বিশেষ সংবাদদাতা: বাড়তে পারে স্মার্টফোনের দাম। অন্তত, এখনও পর্যন্ত তেমনই আভাস মিলছে। আসন্ন বাজেটে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র উদ্যোগে গতি আনতে মোবাইল তৈরির সরঞ্জাম আমদানির উপর শুল্ক বসানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে জোর আলোচনা চলছে। গত বছর জিএসটি চালুর পর এবারই প্রথম বাজেট পেশ হতে চলেছে। তাই আয়কর ছাড়া নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের উপর কর বৃদ্ধি বা হ্রাসের বিষয়টি বাজেটে খুব দৃশ্যমান হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। কারণ অধিকাংশ পণ্য ও পরিষেবাই জিএসটির আওতায় চলে গিয়েছে। তবু কিছু কিছু ক্ষেত্রে তারতম্য হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কেন্দ্রীয় বাজেট বক্তৃতা ছাপার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। গত শনিবারই নর্থ ব্লকে অর্থমন্ত্রকের দফতরে প্রথামতো ‘হালুয়া’ তৈরির শুরু হয়েছ মুদ্রণ পর্ব। শেষ মুহুর্তে বাজেট-প্রস্তুতির কাজ দেখতে ব্যস্ত অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সেকারণে দাভোসে ওয়াল্র্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গী বিশাল প্রতিনিধিদলে তিনি যাননি। ১ ফেব্রুয়ারি বর্তমান সরকারের কার্যকালের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করবেন তিনি। ২০১৯-এ লোকসভা নির্বাচনে জিতে দলকে ক্ষমতায় ফেরানোর লক্ষ্যে ‘জনমোহিনী’ হবে বলেই নানা মহলে আলোচনা ছিল। কিন্তু তাতে জল ঢেলে দিয়েছেন স্বয়ং মোদি। রবিবারই তিনি একটি সাক্ষাৎকারে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তেমন কিছু ঘটবে না।
এবারের বাজেটে বিদেশি মোবাইল হ্যান্ডসেট ও বৈদ্যুতিন সরঞ্জামের দাম বৃদ্ধির সম্ভবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগকে গতি দিতে চায় সরকার। তাই বিদেশ থেকে আমদানি করা দামি মোবাইল ও বৈদ্যুতিন জিনিসপত্রের উপর বহিঃশুল্ক বাড়ানো হতে পারে। বিশ্বের বড় বড় মোবাইল হ্যান্ডসেট প্রস্তুতকারী সংস্থাগুলি ভারতের দ্রুত প্রসারশীল বাজার ধরতে এদেশে কারখানা খুলেছে। কিন্ত এর অধিকাংশই অ্যাসেম্বল ইউনিট। কেন্দ্র চাইছে এই সব সংস্থাগুলি ভারতে সরঞ্জাম উৎপাদনের উপর জোর দিক। তাতে এই সব সরঞ্জাম আমদানির উপর নির্ভরতা কমবে। তাছাড়াও উৎপাদন ইউনিট তৈরি হলে আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।
বর্তমানে মোবাইল ফোন হ্যান্ডসেট তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ড, ক্যামেরা মডিউল এবং ডিসপ্লের আমদানির উপর কোনও শুল্ক লাগে না। বাজেটে এই সমস্ত জিনিসের উপর শুল্ক বসানো হতে পারে। জিএসটি চালুর পর সরকারের হাতে এই সমস্ত জিনিসের উপর আলাদা করে কর বসানোর সুযোগ নেই। একমাত্র বহিঃশুল্কই বাজেটের আওতায় রয়েছে।
কোষাগারে আয় বাড়াতে শুল্ক বসানো সরকারের লক্ষ্য নয়। বরং তার থেকে বেশি, যা দীর্ঘমেয়াদি ফল দেবে। ভারতকে ‘অ্যাসেম্বলি হাব’ থেকে ‘ম্যানুফ্যাকচারিং হাব’ হিসাবে গড়ে তোলাই মোদি সরকারের লক্ষ্য। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারের বাজেটে শুল্ক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সরঞ্জাম বা যন্ত্রাংশের উপর বেশি করে নজর দেওয়া হবে।গত বাজেটে মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ ও কম্পিউটার তৈরিতে ব্যবহৃত প্রিন্টেড সার্কিট বোর্ডের উপর দুই শতাংশ স্পেশ্যাল অ্যাডিশনাল ডিউটি বা এসএডি বসানো হয়েছিল। অবশ্য কয়েক মাস পরে তা তুলে দেওয়া হয়। এবারের বাজেটে এই সামগ্রীর উপর দশ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বসানোর সম্ভাবনা রয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.