ছবি: প্রতীকী
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: চিনা (China) হ্যাকারদের ফাঁদ কিন্তু এখনও পাতা রয়েছে ভারতে। ভ্যাকসিন এবং বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের পাশাপাশি এবার তাদের নজর ভারতের বন্দর ক্ষেত্রের উপরেও। এমনকী এখনও চলছে ‘হ্যাকার হামলা’। এমনটাই জানাচ্ছে একটি মার্কিন সংস্থা।
দিন কয়েক আগেই জানা যায় দেশের বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে ম্যালওয়ার ঢুকিয়ে দিয়ে মুম্বইয়ের পাওয়ার গ্রিড বসিয়ে দিয়েছিল চিনা নেট-হামলাকারীরা। পরের পর্বে তথ্য মেলে ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক সংস্থা সেরাম এবং ভারত বায়োটেকের নেটওয়ার্ক সিস্টেমের ভিতরেও হামলা চালিয়েছিল হ্যাকাররা। আর বন্দর ক্ষেত্রে এখন সক্রিয় রয়েছে চিনা হ্যাকাররা। অন্তত একটি ক্ষেত্র এখনও তাদের দখলে রয়েছে বলেই দাবি মার্কিন সংস্থার। তাদের তথ্য অনুযায়ী, ‘রেকর্ডেড ফিউচার’ নামের নজরদারি সংস্থা একটি ‘হ্যান্ডশেক’ খুঁজে পেয়েছে যা ইঙ্গিত বহন করছে, চিনের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে এমন গোষ্ঠী ও ভারতীয় বন্দর (Port) ক্ষেত্রের মধ্যে ‘তথ্য আদানপ্রদান’ হয়েছে। এমনই জানিয়েছেন সংস্থার চিফ অপারেটিং অফিসার স্টুয়ার্ট সলোমন।
‘রেডইকো’ এবং ‘রেকর্ডেড ফিউচার’, দুই সংস্থার নজরেই বিষয়টি আসে ১০ ফেব্রুয়ারি। তাদের বক্তব্য, ভারতের বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের অন্তত দশটি গ্রিড তাদের দখলে চলে গিয়েছিল। এবং ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুসারে, এখনও পর্যন্ত এই ‘কানেকশন’-গুলির মধ্যে বেশ কয়েকটি সক্রিয় রয়েছে বলেও জানিয়েছেন সলোমন। তাঁর বক্তব্য, ‘হামলাকারী ও আক্রান্তের’ মধ্যে ‘এখনও’ সংযোগ রয়েছে। অর্থাৎ আক্রান্ত বিদ্যুৎ ক্ষেত্রগুলির মধ্যে সবকটিই এখনও নিরাপদ নয়। তবে কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। অপর দিকে চিনের বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেন, “কোনও প্রমাণ ছাড়াই এমন মন্তব্য করা দায়িত্বজ্ঞানহীন এবং অসদুদ্দেশ্যমূলক আচরণ।”
দেশের বিভিন্ন পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিদেশি হ্যাকারদের হামলার খবর গত বছরের মাঝামাঝি থেকে শোনা যাচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহ কেন্দ্র, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র, পেট্রো শোধনাগার এমনকী, পরমাণু শক্তিকেন্দ্রগুলিকেও নিশানা করছে তারা। প্রযুক্তি-ক্ষতিকারক ভাইরাস ছড়িয়ে সেগুলিকে কাবু করে ফেলছে তারা, এমন খবর ছড়ায়। এবং হ্যাকিংয়ের অভিযোগের আঙুল উঠছে বেজিংয়ের দিকে।
গালওয়ানের লড়াইয়ের পরই বেজিং ভারতকে অন্যপথেও আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়। এর জন্য মুম্বইকে বেছে নেয় তারা। প্রায় সর্বত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলির প্রযুক্তিতে ঝাঁকে ঝাঁকে চিনা ম্যালওয়্যার ঢুকে পড়ে। শুধু তা-ই নয়, ওই একই দিনে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন একটি বিদ্যুৎ সাব-স্টেশন এবং একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রযুক্তিতেও ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ তাদের। তবে এদের মধ্যে সবকটিকেই অ্যাক্টিভেট করা হয়নি। তাই দেশজুড়ে বিভ্রাট ছড়িয়ে পড়েনি। সবক’টি ম্যালওয়্যার সক্রিয় করা হলে গোটা দেশে আরও বড় সংকট নেমে আসত।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.