সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অচেনা ব্যক্তির পাঠানো লিংক ক্লিক করলেই বিপদ, এই সতর্কবার্তাও ‘পুরনো করে দিল’ সাইবার জালিয়াতরা। এখন ‘চেনা ব্যক্তি’র পাঠানো মেসেজ ক্লিক করলেও বিপদ। মুহূর্তের মধ্যে হ্যাক হয়ে যেতে পারে হোয়াটস অ্যাপ। হ্যাক হওয়ার কারণে যে সময়টুকুর জন্য ব্যবহারকারীর হোয়াটস অ্যাপ বন্ধ, সেই সময় কাজে লাগিয়ে পরিচিতদের মেসেজ পাঠিয়ে টাকা তোলার চেষ্টা করছে সাইবার অপরাধীরা। অনেক ক্ষেত্রে টাকা তুলেও ফেলছে। প্রত্যেকদিন কলকাতার বিভিন্ন থানা ও ডিভিশনের সাইবার বিভাগে বেশ কয়েকটি করে হোয়াটস অ্যাপ হ্যাকের অভিযোগ দায়ের হচ্ছে। এই ব্যাপারে লালবাজারের পক্ষ থেকে কলকাতা পুলিশের থানাগুলিকেও সতর্ক করা হয়েছে।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, বিভিন্ন সোশাল মিডিয়া থেকে ব্যবহারকারীদের নাম ও ফোন নম্বর জোগাড় করছে সাইবার অপরাধীরা। সোশাল মিডিয়া থেকে তাঁদের পরিচিত ও বন্ধুদের নামও জোগাড় করছে তারা। এর পর বন্ধুর নাম করে ও ডিপিতে তাঁর ছবি দিয়েই ব্যবহারকারীকে মেসেজ করছে হোয়াটস অ্যাপে। ব্যবহারকারী তাঁর বন্ধুর অন্য নম্বর মনে করে চ্যাট করা শুরু করতেই কোনও শুভেচ্ছার মেসেজ বা অন্য মেসেজের সঙ্গে সঙ্গে লিঙ্ক পাঠিয়ে ক্লিক করতে বলছে সাইবার অপরাধীরা। তিনি বন্ধু বা পরিচিতর মেসেজ মনে করেই বিশ্বাস করে ক্লিক করছেন লিংকে। ক্লিক করার পরই ব্যবহারকারী দেখছেন, তাঁর হোয়াটস অ্যাপ আর কোনও কাজ করছে না। তিনি কিছু দেখতেও পারছেন না। এই পদ্ধতিতেই হ্যাক হয়ে যাচ্ছে হোয়াটস অ্যাপ।
এবার নতুন করে ‘খেল’ শুরু করছে সাইবার অপরাধীরা। তারা হ্যাক করার পর ব্যবহারকারীর হোয়াটস অ্যাপের নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে নিজের দখলে। সাইবার অপরাধী ব্যবহারকারীর হোয়াটস অ্যাপের ভিতর গিয়ে টার্গেট করছে গ্রুপগুলিকে। যে গ্রুপে ব্যবহারকারী বেশি চ্যাট করেন, সাইবার অপরাধী নিজেকে ব্যবহারকারী পরিচয় দিয়ে লিখছে, হঠাৎই সে বিপদে পড়েছে। এখনই তার কিছু টাকার প্রয়োজন। কোনও সময় জানাচ্ছে, সে নিজে বিপদে পড়েছে। আবার কখনও দাবি করছে, বড় বিপদের মুখে তার পরিবারের লোকেরা। এতে অনেকেই হতবাক হয়ে যাচ্ছেন। অনেক সময়ই তাড়াতাড়ি ভুয়ো ব্যবহারকারীর দেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিচ্ছেন টাকা। এভাবে কারও বা পাঁচ হাজার, কারও বা কুড়ি হাজার টাকাও খোয়া যাচ্ছে। আবার এমনও হয়েছে, অনেকে টাকা দিতে গিয়েও দেননি।
তাঁদের মধ্যে কেউ ব্যবহারকারীকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করছেন, তিনি কী ধরনের বিপদে পড়েছেন? বন্ধু বা পরিচিতদের ফোন পেয়ে আকাশ থেকে পড়ছেন ব্যবহারকারী। এরপরই অভিযোগ দায়ের হচ্ছে সাইবার থানা বা ডিভিশনের সাইবার সেলে। পুলিশের পরামর্শ, কোনও পরিচিত ব্যক্তি যদি অচেনা নম্বর থেকে ফোন করে চ্যাট করেন, তবে যেন ব্যবহারকারী ফোন করে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্ট করেন, সত্যিই ওই ব্যক্তির নতুন নম্বর কি না। আবার কেউ গ্রুপ বা ব্যক্তিগতভাবে টাকা চাইলে যেন টাকা না দিয়ে পুলিশকে জানানো হয়, এমনই পরামর্শ দিচ্ছে লালবাজার।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.