ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: দেখতে হুবহু আংটির মতো। কিন্তু আংটি নয়। আদতে একটি সফটওয়্যার। যেখান থেকে রোগীর সামান্যতম উপর্সগ হলেও সর্তক করছে রোগী, তাঁর পরিজন এমনকী এসএসকেএমের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের। দ্রুত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে। পাশাপাশি এসএসকেএমের সিটিভিএসের তথ্য ভাণ্ডারে জমা হচ্ছে রোগীর শারীরিক সব তথ্য!
দিল্লির এইমসের পর এসএসকেএমই দেশের দ্বিতীয় সরকারি হাসপাতাল যেখানে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হল। গত দু’মাসে অন্তত ২০ জন সুস্থ হওয়ার পর তাঁদের আঙুলে বিশেষ এই আংটি পরানো হয়েছে। এসএসকেএমের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, অত্যন্ত ফলপ্রসূ এই সফটওয়্যার। রোগীকে যেমন অসুস্থ হলে সতর্ক করছে তেমনই হাসপাতালের সিটিভিএসের তথ্যভাণ্ডারেও তাঁদের শারীরিক অবস্থা প্রতি মুহূর্তে সংরক্ষণ করা হচ্ছে।
দেখতে আংটির মতো হলেও এটির বৈজ্ঞানিক নাম ‘আবিদ’। আংটির মধ্যে রয়েছে ব্লু টুথ। রয়েছে বিশেষ ধরনের সফটওয়্যার। গুগল স্মার্টওয়াচের মতো কাজ করে ‘আবিদ’। হাসপাতালের সিটিভিএসের অধ্যাপক ডা. শান্তনু দত্তর কথায়, ‘‘আংটির মতো এই যন্ত্রে রোগী ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক-সহ দশজনের নম্বর যুক্ত থাকে।’’ এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘রোগীর শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা, পালসরেট, রক্তচাপ, হার্ট ফেলিওরের মতো সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে মোবাইলে সঙ্কেত দেয়।’’ কয়েকমাসের মধ্যে সুগার-সহ আরও কয়েকটি সমস্যার অ্যাপ যুক্ত করা হবে। ড্রাগ কন্ট্রোল জেনারেল অফ ইন্ডিয়া এবং স্বাস্থ্য ভবনের অনুমোদন নিয়েই এই পদক্ষেপ নিয়েছে এসএসকেএম। স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, আগামী দিনে রাজ্যের সব সরকারি হাসপাতালে এই প্রযুক্তি কৌশল ব্যবহার করা যায় কি না তা-ও এবার খতিয়ে দেখা হবে।
রোগী নিঃসঙ্গ থাকলে অথবা সেই সময়ে সঙ্গে কেউ না থাকলে এসএসকেএমের সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে মোবাইল অ্যালার্ট করবে। এসএসকেএম সূত্রে খবর, বিশ্বের যেকোনও জায়গায় বসে সংশ্লিষ্ট রোগীর শারীরিক সমস্যার কথা জানতে পারবেন চিকিৎসক-সহ দশজন। এসএসকেএম সূত্রে খবর, আপাতত একশো জনকে আংটি দেওয়া হবে। এখনও পর্যন্ত কোনও বেসরকারি হাসপাতালকে ব্যবহারের অনুমতি দেয়নি স্বাস্থ্যমন্ত্রক। অন্তত দশ বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে পরিষেবা দেবে। সরকারি হাসপাতালে নিখরচায় মিলছে। ছুটি দেওয়ার সময় অন্যান্য ওষুধের সঙ্গে একটি চার্জারও দেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসকদের অভিমত, আংটি নামক এই সফটওয়্যার পরে থাকলে রোগীর সব তথ্যই যদি ডাক্তারবাবুর মোবাইলে থাকে তবে অহেতুক হাসপাতালে আসার প্রবণতা কমবে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.