সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অনেকদিন হয়ে গেল কর্মসূত্রে একই সংস্থাতে রয়েছেন। একদা কথায় কথায় চাকরি বদলের নেশাটা এখন অনেকটাই থিতিয়ে এসেছে। তাই বলে ভাল বেতনের প্যাকেজ ও লোভনীয় সুযোগ সুবিধা পেলেও চোখ ফিরিয়ে থাকবেন! অভ্যাসে পরিণত হওয়া অফিসটাকে বদলের সুযোগ নেবেন না, এমনটা বোধহয় নয়। তবে সময় বদলেছে। কর্মক্ষেত্রে প্রতিযোগিতার আবহ এখন সেকেন্ডে বদলাচ্ছে। সেই পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে আপনি তৈরি তো? পারবেন তো উচ্চাকাঙ্খী জেনারেশন এক্স-ওয়াইয়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে? তাহলে তো একবার ঘষামাজা করতে হয়। সাধারণত Resume দিয়েই কাজটা শুরু হয়। প্রথাগত শিক্ষা ও পুরনো কর্মক্ষেত্রের (যদি অভিজ্ঞতা থাকে তো) তালিকা Resume-এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্যক্তিগত দক্ষতার ক্ষেত্রটি যদি মজবুত থাকে তাহলে অবশ্যই চাকরির ইন্টারভিউয়ে বেশি গুরুত্ব পাবে। নিয়োগকর্তার চোখে নিজেকে অপরিহার্য করে তুলতে চান, তাহলে নিম্নোক্ত দক্ষতার মাপকাঠি গুলো একটু ঝালিয়ে নিন।
[এবার প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে ফেসবুকে অশ্লীল পোস্ট করল ‘ডিজিটাল তারকাটা’]
টাইম ম্যানেজমেন্ট: সময়কে যে পাথেয় করতে পেরেছে সেই বাড়িয়ে নিয়েছে ব্যক্তিগত ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স। আজকের প্রতিযোগিতার বাজারে সময়কে মুঠোবন্দি করাটাই মুখ্য ব্যাপার। ইন্টারভিউ চলাকালীন নিয়োগকর্তাকে যদি নিজের সময়জ্ঞান দিয়ে ধরাশায়ী করতে পারেন তো আর কিছুর দরকারই নেই। কর্তৃপক্ষ সবকিছুর থেকে যেদিকে বেশি নজর দেয় তা হল দিনের শেষে প্রডাকশন কতটা হল। যে সংস্থাতেই থাকুন না কেন, অতি অল্প সময়ে যদি সেই সংস্থার উৎপাদন বাড়িয়ে দিতে পারেন, তাহলে আপনার উপরে ওঠা আটকায় কে। সুতরাং কত কম সময়ে আপনার কর্মক্ষমতা সংস্থার লাভকে আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে তার উপরে নির্ভর করবে আপনার প্রমোশন। ইন্টারভিউয়ের সময় যদি এই টাইম ম্যানেজেমেন্টে দক্ষতা দেখাতে পারেন তাহলে চাকরি একপ্রকার পাকা।
হাতের মুঠোয় সমাধান: Resume-এ একটা উদাহরণ রাখুন। কীভাবে কর্মক্ষেত্রে বিপদে পড়লে মাথা ঠান্ডা রেখে সমাধানসূত্র খুঁজে বের করতে হয়। সহকর্মী যদি অফিস সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজে কিছু বড়মাপের ভুলচুক করে ফেলেন তাহলে আপানাকেই সমাধান বাতলে দিতে হবে। কেন না আপনিই সেই ঠান্ডা মাথার মানুষ। যিনি বড় বিপদেও ভেঙে পড়েন না। প্রত্যেক সংস্থাই চায় ঝুঁকি নিয়ে সাফল্যের মুখ দেখতে। ঝুঁকি নিতে গিয়ে কোনও সংস্থা বিপদের সম্মুখীন হলে সব থেকে ঠান্ডা মাথার সমাধান প্রিয় কর্মীরই দরকার পড়ে। চাইলে এই জায়গাটা আপনি নিতেই পারেন।
দলবদ্ধভাবে কাজ করা: যদি ম্যানেজার পদের জন্য ইন্টারভিউ দিয়ে থাকেন তাহলে নেতৃত্ব দেওয়ার গুণ থাকাটা অত্যন্ত জরুরি। তবে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আপনি কোন পদের জন্য আবেদন করেছেন তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই। কেন না এর থেকেও বেশি জরুরি আপনি একটা টিমকে নিয়ে কাজ করতে পারেন কি না। কোনও চমকপ্রদ আইডিয়াকে বাস্তবে রূপ দিতে দিতে গেলে অনেক বেশি চিন্তা ভাবনার প্রয়োজন আছে। টিম ম্যান হয়ে কাজ করলে চিন্তাভাবনার ভাগীদার হিসেবে সহকর্মীদের পাবেন। আবার স্বাধীন মতামত দেওয়ারও সুযোগ পাবেন।
বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার ক্ষমতা: আমরা সকলেই জানি বিস্তারিত বিবরণ দেওয়ার ক্ষমতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ গুণ।পাশাপাশি এটাও জানি ছোটবড় সবকিছুর বিস্তারিত তথ্য আমাদের নখদর্পণে থাকে না। বিষয়টি বেশিরভাগ সময়ই Resume-এ উল্লেখ করতে আমরা ভুলে যাই। ইন্টারভিউতে নিয়োগকারীদের তরফে একটা প্রশ্ন প্রায়ই আসে, কত কম সময়ে আমরা গুরুত্বপূর্ণ কাজের ক্ষেত্রেও ছোট তথ্যকেও মাথায় রাখি।
সহানুভূতিপ্রবণ: সহানুভূতিপ্রবণ হওয়া একটা বিশেষ গুণ। আপনি এটিকে বিশেষ গুণের তালিকায় ফেলতে না চাইলেও ক্ষতি নেই। তবে কাজের ক্ষেত্রে আপনি কীভাবে শক্তপোক্ত পেশাদার সম্পর্ক তৈরি করতে পারেন তা কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ। আপনার সহানুভূতিশীল মনোভাব অফিসের আবহাওয়াকে ইতিবাচক করবে। এমন পরিবেশ আপনার পেশাদার জীবনের সহায়ক হবে। একই সুযোগ পাবে আপনার টিম। কাজের ক্ষেত্রেও অগ্রগতি আসবে।
আপনার নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আছে কি না তা নিজেকেই ঠিক করতে হবে। Resume-এ কখনওই বাড়িয়ে বলা উচিত নয়। উপরোক্ত গুণগুলি আপনার চাকরির ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে। যদি তা মিথ্যে না হয়। আদৌ গুণগুলি আপনার মধ্যে আছে কি না তা জানতে বন্ধু ও পরামর্শদাতার সঙ্গে আলোচনা করুন। তাদের পরামর্শমাফিক কাজ করুন। আত্মসমালোচক হোন। নিজেকে তৈরি করুন। তারপর Resume-এ এই গুণগুলি নথিবদ্ধ করুন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.