ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: এমনিতেই করোনার হামলায় নাজেহাল অবস্থা। লকডাউন করে করোনার মোকাবিলা করছে দেশ। স্কুল, কলেজ, অফিস কাছারি সব বন্ধ। তবে এই অচলাবস্থা কিছুটা সামাল দিয়েছিল ইন্টারনেট। লকডাউনে ঘরে বসেই অফিসের কাজকর্ম থেকে স্কুলের পড়শোনা চলছিল এতদিন। কিন্তু সুপার সাইক্লোন আমফান সে ব্যবস্থাকেও শিকেয় তুলে দিয়েছে। বুধবার থেকে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছে বিদ্যুৎ, টেলিফোন ও ইন্টারনেট পরিষেবা। যার জেরে ওয়ার্ক ফ্রম হোম তো বন্ধই। শহর কলকাত-সহ বহু জায়গাতেই থমকে গিয়েছে ব্যাংক, এটিএম, হাসপাতালের মতো জরুরি পরিষেবাও।
দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত আমফান যে তাণ্ডব চালিয়েছে, তাতে লক্ষ লক্ষ বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। বহু মোবাইলের টাওয়ার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত ইন্টারনেট তো দূর, ফোনেও যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। শনিবার থেকে কিছু কিছু জায়গায় ফোনে কানেকশন মিললেও, ইন্টারনেট বা বিদ্যুৎ আসেনি। তাই চরম অসুবিধায় সাধারণ মানুষ। পেশায় ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার সোমনাথ চক্রবর্তী। তিনি বলছিলেন, “একটি প্রোজেক্টের কাজে কেনিয়া যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু লকডাউনের জেরে তা সম্ভব হয়নি। অপাতত বাড়িতে বসেই ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজ করছিলাম। কিন্তু গত তিনদিন ধরে সেটিও বন্ধ।”
সুকিয়া স্ট্রিট এলাকার বাসিন্দা পিয়ালী দাস নামে এক গৃহবধূ বলেন, “ছেলে ক্লাস নাইনে পড়ে। প্রাইভেট টিউটর অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছিলেন। কিন্তু ঝড়ের জন্য সেটাও বন্ধ। তিনদিন ধরে কারেন্ট নেই। ফোন কাজ করছে না। ইন্টারনেট বন্ধ। এই পরিস্থিতি কবে ঠিক হবে বোঝা যাচ্ছে না।” ঝড় শেষ হাওয়ার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শনিবার পর্যন্ত শহর এবং শহরতলির এটিএম ঘুরে দেখা হয়। অধিকাংশ জায়গাতেই বিদ্যুৎ না থাকায় মেশিন বন্ধ। কোনও কোনও জায়গায় মেশিন চললেও, ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন। ব্যাংকেও একই অবস্থা। এখন সমস্ত ব্যাংকই ইন্টারনেটের মাধ্যমে কাজকর্ম চালায়। জেনারেটের চালিয়ে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করলেও, অধিকাংশ জায়গাতেই ইন্টারনেট না থাকায় গ্রাহকদের পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি।
বেশ কিছু বেসরকারি হাসপাতালেও এখন ব্যাংকের মতো ইন্টারনেটে ভরতি-সহ বেশ কিছু পরিষেবা দেওয়া হয়। সব বন্ধ। রাজ্যের বহু জায়গাতেই মোবাইলের টাওয়ার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার জেরে ফোন এবং ইন্টারনেটের এই অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে। এই পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে এখনও বেশ কিছুদিন সময় লাগবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এমন অবস্থায় ব্যাংক এটিএমের মতো অত্যাবশ্যক পরিষেবাগুলি বন্ধ থাকলে কীভাবে চলবে তাই ভেবে কূল করতে পারছেন না সাধারণ মানুষ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.