সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বর্ষায় হাত ও পায়ের যত্ন নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। টানা বৃষ্টিতে ত্বকের ক্ষতি হয় প্রচুর। সেসব আটকাতেই ত্বকের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। পাশাপাশি যত্ন নিতে হয় নখেরও। বর্ষাকালে এসবের যত্ন নেবেন কী করে? জেনে নিন।
বর্ষাকালে ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, বিশেষ করে হাত ও পায়ের ত্বক সেনসিটিভ হয়। তাই হাত-পায়ের ত্বকের সমস্যা বেশি হয়। বর্ষায় ত্বকের যে কোনওরকম সংক্রমণ রোধ করতে হলে হাত-পা শুকনো রাখুন। বেশি ঘাম হলে মুছতে থাকুন। ভেজাভাব যেন ত্বকে স্থায়ী না হয়। অনেকেরই শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা- বারো মাস পা খুব ঘামে। তাঁরা পা মুছে একটু পাউডার ছড়িয়ে দিন। ফুট স্প্রে করুন। যে জুতো পরছেন, তার মধ্যেও পাউডার ছড়িয়ে দিতে পারেন। রাতে শুতে যাওয়ার আগে উষ্ণ জলে লেবুর রস মিশিয়ে ওর মধ্যে হাত ও পা ডুবিয়ে রাখুন ১০-১৫ মিনিট তারপর মুছে নিন। ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। হ্যান্ড ও ফুট ময়েশ্চারাইজারই ব্যবহার করুন। কারণ এগুলোতে থাকে হাত-পায়ের ত্বকের জন্য নির্দিষ্ট কার্যকরী উপাদান।
[ ক্রমশ বুড়িয়ে যাচ্ছেন? ত্বকের বলিরেখা দূর করুন সহজ উপায়ে ]
বর্ষাকালে নখ দুর্বল হয়ে পড়ে। সহজে ভেঙে যায়। এই ঋতুতে রোজ দু’বার নখে পেট্রোলিয়াম জেলি বা নারকেল তেল ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে নখে ইনফেকশন হবে না। বর্ষায় অনেকের নখকুনি হওয়ার বা নখে ঘা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। এক্ষেত্রে গরমজলে নুন ফেলে পা ডুবিয়ে রাখুন। জল থেকে পা তুলে কিউটিকল পুশার দিয়ে চামড়া চেপে সরিয়ে দিন বা কেটে দিন। এরপর ক্রিম দিন।
ম্যানিকিওর এবং পেডিকিওর বর্ষায় না করলেই ভাল। এই সিজ্নে স্নানের সময় বা যাঁরা বাইরে বেরোন, তাঁরা বাড়ি ফিরে উষ্ণ জলে ৫ মিনিট হাত ও পা ডুবিয়ে বসে থাকুন। এরপর মাইল্ড স্ক্রাব সাবান দিয়ে ঘষে নিন। ভাল করে মুছে ময়েশ্চারাইজার দিন। কারণ ম্যানিকিওর, পেডিকিওরের টুল্স অনেক সময় স্টেরিলাইজ্ড থাকে না, এতে চট করে সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আবার এগুলো করার সময় খুব বেশিক্ষণ উষ্ণ জলে হাত-পা ডুবিয়ে স্ক্রাবিং করলে আরও বেশি ড্রাই হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
নারকেল তেলের সঙ্গে ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে হাত ও পায়ে মাসাজ করতে পারেন। তিনভাগ গোলাপজল আর একভাগ গ্লিসারিন মিশিয়ে এক থেকে দু’দিন অন্তর লাগালে হাত ও পায়ের ত্বক হাইড্রেটেড থাকবে। কমলালেবুর খোসার গুঁড়ো, আটার ভুসি, মধু ও লেবুর রস মিশিয়ে হাত, পায়ে, আঙুলে লাগিয়ে হালকাভাবে ঘষলে ত্বক নরম হবে।
[ সুস্থ থাকুন শরীরচর্চায়, প্লাঙ্ক দেবে ফিট অ্যান্ড শেপড বডি ]
এই সময় আনারস পাওয়া যায় খুব ভাল। আনারসের খোসা ফাটা গোড়ালিতে ঘষলে খুব উপকার পাবেন। যাঁদের হাত ও পায়ের আঙুলের খাঁজে হাজা হওয়ার প্রবণতা রয়েছে, তাঁরা পা সবসময় শুকনো রাখুন। সঙ্গে স্নানের সময় ঈষদুষ্ণ জলে নিমপাতা দিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। এতে এই জাতীয় ফাংগাল ইনফেকশনের প্রবণতা কম হবে। অ্যান্টিফাংগাল ক্রিম ব্যবহার করুন রোজ রাতে।
নিমপাতা বাটা, তুলসীপাতা বাটা, মুলতানি মাটি ও মধু মিশিয়ে প্যাক করে সপ্তাহে অন্তত ২ দিন হাত ও পায়ে লাগিয়ে নিন। হাজা বা অন্য ফাংগাল ইনফেকশনের উপকার মিলবে। কোকোবাটার রয়েছে এমন ক্রিম দিয়ে হাত-পা মাসাজ করলে উপকার পাবেন। বাথসল্ট পায়ের জন্য খুব ভাল। বাথসল্টেও পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন। যাঁদের খুব পা ফাটার প্রবণতা, তাঁদের বর্ষায় সমস্যা বাড়ে বই কমে না। ফাটা অংশে ময়লা ঢুকে পা আরও শুষ্ক-রুক্ষ হয়ে যায়। এক্ষেত্রে উষ্ণ জলে সন্ধৈব লবণ ফেলে পা ডুবিয়ে রাখুন, এতে পা ফাটা কমবে। অলিভ অয়েল এক চামচ, নারকেল তেল এক চামচ ও এক চিমটে বেকিং পাউডার মিশিয়ে ওই মিশ্রণ দিয়ে ঘষলে খুব পরিষ্কার থাকবে পা। স্ট্রবেরি আর অলিভ অয়েলের সঙ্গে অল্প সন্ধৈব লবণ মিশিয়ে হালকা করে পাঁচ মিনিট পা ঘষে ধুয়ে ফেলুন। তাহলে পায়ের চামড়া নরম হবে, দুর্গন্ধ দূর হবে, ফাটবে না।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.