অর্ণব আইচ: ভুয়ো ওয়েবসাইটের ফাঁদ! কালীপুজো বা দীপাবলির আগে সস্তায় বাজি বা আলো কেনার পরিকল্পনা থাকলে সাবধান। ওই ফাঁদে পা দিলে সর্বস্বান্ত হতে পারেন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যেতে পারে পুরো টাকা। এ ছাড়াও অনলাইনে দীপাবলির কেনাকাটা করে টাকা মেটাতে গিয়েও শহরবাসীরা পড়তে পারেন সাইবার জালিয়াতির ফাঁদে। তাই এখন থেকেই শহরবাসীকে সতর্ক করছে লালবাজার।
সম্প্রতি কালীপুজোর উদ্যোক্তাদের নিয়ে সমন্বয় সভায় দীপাবলির আগে শহরবাসীকে সাইবার জালিয়াতি নিয়ে সতর্ক করেন পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা। পুলিশ কমিশনারের পরামর্শ, যদি কেউ জালিয়াতের ফাঁদে পা দিয়ে টাকাও দেন, তিনি যেন সঙ্গে সঙ্গেই বিষয়টি পুলিশকে জানান। অল্প সময়ের মধ্যে অভিযোগ পেলে পুলিশ অভিযোগকারীকে টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে। কিন্তু দেরি হয়ে গেলে তা করা সম্ভব হবে না। তাই অনলাইনে টাকা দেওয়ার ব্যাপারে শহরবাসীকে সতর্ক করেন পুলিশ কমিশনার।
লালবাজারের সূত্র জানিয়েছে, উৎসবের আগে বিভিন্নভাবে ফাঁদ পাতে সাইবার জালিয়াতরা। কালীপুজো ও দীপাবলির আগে অনেকেই অনলাইনে বাজি ও আলো কেনার পরিকল্পনা করেন। এবার পরিবেশবান্ধব সবুজ বাজি ছাড়া অন্য কোনও আতশবাজি বা শব্দবাজি রাজ্যে নিষিদ্ধ। ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই রকমারি সবুজ বাজির সম্ভার ফুটে উঠছে কম্পিউটার বা মোবাইলের স্ক্রিনে। বহু ওয়েবসাইটই অত্যন্ত সস্তায় আকর্ষণীয় বাজি বিক্রির অফার দিচ্ছে। লালবাজারের গোয়েন্দাদের দাবি, সস্তায় অনলাইনে বাজি কেনার আগে ভালো করে ওয়েবসাইটটি যাচাই করতে হবে। কারণ, ভুয়ো ওয়েবসাইটে দেওয়া ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে অনলাইনে টাকা পাঠালে তা পৌঁছে যাবে জালিয়াতদের ‘মিউল’ অ্যাকাউন্টে। আবার টাকা পাঠানোর জন্য জালিয়াতরা কিউআর কোড পাঠাতে পারে। ওই কিউআর কোড স্ক্যান করলেই বিপদ।
সাইবার জালিয়াতরা ওই কিউআর কোডের মাধ্যমেই হাতিয়ে নিতে পারে অনেক বেশি টাকা। আবার এমনও দেখা গিয়েছে যে, এভাবে টাকা হাতানোর পর কেউ ওই ওয়েবসাইটে দেওয়া নম্বরে ফোন করেছেন। ফোনের ওপারে থাকা ব্যক্তিটি রীতিমতো দুঃখপ্রকাশ করে বলেছেন, অতিরিক্ত টাকা তাঁকে এখনই ফেরত দেওয়া হবে। তাঁকে ব্যাঙ্কের অনলাইন লেনদেনে দশ টাকা পাঠাতে বলা হয়। তিনি টাকা পাঠাতেই ওই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নম্বর জেনে জালিয়াত পুরো টাকা তুলে ফাঁকা করে দেয় অ্যাকাউন্ট। আবার কিউআর কোড পাঠিয়ে একটি বিপুল টাকার পরিমাণ লিখে বলা হয়, ওই টাকা তাঁকে ফেরত দেওয়া হচ্ছে। অভিযোগকারী সেই কোড স্ক্যান করে ফেলেন। কিন্তু তিনি বুঝতেও পারেন না যে, ওই পুরো পরিমাণ টাকাই তাঁকে ফেরত দেওয়ার বদলে তাঁর অ্যাকাউন্ট থেকে হাতিয়ে নেওয়ার ছক কষেছে সাইবার জালিয়াত।
লালবাজারের মতে, অনলাইনে বাজি বা আলো কেনার জন্য সার্চ ইঞ্জিনে গিয়ে জিনিসগুলির খোঁজ না করাই ভালো। তার বদলে বাজি বা আলো বিক্রির আসল ওয়েবসাইটে গিয়ে খোঁজ করাই উচিত। ওয়েবসাইট দেখে যদি সন্দেহ হয়, সঙ্গে সঙ্গেই সেখান থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। একইভাবে অনলাইনে টাকা পাঠানোর আগে সাবধান হতে হবে। সেই ক্ষেত্রে অচেনা ব্যক্তি বা সংস্থার পাঠানো কিউআর কোড স্ক্যান করলে বিপদ ঘনিয়ে আসতে পারে। তাই টাকা পাঠানোর আগে অত্যন্ত সতর্ক হতে হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.