Advertisement
Advertisement

টিন এজ সন্তানকে সামলাতে মা-বাবার কী করা উচিত?

জানাচ্ছেন মনোবিদ ডাঃ অনির্বান দত্তআরও পড়ুন:ত্বক শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে? শীতের চার মরশুমি ফলের ফেসপ্যাকেই হবে বাজিমাতঅসমাপ্ত মেসেজ উড়ে যাওয়ার ভয় আর নেই! হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে এল নয়া ফিচার Advertisement কিশোর আবেশ দাশগুপ্তর রহস্যমৃত্যুর ঘটনা বাঙালি সমাজকে বেশ কিছু প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে৷ যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক, কিন্তু আবেশের মৃত্যুতে মা-বাবার সন্তানপালনের ধরন নিয়েও প্রশ্ন জেগেছে৷ বয়ঃসন্ধির […]

Some tips parents should follow when dealing with teenagers
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 3, 2016 5:41 pm
  • Updated:June 11, 2018 3:58 pm

জানাচ্ছেন মনোবিদ ডাঃ অনির্বান দত্ত

কিশোর আবেশ দাশগুপ্তর রহস্যমৃত্যুর ঘটনা বাঙালি সমাজকে বেশ কিছু প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিয়েছে৷ যে কোনও মৃত্যুই দুঃখজনক, কিন্তু আবেশের মৃত্যুতে মা-বাবার সন্তানপালনের ধরন নিয়েও প্রশ্ন জেগেছে৷ বয়ঃসন্ধির মুহূর্তে সন্তানের কোন কোন বিষয়ের উপর খেয়াল রাখতে হবে, কোন ক্ষেত্রে জোরাজুরি করলে হিতে বিপরীত হতে পারে, তা নিয়ে নানা মুনির মত৷ হাজারো যুক্তির ভিড়ে খেয়াল রাখতে হবে কিছু মূল বিষয়৷

Advertisement

লক্ষণ দেখে সতর্ক হোন:

সন্তানের ব্যবহারের মধ্যে কোনও অস্বাভাবিকতা দেখা দিচ্ছে কি না খেয়াল করুন. কোন কোন লক্ষণ দেখে বুঝবেন-

  • আড়ালে চ্যাট করা, ফোনে দীর্ঘক্ষণ ও ঘনঘন কথা বলা, সারাদিন বারবার অনলাইন থাকা, বাড়িতে নিজেকে গুটিয়ে রাখা অথচ ফোনে আড্ডা দেওয়া, অজানা বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা করা, বাড়ির খাবার ফেলে প্রায়ই বাইরে পার্টি-পিকনিক করার মতো লক্ষণ ব্যবহারে দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে.
  • নানা অছিলায় টাকা চাওয়া, বন্ধুর অভিভাবকের অনুপস্থিতিতে তার বাড়িতে যাতায়াত-আড্ডা, পড়াশোনায় হঠাৎ অমনোযোগী ও রেজাল্ট খারাপ হওয়া, বাড়ির সবার সঙ্গে বদমেজাজ, দুর্ব্যবহার ও চিৎকার-চেঁচামেচি করা৷ সবকিছু অমান্য করার ঝোঁক, অনুভূতিপ্রবণ মনটা হঠাৎ যেন বিগড়ে যাওয়া, রাত করে ঘুমাতে যাওয়া আর সকালে দেরি করে ওঠা৷
  • পড়াশোনা, কেরিয়ার বাদ দিয়ে ঝোঁক বেশি বিসদৃশ সাজগোজে, এলোমেলো ভাবনা ও লাইফস্টাইল৷ স্কুলে কোনও সমস্যা থাকলেও বাড়িতে চুপচাপ থাকতে পারে৷ শেয়ার করতে বলুন৷

নজরদারি রাখতে কী করবেন:

