সংক্রান্ত এই পরিসংখ্যানে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.