সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বিক্রম হারিয়ে যায়নি। নিখোঁজ হওয়ার দেড় দিনের মধ্যে চন্দ্রযান ২-এর ল্যান্ডার বিক্রমের সন্ধান দিয়ে তা প্রমাণ করে দিল ইসরো। চন্দ্রযানের অরবিটার অত্যাধুনিক ক্যামেরার মাধ্যমে তুলে আনল বিক্রমের ‘থার্মাল ইমেজ’। অত্যাধুনিক যে প্রযুক্তি মহাকাশ বিজ্ঞানে নয়া দিশা দেখিয়েছে, সেই ‘থার্মাল ইমেজিং’ পদ্ধতিই কাজে এল ইসরোর।
বিক্রমের সন্ধান পাওয়ার পর অনেকেই বলছেন, দেড় দিন পর আশার আলো দেখল ইসরো। একথা যে শুধু আক্ষরিক তাই নয়। এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাও আছে। যে থার্মাল ইমেজিং-প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইসরো বিক্রমের সন্ধান পেয়েছে, সেই প্রযুক্তির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত আলো এবং উষ্ণতা। কোনও বস্তুর উত্তাপ মেপেই তাকে শনাক্ত করতে পারে এই থার্মাল ইমেজিং প্রযুক্তি।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রত্যেক বস্তুর একটা নিজস্ব উষ্ণতা আছে। সেটা মানুষ, পশু-পাখি বা জড় পদার্থ, যাই হোক। এই উষ্ণতাকে কোনও কোনও ক্ষেত্রে লীনতাপও বলা হয়। প্রত্যেক বস্তুর এই অভ্যন্তরীণ তাপেরই বহিঃপ্রকাশ হয় উষ্ণতা বা তাপমাত্রা হিসেবে। যে বস্তুর অভ্যন্তরে এই তাপমাত্রা যত বেশি তার উত্তাপও তত বেশি। প্রত্যেক বস্তুর অভ্যন্তরের এই তাপকে ‘হিট সিগনেচার’ বলা হয়। ‘থার্মাল ইমেজার‘ বা থার্মাল ক্যামেরা, এই হিট সিগনেচারের সুক্ষ্ম পার্থক্যও শনাক্ত করতে পারে। এককথায় কোনও বস্তুর উষ্ণতা যদি অন্য কোনও বস্তুর থেকে আলাদা হয় তাহলে সেই বস্তুটিকে আলাদা করে চিনতে পারে এই থার্মাল ইমেজার বা ক্যামেরা। থার্মাল ইমেজারে সাধারণত বেশি গরম বস্তুর উজ্জ্বল ছবি তুলতে পারে। উষ্ণ বস্তুর সাধারণত হলুদ বা কমলা রংয়ের ছবি সৃষ্টি হয় থার্মাল ইমেজিংয়ে। অপেক্ষাকৃত শীতল বস্তুর ছবি ওঠে নীল রংয়ের।
এই থার্মাল ইমেজিং পদ্ধতির মাধ্যমেই চন্দ্রপৃষ্ঠে বিক্রমকে খুঁজে পেয়েছে ইসরো। চন্দ্রপৃষ্ঠের সঙ্গে বিক্রমের তাপমাত্রার পার্থক্য অনেকটাই। তাই সহজেই, তাকে শনাক্ত করা গিয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.