  • বাচ্চাকে যেমন সব সময় চোখে চোখে রাখতে হয়, টিনএজার সন্তানের ক্ষেত্রে তেমন করার দরকার নেই৷ তবে জানতে চান কার সঙ্গে বাইরে যাচ্ছে, কোথায় যাচ্ছে, সেখানে আর কে কে থাকবে ইত্যাদি৷
  • যেসব বন্ধুর সঙ্গে সন্তান মিশছে তাদের চিনে রাখুন৷ কয়েকজনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন৷ প্রয়োজনে মাঝে মাঝে আপনার বাড়িতেই আড্ডা দিতে বলুন৷ আপনিও ওদের সঙ্গে কথা বলে বুঝে নিন মতিগতি৷
  • জন্মদিন বা কোনও পার্টি যার বাড়িতে হচ্ছে, তার অভিভাবকের সঙ্গে কথা বলে নিন৷ পার্টিতে কে কী খাচ্ছে তা যেন সেই বাড়ির অভিভাবক নজরে রাখেন৷ অ্যালকোহল, বিয়ার পানের অনুমতি দেবেন না৷
  • বাড়িতে এমন জায়গায় কম্পিউটার, ইণ্টারনেটের ব্যবস্থা রাখুন যাতে আপনি মাঝে মাঝেই স্ক্রিন দেখতে পান৷ দিনে আধ ঘণ্টার বেশি চ্যাট করতে দেবেন না৷ কার সঙ্গে চ্যাট করছে তা দেখে রাখুন৷ অপরিচিত কারও সঙ্গে চ্যাট করতে বারণ করুন৷
  • মোবাইলে ইণ্টারনেট পরিষেবা থাকলে নজরে রাখুন৷ আপনি কাছে গেলেই যদি মোবাইল লুকিয়ে ফেলে বা আড়ালে মোবাইল ব্যবহার করে তাহলে জানতে চান সে কী করছিল৷ প্রয়োজনে নিজে চেক করে নিন৷ ফোনের বিল, ইণ্টারনেটের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে রাখুন৷
  • বেশি মোবাইল ব্যবহার করলে ফোনটা নিয়ে নিন৷ আগামী দু’সপ্তাহের মধ্যে এমন একটি কাজ করার টার্গেট দিন যেটা করলে ফোন ফেরত পাবে৷ এতে ফোনের নেশা কমবে৷
  • অনেকের বাবা-মা স্মার্টফোন ব্যবহার করতে জানেন না কিংবা ইণ্টারনেটের খারাপ দিক নিয়েও সচেতন নন৷ এই বয়সে নিষিদ্ধ জগতের প্রতি কৌতূহলের বশে অনেক টিনএজারই পর্নোগ্রাফিক সাইট, অশ্লীল ছবি দেখে ফেলে৷ আগেকার দিনেও ছেলেরা এমন কাজ লুকিয়ে করত৷ কিন্তু এখন ইণ্টারনেটের দৌলতে এগুলো এত সহজলভ্য হয়ে গিয়েছে যে, বিষয়টি মারাত্মক রূপ নিচ্ছে৷ তাই স্মার্টফোনের ব্যবহার নিজে না শিখে ছোট ছেলেমেয়েদের হাতে কখনওই তুলে দেওয়া উচিত নয়৷

কী করবেন না:

নজরদারি মানেই কিন্তু সন্তানকে অবিশ্বাস নয়৷ প্রতি মুহূর্তে তাকে বুঝিয়ে দিন, আপনি তার ভাল চাইছেন৷ তাকে নিজের মতো বড় হওয়ার সুযোগও দিচেছন৷ অতিরিক্ত নজরদারি করলে, সন্দেহ করলে সন্তান বাবা-মাকে আরও বেশি করে সবকিছু গোপন করবে৷ সন্তানের সঙ্গে একটু একটু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করুন৷ তার মতামতকে গুরুত্ব দিন৷

মা-বাবার সহজপাঠ:

  • ছোট থেকেই সন্তানকে মূল্যবোধ শেখাতে হবে৷ একজন নীতিবান, আদর্শ ব্যক্তিকে অনুসরণ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করুন৷
  • যে কোনও জিনিসের ভাল-মন্দ নিয়ে খোলাখুলি আলোচনা করুন৷
  • সন্তানের মতিগতি বুঝতে চাইলে তার সঙ্গে নিয়মিত মানসিক যোগাযোগ থাকাটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ৷ ছোট থেকে শাসনে রাখার পর একটু বড় হলে সন্তানের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশতে চাইলে তা বাস্তবায়িত হবে না৷ এতে ছেলেমেয়েরা মোটেই সব কিছু শেয়ার করে না৷ অতিরিক্ত শাসন বা সন্তানের প্রতি কম নজর দেওয়া কোনওটাই বাবা-মায়ের করা উচিত নয়৷
  • রোজ একসঙ্গে দু’বেলা খাওয়া-দাওয়া করুন৷ জিজ্ঞেস করে নিন, সারাদিন সে আজ কী করল? সন্তানের কথা মন দিয়ে শুনুন৷ সেই সময় সে কোনও ভুল বা অন্যায় কথা বললে বকবেন না৷ পরে বুঝিয়ে বলুন৷ তা না হলে পরদিন থেকে কথা গোপন করতে চাইবে৷
  • বিদেশে সন্তান কোন ওয়েবসাইট ব্যবহার করবে সরকারি পরিষেবার সাহায্যে তার উপর অভিভাবকের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকে৷ বিভিন্ন্ অ্যাপস, সফটওয়্যারের মাধ্যমে তাঁরা জানতে পারেন ভার্চুয়াল জগতে ছেলেমেয়েরা কী করছে৷ এখানে এখনও তেমন পরিষেবা চালু হয়নি৷ কিন্তু গত চার-পাঁচ বছরে ইণ্টারনেট ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় আমাদের এখানে সরকারি স্তরেও এমন কিছু উপায় বের করা উচিত৷ তবে এখানেও আপনি ইচ্ছামতো ওয়েবসাইট ‘লক’ করে রাখতে পারেন৷ সেই ব্যবস্থার জন্য খোঁজ নিন৷
  • ছেলে-মেয়ে ফেসবুক করলে আপনিও তার ফ্রেন্ড লিস্টে থাকুন৷ বাড়িতে মদ্যপান নয়৷ কখনও করলেও সন্তানের সামনে পান করবেন না৷

এই রোগ ও তার প্রতিকার সম্বন্ধে আরও জানতে ক্লিক করুন epaper.sangbadpratidin.in বা ডাক্তারবাবুকে ফোন করুন এই নম্বরে- ০৩৩-৬০৬০১০৬৬

২০২৪ এর পূজা সংক্রান্ত সমস্ত খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের দেবীপক্ষ -এর পাতায়।

চোখ রাখুন
Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement