অভিরূপ দাস: অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। ৯ টাকা দরে মিলছে আলু-পিঁয়াজ। পাঁচশো টাকার বেশি কেনাকাটা করলে অভিরূপ দাস আলুর দাম নেমে আসছে মাত্র ছ’টাকা প্রতি কেজিতে। সপ্তাহে সাতদিন সকাল ৭টা থেকে ৯টার মধ্যে এই অফার রেখেছে সুইগি ইন্সটামার্ট।
পরিশ্রম শূন্য। পকেটও হালকা হচ্ছে কমসম। কষ্ট করে বাজারে গিয়ে যে দামে আলু-পিঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ঘরে বসে পাওয়া যাচ্ছে তার অর্ধেকেরও কম দামে। সুইগি, ইন্সটামার্টের ‘নয়া অফার’ নিয়ে হুড়োহুড়ি-কাড়াকাড়ি। যার জেরে ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে বাজারের চেনা ছবি।
ভিড় হালকা হচ্ছে। অনলাইনেই বাজার করছে নতুন প্রজন্ম। বহর দেখে, হাতে স্মার্টফোন নিয়ে অনলাইন বাজারের দিকে ঝুঁকছে তাদের বাবা-কাকারাও। ধাক্কাধাক্কি নেই। দর কষাকষি নিয়ে হালকা ঝগড়াঝাঁটি নেই। ছুটির রবিবারের বাজারও বসছে মুঠোফোনে। চায়ে চুমুক দিতে দিতে এক ক্লিকে আলু-পিঁয়াজ-শশা-গাজর কিনছে ‘উত্তর-আধুনিক’ বাঙালি। জোর প্রতিযোগিতা সুইগি-ব্লিঙ্কিট-ফ্লিপকার্ট গ্রসারি-অ্যামাজন ফ্রেশ, জেপ্টোর মতো অনলাইন কেনাকাটার সাইটগুলোর মধ্যেও। এতদিন ছিল, কে কত তাড়াতাড়ি পণ্য পৌঁছে দেয়।
এখন তাদের মধ্যে ‘প্রাইস-ওয়ার।’ তারই ফলশ্রুতি সুইগির নতুন স্কিম। ২১ টাকার আলু, ২৫ টাকার পিঁয়াজ মাত্র ন’টাকায়! অনলাইন সাইটের এই প্রতিযোগিতার ফলে মধ্যবিত্তর বাজার খরচও কমছে। আমজনতার হাতে এসেছে একাধিক বিকল্প। এদিকে, বাজারের আলু বিক্রেতা-পাড়ার মুদি দোকানি চিন্তায়। প্রতিযোগিতা এখন এতটাই শক্ত, ইচ্ছেমতো লাভ করার দিন সমাগত। বেশি দাম চাইলেই বাড়ির পথে ক্রেতা। “রাখুন মশাই। আমি অনলাইনে কিনে নেব।”
রবিবার সকালে এমন কথা শুনলেন অনেক দোকানি। ওই সাতটা থেকে ন’টা, মাত্র ন’টাকায় পাওয়া যাচ্ছিল এক কেজি আলু! অনেকের উৎসুক প্রশ্ন, “কী করে এত কম দামে আলু বিক্রি হচ্ছে অনলাইনে?” ভেবে উঠতে পারছেন না রাজ্য সরকারের টাস্ক ফোর্সের সদস্য রবীন্দ্রনাথ কোলে। তাঁর কথায়, “আমরাও খবর পেয়েছি অনলাইনে অর্ধেকের কম দামে আলু বিক্রি হচ্ছে। মাত্র ছ’টাকায় এক কেজি আলু বিক্রি হয়েছে সুইগি ইন্সটামার্টে। এখন বাজারে আলুর দাম ১৮ টাকা প্রতি কেজি। খোঁজখবর নিচ্ছি কীভাবে তারা এই দামে বিক্রি করল।”
তবে কি চাষিরা সঠিক দাম পাচ্ছেন না? রবীন্দ্রনাথবাবুর কথায়, “এখন সরাসরি চাষিদের থেকে মাল কেনে বড় বড় অনলাইন ব্যবসায়ীরা।” অনেকে মনে করছেন, অন্য কোনও পণ্যে একটু বেশি লাভ রেখে বাজারের চেয়ে কম দামে আলু বিক্রি করছে অনলাইন বিক্রেতারা। যেমন অনলাইনে অনেক জায়গায় একটা ডাব ৭৯ টাকা, প্রসাধনী সামগ্রীর চড়া দাম। অনেকের ধারণা, অন্যান্য পণ্যে লাভ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় আলু-পিঁয়াজ কম দামে বিক্রি করে ক্ষতি পুষিয়ে নিচ্ছে অনলাইন বিক্রেতারা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.